খোকন:বঙ্গ-নিউজ ডটকমঃ নতুন সরকারে থাকছে জাতীয় পার্টি। আবার প্রধান বিরোধী দল হিসেবেও সংসদে প্রতিনিধিত্ব করবে দলটি। সরকারে থাকতে জাতীয় পার্টি তাদের ১০ জন সাংসদকে মন্ত্রী বানানোর দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে। এদিকে, নতুন মন্ত্রিসভায় স্থান পেতে আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের পাশাপাশি মধ্যম সারির অনেক নেতা জোর লবিং করছেন। তারা নিয়মিত গণভবনে আসা-যাওয়া করছেন এবং দলের হাইকমান্ডের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চেষ্টা-তদবির করে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী রোববার তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ তার নিয়োগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সম্মতি দিয়েছেন। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনও জারি করেছে। নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের পর বর্তমান মন্ত্রিসভা বিলুপ্ত হবে। নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যদের শপথ গ্রহণের পর আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের বৈঠকে শেখ হাসিনাকে সংসদীয় দলের নেতা নির্বাচিত করেছে দলটি। মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পাওয়ার জন্য জোর তদবির শুরু হয়েছে। তরুণ নেতাদের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের ডাকসাইটে নেতারাও শেষ মুহূর্তে দৌড়ঝাঁপ করেছেন। সবাই নিয়মিত গণভবনে আসা-যাওয়া করছেন। প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা চালাচ্ছেন। আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক অনেক নেতাই বৃহস্পতিবার রাতে গণভবনে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন। বিরোধীদলীয় নেতা নির্বাচিত হওয়ার পর জাতীয় পার্টির সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য রওশন এরশাদ বৃহস্পতিবার রাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে গণভবনে বৈঠক করেছেন। এ সময় পার্টির সিনিয়র নেতারা তার সঙ্গে ছিলেন। রওশন এরশাদ মন্ত্রিসভায় জাতীয় পার্টির অংশগ্রহণ নিয়ে দলের সিদ্ধান্তের কথা প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন। তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে কমপক্ষে ১০টি মন্ত্রণালয় দাবি করেন। তার কম হলে দলকে সামাল দেওয়া কঠিন হবে বলে জানিয়েছেন রওশন এরশাদ। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের একজন সিনিয়র নেতা জানিয়েছেন, জাতীয় পার্টির চার থেকে পাঁচজন নেতা মন্ত্রিসভায় থাকতে পারেন, এর বেশি সম্ভব নয়। কারণ সরকারকে সব কুল রক্ষার কথা মাথায় রাখতে হচ্ছে। মন্ত্রিসভার সদস্য নির্বাচনের ক্ষেত্রে দক্ষ, সৎ এবং ক্লিন ইমেজের নেতাদের প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি। রোববার বিকেল সাড়ে তিনটায় বঙ্গভবনে মন্ত্রিসভার সদস্যদের শপথবাক্য পাঠ করাবেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। এর আগে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য প্রায় ১ হাজার অতিথিকে আমন্ত্রণ জানানো হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এরই মধ্যে নতুন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর নামের তালিকা প্রায় চূড়ান্ত করেছেন। নতুন মন্ত্রিসভা ৫০ থেকে ৫৫ সদস্যের হতে পারে। শনিবার রাতে কিংবা রোববার সকালে মন্ত্রীদের তা অবহিত করা হবে। রোববার মন্ত্রিসভার শপথ গ্রহণের পর ওই দিনই দফতর বণ্টনের সম্ভাবনা রয়েছে। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সাত দিনের মাথায় শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠন করতে যাচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। গত ৫ জানুয়ারি জাতীয় সংসদের নির্বাচনে ২৯০টি আসনের মধ্যে ২৩১টিতে জয়ী হয় আওয়ামী লীগ। জাতীয় পার্টি জয়ী হয়েছে ৩৩টি আসনে। সহিংসতার কারণে ৫৪১টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ স্থগিত হওয়ায় আটটি আসনে ফল প্রকাশ স্থগিত রাখা হয়। এ ছাড়া, যাশোর-১ এবং যশোর-২ আসনে বিজয়ী প্রার্থীর বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে ফল গেজেটে প্রকাশ করা হয়নি।
বাংলাদেশ সময়: ২০:০৫:১৪ ৩৯৭ বার পঠিত