তানিয়া সুলতানা বঙ্গনিউজ ডটকম :দশের অধিক মৃত, শতাধিক আহত ও তিনটি শহর ধূলিসাত্ করে দিয়ে বুশের রাজ্যে ভূমিকম্পের প্রাথমিক পরিণাম ইরানের দক্ষিণ পশ্চিমে জানানি দিয়েছে. দুটি ৫, ৬ ও ৬, ৩ অঙ্কের ভূমিকম্পের কেন্দ্রে ছিল কাকি, খরমুজ ও কেনগান শহর. দেশে মৃতদের স্মৃতিতে তিন দিনের জাতীয় শোক ঘোষিত হয়েছে.ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় বর্তমানে পরিস্থিতি কি তা সাংবাদিক প্রতিনিধি ইরানের “মেহর” সংবাদ সংস্থার ডিরেক্টর রেজা মোগাদ্দাসি উল্লেখ করে জানিয়েছেন:
“ট্র্যাজেডি ঘটে যাওয়ার প্রথম মিনিট থেকেই ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করা হচ্ছে. আহত ও গৃহহীণদের খুবই শৃঙ্খলা বদ্ধ ভাবে “রেড ক্রস” সংস্থার লোকরা ও “বাসিঝ” (ঐস্লামিক বিপ্লব প্রহরী বাহিনীর বিভাগ) বাহিনীর স্বেচ্ছাসেবকরা সহায়তা করছেন. তাঁরা এই ঘটনার পরে অবিলম্বে এই জায়গায় চলে এসেছেন ও ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করছেন চিকিত্সা কেন্দ্র গুলিতে পাঠানোর জন্য. যেহেতু মহান নেতা আলি খোমেনেই নির্দেশ দিয়েছেন যে, ক্ষতিগ্রস্তদের সমস্ত প্রয়োজন খেয়াল করার জন্য ও তাঁদের সব থেকে কম সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়ার জন্য, তাই কোন কারণ নেই উদ্বিগ্ন হওয়ার জন্য.”
“গতকাল ইরানের সংবাদ মাধ্যমে এই বিষয়ে তথ্য দেওয়া হয়েছিল যে, ভূমিকম্প হওয়ার ফলে বুশের রাজ্যের তিনটি শহর সম্পূর্ণ ভাবে ধ্বংস হয়ে গিয়েছে. এটা কতখানি বাস্তবের সঙ্গে মেলে”?
উত্তরে মোগাদ্দাসি বলেছেন যে, “আগেও আমি কাকি ও খরমুজ শহরের উপকণ্ঠে গিয়েছি. বেশীর ভাগ বাড়ী ঘরই এই এলাকায় প্রাচীন, তাই প্রবল ভূমিকম্পে এর বেশীর ভাগ এলাকাই ধ্বংস হয়ে গিয়েছে. সম্ভবতঃ, সেই গুলি, যা এখনও দাঁড়িয়ে রয়েছে, তাও আছে বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে আর তাতে বাস করা সম্ভব নয়. সুখের কথা হল যে, সময়মতই স্থানীয় লোকদের কাছে সাহায্য পৌঁছে গিয়েছে. তার ওপরে ভূমিকম্প হয়েছে দিনের বেলায়, যখন বেশীর ভাগ লোকই তাদের বাড়ীতে ছিলেন না. এই দুটি কারণেই তুলনামূলক ভাবে কম সংখ্যায় মানুষ হতাহত হয়েছেন”।রাশিয়ার সহায়তায় বুশের রাজ্যে যে পারমানবিক বিদ্যুত কেন্দ্র তৈরী করা হয়েছে, তা অক্ষত রয়েছে ও স্বাভাবিক ভাবেই কাজ করছে”?
উত্তরে মোগাদ্দাসি বলেছেন যে, “এই ট্র্যাজেডির পরে প্রথম ঘন্টাতেই পাওয়া তথ্য আর সাক্ষ্য প্রমাণ এবং ইরানের ও রাশিয়ার সরকারি প্রতিনিধিদের সাক্ষ্য থেকেও বোঝা গিয়েছে যে, কোন রকমের ক্ষতি বুশের রাজ্যের পারমানবিক বিদ্যুত কেন্দ্রে হয় নি, তা স্বাভাবিক ভাবেই কাজ করছে ও কোন রকমের উদ্বেগের কারণ নেই”.
“রসঅ্যাটম” সংস্থার বিশেষ প্রতিনিধি, যিনি বুশের পারমানবিক বিদ্যুত কেন্দ্রের কাজ পরিদর্শন করেন সেই আন্দ্রেই তিমানভের কথামতো, “এই বিদ্যুত কেন্দ্র তৈরী করার সময়ে যে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে, তা হিসাব করা হয়েছে ৯ অঙ্কের ভূমিকম্প সহ্য করতে পারে এমন কাঠামো দিয়ে, আর তাই এবারে হয়ে যাওয়া ভূমিকম্প এই কেন্দ্রের কর্মীদের কাজকর্মে কোন প্রভাব ফেলতে পারে নি”.
ইরানের আধুনিক ইতিহাসে বুশের রাজ্যের ভূমিকম্প কম্পনের শক্তির অঙ্কে দ্বিতীয় হয়েছে. দশ বছর আগে কেরমান এলাকার শহর বামে ভূমিকম্প হওয়াতে ৪৫ জন নিহত হয়েছিলেন. বাম শহরকে আবার করে বানানো হয়েছে. তার জন্য প্রয়োজন পড়েছে বেশ কয়েক বছর. কত দ্রুত কাকি, খরমুজ ও কেনগান শহরের ধ্বংস হওয়া জায়গায় নতুন শহর তৈরী হবে, তা বলতে ইরানের প্রশাসন এখনই সাহস করছেন না ।
বাংলাদেশ সময়: ৯:০৪:৪৩ ৬৭৯ বার পঠিত