তমালঃবঙ্গ-নিউজ ডটকম গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ তীরে বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মুসল্লিরা আসতে শুরু করেছেন। তারা এসে ইজতেমা ময়দানের খিত্তায় খিত্তায় অবস্থান নিচ্ছেন। প্রস্তুতি সম্পন্ন হলেও শেষ পর্যায়ের কিছু টুকিটাকি কাজ সেরে নিচ্ছে ইজতেমা কর্তৃপক্ষ।হজ্বের পর মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমাবেশ টঙ্গীর তীরের এ বিশ্ব ইজতেমা। গতবারের মত এবারো ইজতেমা দুই পর্বে অনুষ্ঠিত হবে। ২৪ জানুয়ারি ইজতেমার প্রথম পর্ব শুরু হবে, আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে তা শেষ হবে ২৬ জানুয়ারি। চারদিন বিরতি দিয়ে আবার ৩১ জানুয়ারি শুরু হবে দ্বিতীয় দফা। ২ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হবে তা।
ঢাকার জুরাইন থেকে ইজতেমা ময়দানে আসা সামস উদ্দিন বলেন, “মূলত ইমান-আমল ঠিক করার জন্য বিশ্ব ইজতেমায় আসা। প্রত্যক মানুষের ইমান ও আমল জরুরি। কারণ, প্রত্যেক মানুষের কাছে হিসাব নেবেন আল্লাহতায়ালা। বিভিন্ন দেশ-বিদেশের মুরুব্বিরা আসেন ইমান ও দ্বীনের তাগাদায়। দুনিয়ার মানুষ কিভাবে আমলওয়ালী হয়ে যেতে পারে। এই এক ফিকির নিয়ে তিনদিন যাবৎ ইমান ও আমলের আলোচনা হয়। ইসলামের টানে লাখ লাখ মুসুল্লীদের সাথে ইমান ও আমল ঠিক করতে বিশ্ব ইজতেমায় এসেছি।”
ইজতেমার ময়দানে আসা আরেক মুসল্লি শফিকুর রহমান উদাহরণ দিয়ে বলেন, “ফুলের পাঁচটি গুণ আছে, যার ফলে ফুলকে সবাই ভালবাসে। ফুল দেখতে সুন্দর, গন্ধ ভাল, মধু আসে, ফুল থেকে ফল হয়, আকার সুন্দর। মানুষ যদি মেহনত করে ঠিক তেমনি মানুষের মধ্যেও পাঁচটি গুণ আনতে পারেন আল্লাহ। মানুষের এই পাঁচটি গুন হলো- ইমান ঠিক রাখা, লেনদেন সুন্দর করা, নবীর সুন্নত জিন্দেগিতে আনা, ইবাদত করা ও আখলাক ঠিক রাখা। এ সমস্ত গুণ জিন্দেগিতে আনতে টঙ্গীর তীরে বিশ্ব ইজতেমায় আসা। এগুলো আপনাআপনি হয় না, মেহনত করে জিন্দেগিতে আনতে হয়। এই পাচটি গুণের জন্য মানুষ আল্লার কাছে দামি হয়ে যায়।”
চট্টগ্রাম থেকে মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ”৩২ দিন আগে বাড়ি থেকে বের হয়েছি ইমান ও আমল ঠিক করতে। বুধবার বিশ্ব ইজতেমায় এসে পৌঁছেছি। লাখ লাখ মুসল্লির সাথে জামায়াতবদ্ধ হয়ে আল্লার ইবাদত বন্দেগি করবো। আল্লাহকে খুশি করতে ও সোয়াবের জন্য বিশ্ব ইজতেমায় আসা।”
সিরাজগঞ্জের কাজিপুর থেকে ইজতেমায় অংশ নেওয়া মোহর আলী বলেন, ”আল্লাহতায়ালার আদেশ নির্দেশ পালন ও আল্লাহকে খুশি করানো জন্য টঙ্গীর তীরে বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নিয়েছি।”
১৬০ একর এলাকা জুড়ে বিস্তৃত ইজতেমা মাঠে বিশ্বের প্রায় ১৩০টি দেশ থেকে তাবলীগ জামাতের অনুসারী ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা অংশ নেন। তারা এখানে তাবলীগ জামাতের শীর্ষ আলেমদের বয়ান শুনেন এবং ইসলামের দাওয়াতি কাজ বিশ্বব্যাপী পৌঁছে দেওয়ার জন্য জামাতবদ্ধ হয়ে বেরিয়ে যান। ইউরোপ আমেরিকা মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশের তাবলীগ অনুসারীরা মিলিত হন এ ইজতেমায়।
ইজতেমা মাঠের পশ্চিম পাশের মাঝামাঝি এলাকায় তুরাগ তীরে নামাজ পড়ার মিম্বর ও বয়ান মঞ্চ এবং পশ্চিম-উত্তর কোণায় দোয়া মঞ্চ, মাঠে তাশকিলের কামড়া, মোকাব্বির মঞ্চ, জুড়নেওয়ালে জামাত কক্ষ রয়েছে। মাঠের পশ্চিম-উত্তর কোণে বিদেশি মুসল্লিদের জন্য আবাসন ও রন্ধনশালা তৈরি করা হয়েছে।
ইজতেমা ময়দানে জেলাওয়ারি স্থানও (খিত্তা) নির্দিষ্ট করা হয়েছে। প্রথম পর্বের জন্য পুরো ময়দানকে ৪০টি খিত্তায় ভাগ করা হয়েছে। প্রথম দফায় ৩২ জেলার মুসল্লিরা ওই ৪০টি খিত্তায় অবস্থান নেবেন।
বাংলাদেশ সময়: ৮:৫৫:০৭ ৪৭২ বার পঠিত