রবিবার ● ১ মে ২০২২

মহান মে দিবস

Home Page » জাতীয় » মহান মে দিবস
রবিবার ● ১ মে ২০২২


ফাইল ছবি

বঙ্গনিউজঃ   আজ পয়লা মে। মহান মে দিবস। বিশ্বের শ্রমজীবী মানুষের ঐতিহাসিক গৌরবময় দিন। বঞ্চনা, নির্যাতন ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে শ্রমিকদের সংগ্রাম ও অধিকার আদায়ের রক্তাক্ত দিন।

ইতিহাসের পাতায় মে দিবস উজ্জ্বল হয়ে থাকলেও শ্রমিকের অধিকার আদায়ের সংগ্রাম এখনো শেষ হয়নি।

১৮৮৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের হে মার্কেটে শ্রমের উপযুক্ত মূল্য এবং দৈনিক আট ঘণ্টা কর্মসময়ের দাবিতে আন্দোলনরত শ্রমিকদের ওপর পুলিশ গুলি চালায়। এতে ১০ শ্রমিক প্রাণ হারান। এরপর ১৮৮৯ সালে

প্যারিসে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক শ্রমিক কনভেনশনে ওই ঘটনার স্মারক হিসেবে প্রতিবছর ১ মে ‘মে দিবস’ হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরের বছর থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক মে দিবস।

দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ পৃথক বাণী দিয়েছেন। বাণীতে তাঁরা শ্রমজীবী মানুষসহ দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। প্রতিবছরের মতো এবারও রাষ্ট্রীয়ভাবে মে দিবস উদযাপন উপলক্ষে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। শ্রমিক সংগঠন ও রাজনৈতিক দলগুলো মিছিল, সমাবেশ, আলোচনাসভাসহ বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি নিয়েছে। এবার মে দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয় ‘শ্রমিক-মালিক একতা, উন্নয়নের নিশ্চয়তা’।

দেশি-বিদেশি সংস্থার তথ্যানুযায়ী, দেশে সংগঠিত খাতের চেয়ে অসংগঠিত খাতের শ্রমিকের সংখ্যাই বেশি। পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও নানা ধরনের কাজে অংশ নিচ্ছেন। গার্মেন্ট ছাড়াও কৃষি, নির্মাণ, রপ্তানিমুখী শিল্প-কারখানা, কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রি, চা-বাগান, ওষুধশিল্প, কোমল পানীয়, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প, হস্তশিল্প ইত্যাদি খাতে নারী শ্রমিকদের অংশগ্রহণ বেশি। নারীরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই মজুরিবৈষম্যের শিকার। দেশের ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলনও এখন কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছে। নানা অসুস্থ প্রবণতা ট্রেড ইউনিয়নগুলোকে গ্রাস করেছে। সুস্থ ধারার শ্রমিক আন্দোলন থাকলেও সেটা দুর্বল হয়ে পড়ছে।

দেশের পাঁচ কোটি ১৭ লাখ ৩৪ হাজার শ্রমিক অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে নিয়োজিত, যা দেশের মোট কর্মসংস্থানের ৮৫.১ শতাংশ। অপ্রাতিষ্ঠানিক খাত হওয়ায় এই বিপুল পরিমাণ মানুষ রয়েছেন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায়। তাঁদের নেই নিয়োগপত্র বা মালিকের সঙ্গে কাজের চুক্তিপত্র। যেকোনো সময় বেকার হয়ে যেতে পারেন। কাজ না করলে কোনো উপার্জন থাকে না বলে জীবনযাত্রার মানও উন্নত নয়। আর করোনাভাইরাসের অভিঘাতও এই শ্রেণির শ্রমিকদের ওপরই প্রথমে পড়েছে। অথচ দেশের সার্বিক অর্থনীতিতে এই অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিকদের রয়েছে বড় ভূমিকা।

এ বিষয়ে প্রবীণ শ্রমিক নেতা শহীদুল্লাহ চৌধুরী  বলেন, অসংগঠিত খাতের লাখ লাখ শ্রমিকের জীবনের সমস্যাগুলো দূর করার জন্য এগিয়ে আসতে হবে। সবার জন্য বেঁচে থাকার মতো ন্যূনতম মজুরি নিশ্চিত করতে হবে। সব খাতেই শ্রমিকদের জন্য ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার দিতে হবে। শ্রম আইন যাতে বাস্তবায়িত হয় তার প্রতি কঠোর নজরদারি থাকতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬:১২:২১ ● ৭৮৭ বার পঠিত