শনিবার ● ৩০ জুলাই ২০২২
সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের স্মরণে পদযাত্রা
Home Page » এক্সক্লুসিভ » সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের স্মরণে পদযাত্রাবঙ্গ-নিউজ: সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের স্মরণে পদযাত্রা করেছে নিরাপদ সড়ক আন্দোলন (নিসআ)। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর খিলক্ষেত বাসস্ট্যান্ডের পদচারী সেতুর নিচ থেকে কুর্মিটোলা এলাকার এমইএস বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত এই পদযাত্রা হয়। নিরাপদ সড়কের দাবিতে ছাত্র আন্দোলনের চতুর্থ বার্ষিকীতে এই পদযাত্রায় সাদা ব্যানারে লাল রঙে লেখা ছিল ‘সড়কে লাশের মিছিল’।
পদযাত্রায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা হাতে ‘বি অ্যালার্ট, রোড ইন বিডি ইজ নট সেফ’, ‘গণপরিবহন বৃদ্ধি কর’, ‘জেব্রা ক্রসিংয়ের সংখ্যা বাড়াও’, ‘যানজটমুক্ত সড়ক চাই’, ‘আইন প্রয়োগে সরকার ব্যর্থ কেন?’ ইত্যাদি লেখা প্ল্যাকার্ড বহন করে।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘নিরাপদ সড়ক চাই’, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘সড়কে ছাত্র মরে, প্রশাসন কী করে?’, ‘পুলিশের গাড়িতে ছাত্র মরে, প্রশাসন কী করে?’, ‘প্রশাসন করে কী, খায়দায়-ঘুমায় না কি?’, ‘যে হাত ছাত্র মারে, সে হাত ভেঙে দাও’ ইত্যাদি স্লোগান দেয়।
২০১৮ সালের ২৯ জুলাই এমইএস বাসস্ট্যান্ডের কাছে সড়কের ফুটপাতে বাসচাপায় নিহত হয়েছিল শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের শিক্ষার্থী রাজীব ও মীম। পদযাত্রা শেষে তাদের নিহত হওয়ার স্থানে সড়কে নিহত সবার স্মরণে একটি স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপন করা হয়।
পদযাত্রায় অংশ নেওয়া নিসআর কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক শাহীদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা ৯ দফা দাবি নিয়ে ২০১৮ সালে আন্দোলনে নেমেছিলাম। সেই আন্দোলনের চার বছর পেরিয়ে গেছে। এখনো আমাদের দাবিগুলো বাস্তবায়ন করা হয়নি। গতকাল বৃহস্পতিবার পুলিশের গাড়ির চাপায় এক শিক্ষার্থী নিহত হয়। পুলিশের গাড়ির চাপায় যদি শিক্ষার্থী নিহত হয়, তাহলে তারা কার কাছে বিচার চাইবে? এই দায় সরকারের, প্রশাসনের। ’
গতকাল সন্ধ্যায় নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের পক্ষ থেকে রাজধানীতে ‘ফিরে দেখা ও ভবিষ্যৎ করণীয়’ শীর্ষক এক আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়। এতে অন্যান্যের মধ্যে আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ তানজীম উদ্দিন খান এবং লেখক ও কলামিস্ট অনুপম দেবাশীষ রায় অংশ নেন।
আলোচনাসভায় ‘নিরাপদ সড়ক চাই’-এর চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, “আমি নিরাপদ সড়ক আন্দোলন করতে করতে মাঝেমধ্যে হাঁপিয়ে পড়ি, হতাশ হয়ে যাই। আসলে রাষ্ট্র মেরামত করতে হলে অরাজনৈতিক সংগঠন হয়ে কাজ করে লাভ নাই। সমাজসেবা হিসেবে একটা কাজ করতে হলে দীর্ঘ সময় লেগে থাকতে হবে। চার বছর আগে এই ছাত্র আন্দোলন যখন থামানোর ঘোষণা দেওয়া হয় তখন আমি কেঁদেছিলাম। আজ বলছি, সেদিন আমি কেন কেঁদেছিলাম। তখন আমাকে বলা হয়েছিল, ‘তোমাদের শেষ করে দেওয়া হবে। ’”
উপস্থিত ছাত্রদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন ধরে নিরাপদ সড়কের আন্দোলন করে যাচ্ছি। এই আন্দোলনে যদি রাজনৈতিক সহযোগিতা পেতাম, তাহলে অনেক আগেই এই দাবি বাস্তবায়ন হয়ে যেত। আমি বলব, পথিক, তুমি পথ হারাইও না। আর আমি যদি ডাকি তাহলে আবার রাস্তায় নেমে আসতে হবে। ’
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘তোমাদের এই আন্দোলনকে অব্যাহত রাখতে হবে। প্রতি সপ্তাহে এক দিন তোমাদের কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হবে। রাস্তায় আছি আমরা, এটা বোঝানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সরকার বসে থাকে, কয় দিন আর থাকবে। ’
বাংলাদেশ সময়: ১১:০১:১১ ● ৬৮৪ বার পঠিত