বঙ্গ-নিউজ ডটকমঃ দশ দিন আগেও বাজারে গিয়ে পেঁয়াজের ঝাঁঝে দিশেহারা হয়েছেন ক্রেতারা। সেই পেঁয়াজের দাম এখন প্রতিদিনই কেজিপ্রতি ৫ থেকে ১০ টাকা করে কমতে শুরু করেছে পাইকারি ও খুচরা বাজারে। বেশি কমেছে আমদানিকৃত পেঁয়াজের দাম। এছাড়া কেজি প্রতি ১৫ থেকে ২০ টাকা করে কমেছে দেশি পেঁয়াজের দামও। মাত্র একদিনে ব্যবধানে কেজিপ্রতি ৫ টাকা করে কমেছে দেশি ও আমদানি নির্ভর পেঁয়াজের দাম। শুক্রবার নগরীর কাঁচা বাজারগুলোতে খুচরায় প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ ৮৫ থেকে ৯০ টাকা দরে বিক্রি হলেও শনিবারে তা বিক্রি হয়েছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকা দরে। এছাড়া খুচরা বাজারে শুক্রবার ভারতীয় পেঁয়াজ ৭০ থেকে ৭৫ টাকা কেজি বিক্রি হলেও শনিবার তা বিক্রি হয়েছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা দরে। পাইকারি বাজারেও কমেছে পেঁয়াজের দাম। শ্যামবাজারে পাইকারিতে প্রতিকেজি দেশি পুরাতন পেঁয়াজ ৫৫ থেকে ৬৫ টাকা এবং নতুন ৩৮ থেকে ৪০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। এছাড়া ভারতীয় সাউথ পেঁয়াজ ৫৩, নাসিক ৫০, চায়না ৩৫, বার্মিজ ৪২, পাকিস্তানি ৩৮ থেকে ৪০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা যায়।
শ্যামবাজারের ‘পবিত্র ভাণ্ডার’র মালিক কাজল হোসেন বলেন, বাজারে দেশি ও ভারতীয় নতুন পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়ায় পেঁয়াজের দাম প্রতিদিনই কমছে। আগামীতে পেঁয়াজের দাম আরো কমবে। হরতালের কারণে সবজির দাম বাড়লেও ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে শীতের সবজির দাম। পলাশী কাঁচা বাজারে প্রতি কেজি ঢ্যাড়স ৬০, কাঁচা মরিচ ৮০, গাজর ৭০, সিম প্রকারভেদে ৪০ ও ৬০, গোল তাল বেগুন ৮০, লম্বা জাতের বেগুন ৬০, সাদা মুলা ৩০, লাল মুলা ৪০, শসা ৫০, হাইব্রিড শসা ৪০, ঝিঙা ৫০, দেশি টমেটো ১০০, ভারতীয় টমেটো ১১০, করলা ৬০, উস্তে ৬০, পেঁপে ১৫, বরবটি ৬০ ও পটল ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতিটি বাধাকপি ও ফুলকপি ৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। কমেছে লাউয়ের দামও। প্রতিটি লাউ বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা করে। তবে অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে আদার দাম। খুচরা বাজারে প্রতিকেজি চায়না আদা ১৮০ ও দেশি আদা ১৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বেড়েছে পাইকারি বাজারেও। কাওরানবাজারে পাইকারিতে ১০০, চায়না ১৫০ ও ইন্দোনেশীয় আদা ১১০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা যায়। কাওরানবাজারের পাইকারি আদা বিক্রেতা শেখ নাজমুল বলেন,আমরা সরাসরি চট্টগ্রাম থেকে চায়না আদা নিয়ে আসি। ওখানে(চট্টগ্রাম) দাম বেশি এবং চায়না থেকে আমদানি কম হওয়ায় বেশি দামে আদা বিক্রি করতে হচ্ছে। নতুন আদা না ওঠা পর্যন্ত আদার দাম কমবে না। এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিপ্রতি ১০ টাকা বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম। নিউমার্কেট কাঁচাবাজারে গিয়ে প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি ১৩০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা যায়। ব্রয়লার বিক্রেতা শাওন বলেন,কোরবানির সময় সবার ফ্রিজে মাংস থাকার কারণে ব্রয়লার চাহিদা কম ছিল। কিন্তু এখন ফ্রিজের মাংস ফুরিয়ে যাচ্ছে বিধায় ব্রয়লার মুরগির চাহিদা বাড়ছে। চাদিহা বাড়ায় বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির মাংসের দাম।
অন্যান্য মাছের দাম স্থিতিশীল থাকলেও বেড়েছে ইলিশের দাম। প্রকারভেদে প্রতিটি ইলিশের দাম ১০০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। কাওরানবাজারে ৭৫০ গ্রাম ওজনের একটি ইলিশ ৫৫০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়। তবে অন্যান্য মাছের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। প্রতিকেজি মাঝারি সিলভার ১৩০-৪০, পাঙ্গাস ১১০, আইড় ৫০০, তেলাপিয়া ১৩০-১৪০, সরপুটি ১৫০, মাগুর ৬০০, মাঝরি শিং ৫৫০, বোয়াল ৬০০, দেশি বড় কাতলা ৪০০-৪৫০, মাঝারি কাতলা ২২০, বড় রুই ৪০০-৪৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে চায়না ও দেশি রসুন। প্রতিকেজি দেশি রসুন ৯০ ও চায়না ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। চাল, চিনি, তেল ডিম, গরুর মাংস ও আটা ময়দার দাম স্থিতিশীল আছে। বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে মশুরডাল। প্রতিকেজি বড় দানা মশুরডাল ৭৫ থেকে ৮০, চিকন দানা দেশি ১১০-১১৫, নেপালি ১২০-১২৫ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। মানভেদে প্রতিকেজি মুগ ডাল ১০০ থেকে ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতিকেজি অ্যাংকার ৪০-৪৪, মটর ৯০ ও মাশকলাই ৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। কয়েকটি কোম্পানি বাড়িয়েছে গুঁড়ো দুধের দাম। প্রতিকেজি ডানো প্যাকেটজাত গুঁড়ো দুধে ৩৫ টাকা বেড়ে ৬৯৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ৪০০ গ্রামে ১০ টাকা বেড়ে ২৮৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতিকেজি প্যাকেটজাত ডিপ্লোমা(নিউজিল্যান্ড) ৬২০-৬৩০, ফ্রেশ ৫১০-৫১৫ ও মার্কস ৫১০-৫১৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ২৩:৫৯:১৭ ৬০৮ বার পঠিত