বঙ্গনিউজ : ফরম্যাটটাই সংক্ষিপ্ত। ক্ষুদে ফরম্যাটে ব্যাটিংয়ের ব্যাকরণের চেয়ে, আগ্রাসী মনোভাবই বেশি কার্যকর। তাই তো ক্ল্যাসিক ব্যাটসম্যানদের ভূমিকা বদলে যেতে দেখা যায় টি-টোয়েন্টিতে।

যেমন কয়েক বছর আগে হুট করে পাকিস্তানের বাবর আজম ও রিজওয়ান ওপেনিংয়ে উঠে আসলেন। দুজনই মিডল অর্ডারে খেলতেন। ক্রমেই তারা হয়ে উঠেছেন বিশ্বের অন্যতম সেরা ওপেনিং জুটি। ভারতের হয়ে টি-টোয়েন্টিতে ওপেনিং করেছেন বিরাট কোহলি।

বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি দলে ক্রমেই কার্যকারিতা হারাচ্ছেন অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম। মৌলিক ঘরনার এই ব্যাটসম্যান ও তার ব্যাটিং এখন ক্ষুদে সংস্করণের সঙ্গে বেমানান, এমন কথাও উঠে গেছে। বিশেষ করে মিডল অর্ডারে তার ব্যাটিং দলের চাহিদা পূরণে সক্ষম হচ্ছে না। তবে মুশফিকের ক্যারিয়ারকে নতুন মোড় এনে দিতে পারে এশিয়া কাপ। যদি বাবর, রিজওয়ান, কোহলিদের মতো ওপেনিংয়ে উঠে আসেন তিনি।

পুরো ইনিংস জুড়ে খেলার সুযোগ পাবেন মুশফিক। তাতে দলকে এগিয়ে নিতে পারবেন। কারণ মিডল অর্ডারে ১০০ ম্যাচ খেলে তার ব্যাটিং গড় উনিশের সামান্য বেশি। হাফ সেঞ্চুরি ৬টি হলেও মোট রান দেড় হাজার হয়নি এখনও।

অভিজ্ঞ এ ব্যাটসম্যানকে টি-টোয়েন্টিতে ওপেনিংয়ে নামানোর কথা উঠেছে সম্প্রতি। এই সুযোগটা এসেছে কারণ এশিয়া কাপের বাংলাদেশ দলে ওপেনার মাত্র দুজন। এনামুল হক বিজয়ের সঙ্গে নবীন পারভেজ হোসেন ইমন। বিজয়ের জায়গা নিশ্চিত ধরে বিকল্প ওপেনারের কথাই ভাবছে টিম ম্যানেজমেন্ট। মেক শিফট ওপেনার হিসেবে এই টুর্নামেন্টে অন্তত মুশফিক হতে পারেন আদর্শ অবলম্বন।

ওপেনিংয়ে কেমন হবেন মুশফিক? বিকেএসপির উপদেষ্টা ও বিখ্যাত কোচ নাজমুল আবেদীন ফাহিম বুধবার বলছেন, শুরুর লগ্নে ওপেনার ছিলেন মুশফিক। প্রিয় ছাত্রকে এই পজিশনে আবারও দেখলে অবাক হবেন না ফাহিম, ‘মুশফিক যখন খেলা শুরু করেছিল, বিকেএসপিতে ওপেনার হয়েই এসেছে, এটা আমি জানি ব্যক্তিগতভাবে।’

তিনি আরও যোগ করেন, ‘ক্যারিয়ারের কারণে মিডল অর্ডারে চলে এসেছে। অবশ্যই মিডল অর্ডারের একজন ব্যাটসম্যান, ওপেন করাটা সবসময় চ্যালেঞ্জিং ব্যাপার। আমি জানি না ও নিজেকে কতটা প্রস্তুত করতে পারবে। কিন্তু ওর অভিজ্ঞতাটা কাজে লাগবে। যদি দরকার হয় মুশফিক এবং অন্যরাও আছে।’

মুশফিককে ওপেনিংয়ে পাঠানোর পরিকল্পনা সম্পর্কে ফাহিমের ভাবনা এমন, ‘আসলেই করবে কি না জানি না। কারণ দুজন স্বীকৃত ওপেনার আছে আমাদের দলে। যদি ওদের মধ্যে কেউ ব্যর্থ বা অসুস্থ হয় তাহলে হয়তো মেক শিফট অপশনের ব্যাপার আসবে। সেখানে বোধ হয় অনেক অপশন আছে আমাদের হাতে, যারা নরমালি নিচে খেলে কিন্তু প্রয়োজনে ওপেন করেছে।’

ব্যাটিং নিয়ে গত কিছুদিন শীষ্যের সঙ্গে কাজ করেছেন ফাহিম। টি-টোয়েন্টিতে নতুন মুশফিককে দেখার আশায় আছেন তিনি, ‘আমার মনে হয় মুশফিকের ক্ষেত্রে আমি খুব আশাবাদী। আশা করেছিলাম জিম্বাবুয়েতে পাওয়ার হিটিংয়ের সুযোগ নেবে, নেওয়ার সুযোগ ছিল। প্রথম ম্যাচে ফিফটি করেছিল, এমন একটা জায়গায় ছিল পাওয়ার হিটিং করতে পারত, কেন সুযোগটা নেয়নি আমি জানি না।’

পাওয়ার হিটিং ক্রমেই আত্মস্থ হচ্ছে মুশফিকের, জানালেন ফাহিম, ‘আমার মনে হয় নিজেও আস্তে আস্তে বুঝতে পারছে পাওয়ার হিটিংটা কী। আজকেও দেখলাম কিছু ভালো শট খেলেছে। আমি নিশ্চিত সামনে আর দু চারদিন অনুশীলন করলে, আরও বেশি আয়ত্বে আসবে।’