রাসেদুল হাসান লিটন(বঙ্গ-নিউজ)ঃহেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংগঠনটির সাত শীর্ষ নেতার সঙ্গে প্রায় আড়াই ঘণ্টা বৈঠক করেছেন যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের দুই কর্মকর্তা।
বুধবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত এ বৈঠক চলে বলে রাতে হেফাজতের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।বৈঠকের পর দূতাবাসের রাজনৈতিক কর্মকর্তা ক্যাথলিন গিবিলিসকো এবং সহকারী রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ লুবাইন চৌধুরী মাসুম হাটহাজারী মাদ্রাসার শিক্ষাভবন, ছাত্রাবাস ও ক্যাম্পাস ঘুরে দেখেন।
অন্য অনুষ্ঠানে বাইরে থাকায় দূতাবাস কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে হেফাজতের আমির শাহ আহমদ শফী ছিলেন না বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
তবে বৈঠকে ছিলেন হেফাজতের মহাসচিব জুনায়েদ বাবুনগরী, কেন্দ্রীয় নেতা আনাস মাদানী, মুঈনুদ্দীন রুহী, আজিজুল হক ইসলামাবাদী, হাবীবুল্লাহ আজাদী, মুজাম্মেল হক ও আমিরের প্রেসসচিব মুনির আহমদ।
গণজাগরণবিরোধী হেফাজতের নায়েবে আমির মুফতি ইজাহারুল ইসলামের লালখান বাজার মাদ্রাসায় গত বছর অস্ট্রেলিয়া দূতাবাসের এক কর্মকর্তা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। তার কিছুদিন পরই ওই মাদ্রাসায় বিস্ফোরণ ঘটেছিল।
গত বছর ৫ মে’র সমাবেশ থেকে ঢাকার মতিঝিলে তাণ্ডব চালানোর পর হাটহাজারী মাদ্রাসায় এই প্রথম যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের কোনো কর্মকর্তার আগমন ঘটল।
আহমদ শফীর প্রেসসচিব মুনির স্বাক্ষরিত ওই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “আমিরের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে মার্কিন কর্মকর্তারা হেফাজত নেতৃবৃন্দের কাছে ১৩ দফা, সংগঠনের নীতি ও সাংগঠনিক তৎপরতা এবং ৫ মে শাপলা চত্বরের ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চান।
“হেফাজত নেতারা এসব বিষয়ে তাদের বক্তব্য তুলে ধরে সংগঠনের অরাজনৈতিক ও শান্তিপূর্ণ অবস্থান সম্পর্কে তাদের অবহিত করেন। হেফাজত নেতারা বলেন, হেফাজত ইসলামের তৎপরতা কাউকে ক্ষমতায় নেয়ার জন্য বা নামানোর জন্য নয়।”
যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে শাহবাগ আন্দোলন শুরুর পর ১৩ দফা দাবিতে রাজপথে নামে হেফাজত।
তাদের ১৩ দফা দাবিতে নারী অধিকার সঙ্কোচনের দাবি ওঠায় তার প্রতিবাদে মুখর হন দেশের নারী সংগঠকরা। এছাড়া শাহবাগের আন্দোলনকে ‘নাস্তিক ব্লগারদের আন্দোলন’ অভিহিত করেন হেফাজত নেতারা।
যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের কর্মকর্তারা ঢাকায় সমাবেশের দিন কোরআন পোড়ানো এবং সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নিয়েও হেফাজতের অবস্থান জানতে চান।
হেফাজতের পক্ষ থেকে বলা হয়, “তারা আল্লাহ-রাসুল ও ইসলামের অবমাননা যেমন সহ্য করে না, তেমনি সংখ্যালঘুদের ওপর যে কোনো হামলার ঘটনাকেও সমর্থন করে না। এর বাইরে হেফাজতে ইসলাম কখনো কোনো রাজনৈতিক তৎপরতায় জড়িত হবে না।”
বৈঠকে হেফাজত নেতারা বাংলাদেশের ওলামা-মাশায়েখ, কওমী মাদ্রাসা এবং হেফাজতে ইসলাম সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের মনোভাব সম্পর্কে জানতে চান।
তবে ক্যাথলিন গিবিলিসকো ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিম নাগরিক পরিচালিত মাদ্রাসা সম্পর্কে জানতে এবং এ বিষয়ে অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে বাংলাদেশের কওমী মাদ্রাসার নেতারা সে দেশ সফরে আগ্রহী কি না, তা জানতে চান দূতাবাস কর্মকর্তারা।
তবে হেফাজত নেতারা কী মত জানিয়েছেন, সে বিষয়ে বিজ্ঞপ্তিতে কিছু বলা হয়নি।
বাংলাদেশ সময়: ২২:৩৮:২৯ ৩৯৮ বার পঠিত