টানা পাঁচদিন ধরে দফায় দফায় বৈঠক করে দুই প্রধান দলকে একত্রে বসাতে পারায় নিজেকে সফল মনে করছেন জাতিসংঘ দূত অস্কার ফার্নান্দেজ-তারানকো।তবে সঙ্কট এড়াতে এটা যথেষ্ট নয় বলে মনে করেন জাতিসংঘ দূত। তিনি আশা করছেন, দুই দলের সংলাপ অব্যাহত থাকবে এবং এর মধ্য দিয়েই সমাধানের পথ বের হবে।
চার দিনের সফরে এসে তা একদিন দীর্ঘায়িত করে বুধবার রাতে ঢাকা ছাড়ার আগে সন্ধ্যায় সোনারগাঁও হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে আসেন জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি-মুনের দূত ফার্নান্দেজ-তারানকো।
দুই দলের অনড় অবস্থানে সংঘাত-সহিংসতায় অর্ধ শতাধিক মানুষের প্রাণহানির মধ্যে গত শুক্রবার সাত মাসের মধ্যে দ্বিতীয় সফরে ঢাকায় পা রাখেন তিনি।
এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে এক দফা, বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়ার সঙ্গে দুই দফা, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সঙ্গে আলাদা বৈঠকের পর মঙ্গলবার দুই পক্ষকে একসঙ্গে নিয়ে প্রথম বৈঠক করেন তিনি।
‘ইতিবাচক অগ্রগতি’ হয়েছে জানানোর একদিন পর সফরের শেষ দিনে তিনি দ্বিতীয় দফায় দুই দলের নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেন, নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে যাদের অবস্থান মুখোমুখি।
সংবাদ সম্মেলনে ফার্নান্দেজ-তারানকো বলেন, “জাতিসংঘের প্রথম লক্ষ্য ছিল দুটি দলকে আলোচনায় নিয়ে আসা, আমরা তা শুরু করেছি। সমাধান এখনো সম্ভব, তবে তা আসতে হবে তাদের নিজেদের মধ্য থেকে।”
আলোচনার মধ্য দিয়ে সমস্যার সমাধান না হলে পরিণতি কী হতে পারে, তা সবারই বোধগম্য- এই মন্তব্য করে এই সংলাপ টিকিয়ে রাখতে দুই দলের নেতাদের দায়িত্বশীলতা প্রত্যাশা করেছেন তিনি।
জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব আশা প্রকাশ করেছেন, তার রচিত ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে সংলাপের প্রক্রিয়া এগিয়ে যাবে এবং তার মধ্য দিয়ে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচনের পথ বের করবে দুই দল।
তিনি বর্তমান পরিস্থিতিতে সংঘাত বন্ধ, আটক রাজনৈতিক নেতাদের মুক্তি এবং নির্বাচনের ঘোষিত তফসিল নিয়ে চলমান উদ্বেগ প্রশমনের ওপর জোর দেন।
দুই দফা আলোচনায় কোন বিষয়ে মতৈক্য হয়েছে কিংবা বিএনপির বয়কটের মুখে ৫ জানুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে সুস্পষ্ট কোনো কথা বলেননি ফার্নান্দেজ-তারানকো।
আওয়ামী লীগের সঙ্গে মঙ্গলবার প্রথম দফা আলোচনার পর বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে আলোচনার বিষয়ে বৈঠকে মতৈক্য হয়েছে।
অন্যদিকে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়, হরতাল, অবরোধসহ সব নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড বন্ধ করলেই নির্বাচনকালীন সরকারসহ সার্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে।
এই সংলাপের পুরোটা সময়জুড়ে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলের ডাকে অবরোধ চলছিল এবং আলোচনার পাশাপাশি কর্মসূচি চালানোর কথা বুধবারও বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।
দ্বিতীয় দফা বৈঠকে কী আলোচনা হয়েছে, সেই বিষয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত দুই দলের কেউই মুখ খোলেনি। জাতিসংঘ দূত কোনো কিছু সুনির্দিষ্ট না করে বলেছেন, এই সংলাপে সব বিষয় নিয়েই ‘গঠনমূলক’ আলোচনা হয়েছে।
সমঝোতার মনোভাব নিয়ে আলোচনা অব্যাহত রাখতে দুই পক্ষকে উৎসাহিত করেছেন জানিয়ে ফার্নান্দেজ-তারানকো বলেন, দুই দলের কাছ থেকে তৃতীয় দফা সংলাপের প্রতিশ্রুতি পেয়েছেন তিনি।
(আমিনুল)
বাংলাদেশ সময়: ০:৩৫:২৪ ৪৩৪ বার পঠিত