তানিয়া সুলতানা বঙ্গনিউজ ডটকম:গত ২১ মার্চ বলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেতা সঞ্জয় দত্তকে অস্ত্র মামলায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়ার পর আবারও আলোচনায় এসেছেন বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত বলিউডের কয়েকজন তারকা। গত বছর থেকে হঠাত্ করেই তাঁদের বিরুদ্ধে দায়ের করা পুরোনো বিভিন্ন মামলার কার্যক্রম পুনরায় শুরু হয়েছে। চলতি মাসেই বেশ কয়েকটি মামলার শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।
ধারণা করা হচ্ছে, সঞ্জয়ের মতো আরও কয়েকজন তারকা অতীতের কৃতকর্মের জন্য ফেঁসে যেতে পারেন। অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কারণে যেসব তারকাদের ওপর মামলা ঝুলছে তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন: সালমান খান, সাইফ আলী খান, শাইনি আহুজা, গোবিন্দ এবং জন আব্রাহাম।
সালমান খান:
বলিউডে তুমুল জনপ্রিয়তার পাশাপাশি অসংযত জীবন যাপনের জন্য কুখ্যাতি আছে সালমান খানের। এ জন্য অনেকে তাঁকে ‘ব্যাড-বয়’ তকমাও দিয়েছেন। ২০০২ সালে মুম্বাইয়ে গাড়িচাপা দিয়ে মানুষ হত্যার অভিযোগে মামলা হয়েছিল তাঁর বিরুদ্ধে। ওই দুর্ঘটনায় আহত হয়েছিলেন ফুটপাতে ঘুমিয়ে থাকা আরও চার ব্যক্তি। বরাবরই সালমানের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, ২০০২ সালের সেপ্টেম্বরে ওই দুর্ঘটনার সময় তিনি নিজে গাড়ি চালাচ্ছিলেন না। ২০০৫ সালে সালমানের বিচার কার্যক্রম শুরু হয়। কোনো এক অজানা কারণে তাঁর প্রতি নমনীয় আচরণ করেন আদালত। বেপরোয়া ও অসতর্কভাবে গাড়ি চালানোর কারণে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বলে রায় দেওয়া হয়। এ ধরনের অপরাধের সর্বোচ্চ সাজা মাত্র দুই বছরের কারাদণ্ড।
পরবর্তী সময়ে ২০১১ সালে সালমানকে কঠোর সাজা প্রদানের দাবি তোলা হয় মুম্বাই পুলিশের পক্ষ থেকে। কয়েক মাস আগে আবার সেই মামলার বিচার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। যথেষ্ট সাক্ষ্য-প্রমাণ পাওয়ার পর এ বছরের জানুয়ারি মাসে ইন্ডিয়ান পেনাল কোডের ৩০৪ (২) ধারায় সালমানের সাজা হওয়ার সম্ভাবনার কথা জানানো হয়েছে আদালতের পক্ষ থেকে। গুরুতর এ অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি দশ বছরের কারাদণ্ড। বিষয়টি জানার পরপরই আপিল করেছেন সালমান। তারপরও অপরাধ সত্য প্রমাণিত হলে দশ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হতে পারে তাঁকে। মামলাটির পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে ২৯ এপ্রিল।
এ ছাড়া, ১৯৯৮ সালে বিরল প্রজাতির বন্যপ্রাণী চিঙ্কারা হত্যা মামলায় ফেঁসে যেতে পারেন সালমান। এই মামলায় তাঁকে এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। পরে অবশ্য জামিনে মুক্তি পান তিনি। গত বছর আবারও মামলাটির কার্যক্রম শুরু হয়। মামলার পরবর্তী শুনানি অনুষ্ঠিত হবে ২৭ এপ্রিল। অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনের ৫১ ধারায় সালমানকে সাজা প্রদান করা হবে। এ ধরনের অপরাধে দুই বছরের কারাদণ্ড এবং জরিমানা কিংবা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে।
সাইফ আলী খান:
১৯৯৮ সালে বিরল প্রজাতির বন্যপ্রাণী চিঙ্কারা হত্যা মামলায় সালমানের পাশাপাশি সাইফ আলী খানের নামও আছে। অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে ইন্ডিয়ান পেনাল কোডের ১৪৯ ধারায় তাঁকে সাজা প্রদান করা হবে। মামলার রায়ে তাঁকে অন্তত দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হতে পারে। এ ছাড়া, গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে এক ব্যবসায়ীর গায়ে হাত তোলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছিল সাইফকে। পরে অবশ্য জামিনে মুক্তি পান তিনি। গত ডিসেম্বরে তাঁর বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। ইন্ডিয়ান পেনাল কোডের ৩২৫ ধারায় সাজা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তাঁর। এ ধরনের অপরাধে সর্বোচ্চ সাত বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি জরিমানার বিধানও রয়েছে।
শাইনি আহুজা:
গৃহপরিচারিকাকে ধর্ষণের অভিযোগে ২০০৯ সালে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন শাইনি আহুজা। দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় ২০১১ সালের মার্চে সাত বছরের কারাদণ্ড প্রদান করা হয় তাঁকে। কিন্তু মাত্র এক মাসের মাথায় জামিনে মুক্তি পেয়ে যান বিতর্কিত এ তারকা। মামলাটির পরবর্তী শুনানি না হওয়া পর্যন্ত জামিনে মুক্ত থাকতে পারবেন তিনি। অবশ্য শুনানির দিন এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত হয়নি।
গোবিন্দ:
২০০৮ সালে ‘মানি হ্যায় তো হানি হ্যায়’ ছবির শুটিং দেখতে আসা এক ভক্তের গালে চড় মারার অভিযোগে মামলা হয়েছিল গোবিন্দর বিরুদ্ধে। ইন্ডিয়ান পেনাল কোডের ৩৫২ এবং ৩২৩ ধারায় সাজা পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তাঁর। মামলাটির শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে ২৪ এপ্রিল। ৩৫২ ধারায় তিন মাস এবং ৩২৩ ধারায় এক বছরের কারাদণ্ড প্রদানের বিধান আছে।
জন আব্রাহাম:
২০১০ সালে মুম্বাইয়ের রাস্তায় বেপরোয়াভাবে মোটর সাইকেল চালিয়ে দুই তরুণকে আহত করার দায়ে ১৫ দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল জন আব্রাহামকে। কিন্তু রায় ঘোষণা হওয়ার দিনই জামিনে মুক্তি পেয়ে যান তিনি। ওই মামলায় গত বছরের মার্চে মাত্র কয়েক ঘণ্টা পুলিশের হেফাজতে থাকার পর আবারও জামিনে মুক্তি দেওয়া হয় তাঁকে।
বাংলাদেশ সময়: ০:১৪:৩৮ ৬৮৭ বার পঠিত