বঙ্গ-নিউজ ডটকমঃ উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন শেখ হাসিনা।বুধবার বিকালে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে এক জনসভায় এই আহ্বান জানানোর পাশাপাশি বিএনপি সরকারের সমালোচনাও করেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, “বিএনপি ক্ষমতায় আসা মানে লুটপাট। বিএনপির দুই গুণ দুর্নীতি আর মানুষ খুন।
“উনার (খালেদা জিয়া) স্বামীর রেখে যাওয়া ভাঙা স্যুটকেস জাদুর বাক্স হয়ে গেছে। ওখান থেকে এখন শিফন আর ডায়মন্ড সেট বের হচ্ছে।”
আগামী নির্বাচনে নৌকার পক্ষে ভোট চেয়ে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, “আওয়ামী লীগ যখনি ক্ষমতায় এসেছে, তখনি দেশের উন্নয়ন হয়েছে।
“নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে এ সরকারের আমলে শুরু করা উন্নয়ন কাজ শেষ করতে এবং আরো উন্নয়ন করার সুযোগ দিন।”
নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবিতে হরতালে ‘সহিংসতার’ জন্য বিরোধী দলকে দায়ী করে তাদের সমালোচনাও করেন প্রধানমন্ত্রী।
“বিরোধীদলীয় নেত্রীকে অনুরোধ করেছিলাম- বাচ্চাদের পরীক্ষা চলছে, এখন হরতাল দেবেন না। তিনি কথা রাখলেন না, হরতাল দিলেন।”
“ক্ষমতায় গিযে জনগণকে তো কিছু দিতে পারেননি। আমরা নতুন বাস নামিয়েছি, উনি ৫০-৬০টি বাস আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করেছেন।”
বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে টেলিফোন আলাপের প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, “আমি রাসেলের কথা উনাকে বললাম, উনি বললেন ১৫ আগস্ট কেক কাটবেনই। মনে এতটুকু দরদ নেই।
“সত্যিকারের জন্মদিন হলে কিছু বলতাম না। মিথ্যা জন্মদিন পালন করে হত্যাকারীদের উৎসাহ দিচ্ছেন।”
তেজগাঁও মনু মিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় সরকারি করা উপলক্ষে বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের ওসমানী হল মাঠের জনসভায় বক্তব্য দেন শেখ হাসিনা।
স্থানীয় সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান খান কামালের সভাপতিত্বে আওয়ামী লীগের এই জনসভায় আরো বক্তব্য দেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক,ঢাকা মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া প্রমুখ।
ভিডিও কনফারেন্সে চাঁদপুরে প্রকল্প উদ্বোধন
গণভবনে বসে দুপুরে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চাঁদপুরের নয়টি উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন এবং তিনটি নতুন প্রকল্পের ভিত্তিস্থাপন করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
চাঁদপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বসে এই অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনিও অংশ নেন বলে চাঁদপুর প্রতিনিধি জানিয়েছেন।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে উপস্থিতদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। তাই ডিজিটাল পদ্ধতিতেই বিভিন্ন উন্নয়নের উদ্বোধন করছি।”
আগামীতে প্রত্যেকটি জেলা এবং উপজেলায় একটি করে সরকারি কলেজ, স্কুল ও কেন্দ্রীয় মসজিদ স্থাপনের আশ্বাস দেন শেখ হাসিনা।
“২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে ক্ষুধামুক্ত ও দারিদ্র্যমুক্ত দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।”
গত নির্বাচনে চাঁদপুরের পাঁচটি আসনের মধ্যে চারটিতে আওয়ামী লীগকে বিজয়ী করায় জেলাবাসীকে ধন্যবাদ দিয়ে আগামী নির্বাচনেও এই সমর্থন প্রত্যাশা করেন শেখ হাসিনা।
চাঁদপুরের দুই সংসদ সদস্য মহীউদ্দীন খান আলমগীর ও দীপু মনির সঙ্গে অনুষ্ঠানে ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামছুল হক ভূঁইয়া, সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল, কেন্দ্রীয় নেতা সুজিত রায় নন্দী।
জেলা প্রশাসক মো. ইসমাইল হোসেনের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য রফিকুল ইসলাম, জেলা পরিষদের প্রশাসক আবু ওসমান চৌধুরী, আওয়ামী লীগ নেতা মুহম্মদ শফিকুর রহমান, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ইউসুফ গাজী, চাঁদপুর পৌরমেয়র নাছির উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।
প্রধানমন্ত্রী যেসব প্রকল্পের উদ্বোধন ঘোষণা করেন, সেগুলো হল- ১২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে চাঁদপুর ১৬৩ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎ কেন্দ্র, ১৩৯ কোটি ৬৪ লাখ ৬১ হাজার টাকা ব্যয়ে সমাপ্ত ‘মেঘনা নদীর ভাঙন হতে চাঁদপুর সেচ প্রকল্প এলাকা (হাইমচর) সংরক্ষণ’, ১৭০ কোটি ৯৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘মেঘনা নদীর ভাঙন হতে চাঁদপুর সেচ প্রকল্প এলাকা (চাঁদপুর) সংরক্ষণ, ফরিদগঞ্জ সেতু নির্মাণ প্রকল্প, ঝমঝমিয়া ব্রিজ, চাঁদপুর ডায়াবেটিক হাসপাতাল নির্মাণ প্রকল্প, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের নবনির্মিত বহুতল ভবন নির্মাণ, মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ, চাঁদপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস নির্মাণ।
এছাড়া প্রধানমন্ত্রী ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনলজি, চাঁদপুর কোস্ট গার্ড স্টেশন নির্মাণ, চাঁদপুর পৌরসভার নতুন ভবন নির্মাণ কাজের ভিত্তিফলক উন্মোচন করেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০:০১:৩২ ৩৫২ বার পঠিত