বুধবার ● ২০ জুলাই ২০২২

সীমান্ত ভ্রমণের সাতটি দিন ও প্রাসঙ্গিক কিছু কথা ; পর্ব- ৩৫; স্বপন চক্রবর্তী

Home Page » সাহিত্য » সীমান্ত ভ্রমণের সাতটি দিন ও প্রাসঙ্গিক কিছু কথা ; পর্ব- ৩৫; স্বপন চক্রবর্তী
বুধবার ● ২০ জুলাই ২০২২


স্বপন কুমার চক্রবর্তী

বঙ্গ-নিউজ: শ্যামা সংগীত ও কাজী নজরুল ইসলাম-৭
এখন প্রশ্ন হলো শ্যামা সঙ্গীতের আলোচনা হলেই নজরুলের শ্যামা সঙ্গীতের আলোচনা কেন বার বার শীর্ষে উঠে আসে ? তার একটা কারণ হলো সাধক কবি রামপ্রসাদের শ্যামা সঙ্গীতের চেয়েও নজরুলের শ্যামা সঙ্গীত আলাদা। রাম প্রসাদের শ্যামা সঙ্গীতে রয়েছে ভক্তিরস, আর আধ্যাত্বিক রস। আর নজরুল ইসলামের শ্যামা সঙ্গীতে রয়েছে ভক্তিরসের পাশাপাশি দেশ মাতৃকার বন্ধনা। নজরুলের সময় ভারত ছিল খুব উত্তাল। একদিকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ অন্য দিকে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন। সেই সময়ে স্বদেশী আন্দোলনে নিহিত ছিল মাতৃ চেতনা। বাংলার জাতীয়তাবাদী ভাবনায় তখন দেশ ছিল ”মা” । নজরুল ইসলাম তাঁর শ্যমা সঙ্গীতে মা (দেশ মাতৃকার বন্ধনা) হিসেবে দেখেছেন।
দেশকে শ্যামা মায়ের ব্রত কল্প হিসাবে হাজির করলেন- যা আগে কেহ করে নাই। শক্তির দেবী মা কালীকে তিনি সঙ্গীতে দেশ মাতৃকার রূপে শ্যামা সঙ্গীতে তুলে আনলেন। অর্থাৎ, নজরুলের শ্যামা সঙ্গীত ছিল আধ্যাত্বিক চেতনা আর দেশ মাতৃকার এক অপূর্ব সংমিশ্রণ। বলাবাহুল্য এই অসাধারণ গুণটির জন্যই নজরুলের শ্যামা সঙ্গীতই বাংলা সংস্কৃতির জগতে এক বিশেষ ধারা সংযুক্ত করতে সক্ষম হয়েছে। -তথ্য সূত্র: ১) নজরুল কাব্য গীতি- বাঁধন সেনগুপ্ত। ২) আনন্দ বাজার পত্রিকা। ৩) প্রহর। ৪ ) Bangali Indian Express webmag. ৫) oddbangla website. ৬) thebdsf website. ৭) উইকিপিডিয়া।
পিতার মৃত্যুর পর কাজি নজরুল ইসলাম হাজি পালোয়ানের মাযারের সেবক এবং মসজিদের মুয়াজ্জিনের কাজ শুরু করেন। ফলে নজরুলের পক্ষে ইসলামি শাস্ত্রের প্রভূত জ্ঞান পুঞ্জিভুত হয়। তাই ইসলামি সঙ্গীতের ক্ষেত্রেও তাঁর রচনা সমূহ ছিল খুবই উৎকৃষ্ট মানের। ইসলামি সঙ্গীত নজরুলের রচনা ছাড়া একেবারেই বেমানান। রোজা –রমজান আসলেই সারামাস ব্যাপি নজরুলের ইসলামি গান, গজল, হাম, নাদ, গীত হয়। এই ক্ষেত্রেও সংগীতের ভান্ডার খুব সমৃদ্ধ ।
কাজী নজরুল ১৯১৫ সালে ত্রিশালের দরিরামপুর হাই স্কুলে সপ্তম শ্রেণীতে ভর্তি হন। সেখান থেকে আবার একই সালে রানীগঞ্জের সিয়ারসোল রাজ স্কুলে ফিরে যান এবং অষ্টম শ্রেণীতে পড়াশোনা শুরু করেন। ১৯১৭ খ্রিষ্টাব্দের শেষ দিকে মাধ্যমিকের প্রিটেস্ট পরীক্ষা না দিয়েই তিনি সেনাবাহিনীতে সৈনিক হিসাবে যোগ দেন। এখানে উল্লেখ্য যে, এই স্কুলে অধ্যয়ন কালে নজরুল এখানকার চারজন শিক্ষক দ্বারা বিশেষ ভাবে প্রভাবিত হয়ে ছিলেন। তাঁরা হলেন উচ্চাঙ্গ সংগীতের সতীশ চন্দ্র কাঞ্জিলাল, বিপ্লবী চেতনা বিশিষ্ট নারায়ন চন্দ্র ঘটক,ফার্সি সাহিত্যের হাফিজ নুরন্নবী এবং সাহিত্য চর্চার নগেন্দ্র নাথ বন্দোপাধ্যায়।
( চলবে)

বাংলাদেশ সময়: ২০:৩২:১৩ ● ৪৭১ বার পঠিত