বঙ্গ-নিউজ ডটকমঃ চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড উপজেলার পৌর সদরে পুলিশ ও বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের মধ্যে শনিবার বিকেলে প্রায় আড়াই ঘণ্টাব্যাপী ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসময় পাল্টাপাল্টি গুলি বিনিময়ের ঘটনাও ঘটে। সংঘর্ষে দু`জন গুলিবিদ্ধসহ কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছে। ভাংচুর করা হয়েছে কমপক্ষে ১৫-২০টি যানবাহন। এছাড়া ৭-৮টি যানবাহনে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে বেশ কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করতে হয়। এরপর বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা ঘটনাস্থল ছেড়ে গেছে। পুলিশ তাদের ধরতে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। পাশাপাশি মহাসড়কের বিভিন্ন এলাকায় বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের দেয়া ব্যারিকেড সরিয়ে যানবাহন চলাচলের উপযোগী করতে পুলিশ কাজ করছে। জেলা পুলিশের সীতাকুন্ড সার্কেলের এএসপি ইকবাল আলী বঙ্গনিউজকে বলেন, ‘সংঘর্ষের সময় বেশকিছু যানবাহন ভাংচুর করা হয়েছে। ৭-৮টি গাড়িতে আগুন দিয়েছে বলে শুনেছি। তবে এখন পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করা হবে।’স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা গেছে, শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সীতাকুন্ড উপজেলা বিএনপি ও জামায়াত পৌর সদরে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি পৌর সদর অতিক্রমের সময় পুলিশ বাধা দিলে উভয়পক্ষে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এক পর্যায়ে পাল্টাপাল্টি ইট, পাটকেল নিক্ষেপ ও সংঘর্ষে রূপ নেয়। বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের হটাতে পুলিশ কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। আস্তে আস্তে সংঘর্ষ আশপাশের আরও বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশকে লক্ষ্য করে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা গুলি ছুঁড়তে শুরু করলে পুলিশও পাল্টা শটগানের গুলি ছুঁড়ে বলে পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে। এসময় বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা পৌর সদরে বেশ কয়েকটি যানবাহন ভাংচুর ও দু’টি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে বার আউলিয়া এলাকায় একটি যাত্রীবাহী বাসেও আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। এরপর ফকিরহাটসহ আরও কয়েকটি এলাকায় যানবাহনে আগুন দেয়া হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাস্তায় বাঁশ ও গাছের গুড়ি ফেলে এবং গাড়িতে আগুন দিয়ে সেগুলো আড়াআড়িভাবে রেখে ব্যারিকেড সৃষ্টি করে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা। কদমরসুল, ফৌজদারহাট, বার আউলিয়া, পৌর সদর, উপজেলার বাজারে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা সড়ক অবরোধ করে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। পরে অতিরিক্ত পুলিশ, বিজিবি ও র্যাব সদস্যরা ঘটনাস্থলে যাবার পর সন্ধ্যা ৭টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এদিকে সংঘর্ষের কারণে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে আটকা পড়েছে শত শত গাড়ি। এদিকে সংঘর্ষের ঘটনায় কমপক্ষে ২০ জন আহত হবার খবর পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ দু’জনসহ তিনজনকে সীতাকুন্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার একেএম হাফিজ আক্তার বঙ্গনিউজকে বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা পুলিশের উপর আক্রমণ করার পর সংঘর্ষ শুরু হয়। এরপর তারা বিভিন্ন জায়গায় ব্যারিকেড দেয়। আমরা ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি সদস্যদের পাঠানোর পর পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে এসেছে।’ তবে সংঘর্ষে হতাহতের কোন খবর পাননি বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার।
বাংলাদেশ সময়: ২১:২৯:২৪ ৩৮৩ বার পঠিত