বঙ্গ নিউজ ডটকমঃনির্বাচন কমিশনের প্রার্থীদের হলফনামা প্রকাশ হল গত কাল।
বাংলাদেশে নির্বাচন কমিশন অবশেষে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের হলফনামা প্রকাশের কাজ শুরু করেছে বুধবার থেকে।
স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার এই নির্বাচনের প্রার্থীদের ব্যক্তিগত সম্পদের তথ্য বা হলফনামা প্রকাশ করা হচ্ছে না বলে বিভিন্ন নাগরিক সংগঠন অভিযোগ করে আসছে। এ নিয়ে সংবাদ মাধ্যমেও অনেক সমালোচনা হয়েছে।
সম্পর্কিত বিষয়
সে প্রেক্ষাপটে প্রথম পর্যায়ে সারাদেশে ৯৭টি উপজেলায় নির্বাচনের সাতদিন আগে নির্বাচন কমিশন ওয়েবসাইটে প্রার্থীদের হলফনামা প্রকাশের প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
অন্যদিকে, একজন নির্বাচন কমিশনার দাবি করেছেন, স্থানীয়ভাবে আগেই এই হলফনামা প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু প্রার্থীদেরই অনেকে তাদের হলফনামা প্রকাশের বিষয়ে জানেন না।
সারাদেশে প্রায় পাঁচ’শ উপজেলার মধ্যে প্রথম পর্যায়ে ৯৭টিতে নির্বাচন হতে যাচ্ছে ১৯শে ফেব্রুয়ারি।
উপজেলা পরিষদ সম্পর্কিত আইনে বলা আছে, এই প্রতিষ্ঠানের নির্বাচনে প্রার্থীরা মনোনয়নপত্রের সাথে ব্যক্তিগত সম্পদের হিসাব বা হলফনামা যখন পেশ করবেন, তখনই তা স্থানীয়ভাবে প্রকাশ করতে হবে।কিন্তু সেটা করা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। নির্বাচন নিয়ে কাজ করে, এমন একটি সংগঠন সুজনের বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, প্রথম পর্যায়ে যে ৯৭টি উপজেলা নির্বাচন হচ্ছে, এর ৪০ টিতে প্রার্থীদের হলফনামা তারা সংগ্রহ করেছেন স্থানীয় পর্যায় থেকে। সে জন্য তাদের অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে।
তিনি বলছেন বেশিরভাগ জায়গাতেই তারা কোন তথ্য সংগ্রহ করতে পারেননি।
“অনেক জায়গা থেকে তথ্য পাওয়া যায়নি। ঐ সব এলাকার রিটার্নিং অফিসার কার্যালয় থেকে বলা হয়েছে, তারা নির্বাচন কমিশন থেকে তথ্য দেওয়ার কোন নির্দেশনা পায় নি। বিষয়টা আমরা নির্বাচন কমিশনকে জানালে তারা বলেছে, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা যখন দেওয়া হবে, তখন তাদের হলফনামা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। কিন্তু তা করা হয়নি।”
বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটের অংশগ্রহণ ছাড়া ৫ই জানুয়ারি অনুষ্ঠিত বিতর্কিত সংসদ নির্বাচনের রেশ না কাটতেই সারাদেশে উপজেলা নির্বাচন হতে যাচ্ছে পর্যায়ক্রমে।
সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের ব্যক্তিগত সম্পদের তথ্য বা হলফনামা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছিল। তাতে আওয়ামীলীগের নেতৃত্বাধীন সরকারের কয়েকজন মন্ত্রীর সম্পদ বেড়ে যাওয়ার তথ্য নিয়ে সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশ এবং সমালোচনা উঠেছিল।
মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ, নির্বাচন কমিশনার।এই নির্বাচন কমিশনার দাবি করেছেন, স্থানীয় পর্যায়ে রিটার্নিং অফিসাররা অনেক আগেই প্রার্থীদের হলফনামা প্রকাশ করেছে। স্থানীয় রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে এসব তথ্য টানিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেছেন।
মাঠ পর্যায়ে কয়েকটি জেলার রিটার্নিং অফিসারের সাথে কথা বলে বিভিন্ন রকম তথ্য পাওয়া গেছে।
দক্ষিণ পশ্চিমের একটি জেলার রিটার্নিং অফিসার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের হলফনামা প্রকাশের ব্যাপারে তাদের কাছে নির্বাচন কমিশনের কোন নির্দেশ ছিল না।
চট্টগ্রাম অঞ্চলের একজন রিটার্নিং অফিসার বলেছেন ওয়েবসাইটে প্রকাশের জন্য বুধবার তাদের কাছে প্রার্থীদের সব তথ্য চাওয়া হয়েছে।
উত্তরের একটি জেলা রাজশাহীর রিটার্নিং অফিসার সাইফুল ইসলাম বলেছেন, স্থানীয়ভাবে প্রার্থীদের হলফনামা তিনি আগেই প্রকাশ করেছেন।
কিন্তু রাজশাহীর বাঘা উপজেলার একজন মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর হোসেন বলেছেন, তাঁর ব্যক্তিগত সম্পদের তথ্য বা হলফনামা রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে বা নির্বাচন কমিশনে প্রকাশ করা হয়েছে কীনা, সেটা তিনি জানতে পারেন নি।
বাঘা উপজেলারই আরেকজন মেয়র প্রার্থী আজিজুল ইসলামও জানেন না, নির্বাচন কমিশন তার তথ্য নিয়ে কী করেছে।
আসলে ভোটাররা প্রার্থী পছন্দ বা বাছাই করার ক্ষেত্রে যাতে সবরকম তথ্য পান সে জন্যই হলফনামা প্রকাশের বিষয় এসেছে।
কিন্তু উপজেলা নির্বাচন শুরুর মাত্র সপ্তাহখানেক আগে নির্বাচন কমিশন এ ব্যাপারে নড়চড়ে বসেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬:৫১:৪০ ৩৮২ বার পঠিত