বঙ্গ-নিউজ ডটকমঃ বিএনপি না আসায় দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন গ্রহনযোগ্যতা পায়নি দাবি করে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছেন, আমি সব সময় শৃঙ্খলিত রাজনীতিবিদ। এখনো শৃঙ্খলিত অবস্থায় আছি। জাতীয় পার্টির মধ্যে এখন দ্বিধা-দ্বন্দ্ব আছে। আমি বিরোধী দলীয় নেতা হই নাই। আমার স্ত্রী বিরোধী দলীয় নেতা হয়েছেন। ৩০ জন এমপি ওনার সাথে চলে গেছে। আমিও এমপি হয়েছি। সে কারণে জাতীয় পার্টি বিরূপ অবস্থার মধ্যে অবস্থান করছি। তবে আশা করি, খুব শিগগিরই সেটি কাটিয়ে উঠবো। তিনি চার দিনের রংপুর সফরে এসে বৃহস্পতিবার দুপুরে সার্কিট হাউজে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এসব কথা বলেন।
বিএনপির মধ্যবর্তী নির্বাচন দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রথম থেকেই আমি সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন চেয়েছিলাম। কিন্তু সেটি হয়নি। বিএনপি নির্বাচনে আসেনি। অনেক ঘটনায় ঘটেছে। ফলে নির্বাচন গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। নানা ঘটনা ঘটেছে। আজ হোক, কাল হোক আর চার বছর পরে হোক পাঁচ বছর পরে হোক। নির্বাচন হবে।
নিজেকে এখন শৃঙ্খলিত রাজনীতিবিদ দাবি করে এরশাদ বলেন, আমি ক্ষমতা ছেড়েছিলাম ৯০ সালে। এরপর ৭৪টি মামলা ছিল। এখনো চলছে। এখন দুই চারটায় নেমে এসেছে। আমি কখনই শৃঙ্খলমুক্ত রাজনীতিবিদ ছিলাম না। অনেকে আমার সমালোচনা করে। আমি সকালে এক কথা বলি, বিকেলে আরেক কথা বিল। কিন্তু সাংবাদিকরা বোঝেন না। আমাকে শৃঙ্খলে থেকেও রাজনীতি করতে হয়। এখনও আমি শৃঙ্খলমুক্ত রাজনীতিবিদ নই।
ধারাবাহিকতাহীনতার কারণে উপজেলা নির্বাচনে ভারডুবি কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে এরশাদ বলেন, এর আগে উপজেলায় ২০ টি আসন পেয়েছিলাম। এখন আমরা আসন পাচ্ছি না। আমি যেটা বলেছিলাম। সেটাই করেছি। সেভাবেই আছি। ধারাবাহিকতা নষ্ট করিনি। আমি নির্বাচনের জন্য রংপুরে আসিনি। সেটা সবাই জানেন। কথা হলো কিভাবে ইলেকশন হয়েছে সেটা সবাই জানে।
একবার এ ধরনের কথা বললেও সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে এরশাদ বলেন, বহু দিন পর রংপুর এলাম। নানা ঘটনা ঘটেছে। নির্বাচন হয়েছে। আমার শেষ বয়সে ইচ্ছা ছিল রংপুরের এমপি হবো। এমপি হয়েছি। এর আগেও এমপি হয়েছিলাম। তারপরেও আমার ভাই, স্ত্রী এমপি ছিলেন। শেষ বয়সে রংপুরের মানুষের সেবা করতে চাই। ঋণ শোধ করতে চাই। দলকে শক্তিশালী করতে চাই। আমার অনেকগুলো আসন ছিল। আসন হারিয়েছি। শক্তি নিয়ে আমার এসব আসন ফিরিয়ে আনকে চাই। আজ এসেছি রংপুরের মানুষের দোয়া নিতে। অনেকটা ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্যে এগিয়ে চলেছি আমরা। রংপুরের মানুষের কাছে একটাই কথা। যতদিন আছি ততদিন রংপুরের মানুষের সাথে থাকবো। যতদিন বেঁকে আছি ততদিন থাকবো।
প্রতিমন্ত্রী রাঙ্গা প্রসঙ্গে এরশাদ বলেন, ইতোমধ্যে রাঙ্গা প্রতিমন্ত্রী হয়েছে। ওকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। রংপুরের মানুষের জন্য রাঙ্গা কাজ করবে। তার সুযোগ আছে।
এসময় তার সাথে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মসিউর রহমান রাঙ্গা, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী জাতীয় পার্টির সিনিয়র প্রেসিডিয়াম মেম্বার জিএম কাদের, রংপুর জেলা জাতীয় পার্টি সেক্রেটারী বীরমুক্তিযোদ্ধা আবুল মাসুদ চৌধুরী নান্টু, মহানগর সেক্রেটারী এ্যাডভোকেট সালাহ উদ্দিন কাদেরী, সদর উপজেলা জাতীয় পার্টির প্রার্থী সুলতানা রাজিয়া কল্পনা মহানগর যুব সংহতির সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক, সেক্রেটারী হাসানুজ্জামান নাজিম, মহানগর যুব সংহতির সেক্রেটারী ইউসুফ আহমেদ, জাতীয় ছাত্র সমাজের জেলা সেক্রেটারী আশরাফুলহক জবাসহ নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। দীর্ঘ চারমাস পর এরশাদ বৃহস্পতিবার রংপুরে চার দিনের সফরে আসেন। তিনি শনিবার লালমনিরহাট এবং রোববার লালমনিরহাট সফর শেষে সোমবার সকালে ঢাকা ফিরবেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭:৩৮:৪৫ ৩৬০ বার পঠিত