বঙ্গ-নিউজ ডটকমঃ প্রায় দেড়মাস পরেও জামায়াত নেতা আবদুল কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে আপিল বিভাগের ঘোষিত রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়নি। তবে পাঁচ বিচারপতির মধ্যে মৃত্যুদণ্ডের পক্ষে যারা একমত ছিলেন, তারা রায় লেখা শেষ করেছেন বলে সুপ্রিম কোর্ট সূত্র জানিয়েছে। আর ভিন্নমত পোষণকারীর বিচারপতি রায় লেখা শুরু করেছেন বলে জানা গেছে। এদিকে, ২৩ দিন অবকাশকালীন ছুটির পর রোববার খুলছে সুপ্রিম কোর্ট। গত ১৭ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে (৪:১) আব্দুল কাদের মোল্লাকে ফাঁসির দণ্ড দেন। ইতোমধ্যে, চার বিচারপতির পক্ষে বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী ৪৯০ পৃষ্ঠা এবং বিচারপতির এস কে সিনহা ২২০ পৃষ্ঠার রায় লেখা শেষ করেছেন। এ দুই বিচারপতি চার বিচারপতির পক্ষে লিখেছেন। আর ভিন্নমত পোষণকারী অপর বিচারপতি রায় লেখা শুরু করেছেন বলে জানা গেছে। তিনি লেখা শেষ করলে রায়ের সব অংশকে একসঙ্গে করে প্রকাশ করা হবে। আর এই পূর্ণাঙ্গ রায়ের অপেক্ষাতেই রয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারপ্রার্থীরা। কারণ, আপিল বিভাগের এই পূর্ণাঙ্গ রায়ের ওপরই নির্ভর করছে, কাদের মোল্লার ফাঁসির আদেশ কার্যকরের রায়। পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ পেতে যত দেরি হবে, তার ফাঁসি কার্যকর করার প্রক্রিয়া শেষ হতেও তত দেরি হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গত ৫ ফেব্রুয়ারি জামায়াত নেতা আব্দুল কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। এরপর রাজধানীর শাহবাগে গণজাগরণ মঞ্চ সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে আন্দোলন গড়ে তোলে। এ আন্দোলনের মুখে সরকার আইন পরিবর্তন করে কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে আপিল করে। আপিল শুনানি শেষে সুপ্রিম কোর্ট ১৭ সেপ্টেম্বর তার সাজা বাড়িয়ে মৃত্যুদণ্ড দেন। তবে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পরও এ রায় কার্যকরে আরো কিছু সময় লাগবে। এ ক্ষেত্রে রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) নিয়েও মতপার্থক্য রয়েছে। আসামিপক্ষের আইনজীবীদের মতে, সংবিধানের ১০৫ অনুচ্ছেদ এবং আপিল বিভাগের রুলস অনুযায়ী, কাদের মোল্লার রিভিউ আবেদন করার অধিকার রয়েছে। অপরদিকে, আইনমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের মতে, এ রায় রিভিউ করার কোনো সুযোগ নেই। কারণ, একটি বিশেষ আইনের অধীনে এ মামলার বিচার হয়েছে। তাই, সংবিধানের ১০৫ অনুচ্ছেদের অধীনে আপিল বিভাগের রায় রিভিউয়ের কোনো সুযোগ নেই। তাছাড়া যুদ্ধাপরাধীদের ক্ষেত্রে সাংবিধানিক মৌলিক অধিকার স্থগিত রয়েছে। তবে আপিল বিভাগের সব প্রক্রিয়া শেষে এ রায়ের অনুলিপি পাঠানো হবে ট্রাইব্যুনালে। আর ট্রাইব্যুনাল সঙ্গে সঙ্গেই সাজা পরোয়ানা কারা কর্তৃপক্ষ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের কাছে পাঠিয়ে দেবেন। কারাগারে এ পরোয়ানা যাওয়ার পর কারা কর্তৃপক্ষ জেল কোড অনুযায়ী আসামির কাছে জানতে চাইবে, তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করবেন কিনা। যদি আসামি প্রাণভিক্ষার আবেদন করতে চান, তাহলে সাত দিনের সময় পাবেন। রাষ্ট্রপতি যদি ফাঁসি কার্যকরের ওপর স্থগিতাদেশ বা দণ্ড মওকুফ বা হ্রাস না করেন, তাহলে বিধান অনুযায়ী, কারা কর্তৃপক্ষকে ২১ থেকে ২৮ দিনের মধ্যে ফাঁসি কার্যকর করত হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১০:১৫:৫০ ৩৯৫ বার পঠিত