বঙ্গ-নিউজ ডটকমঃশিক্ষার্থীদের স্বার্থে ডিসেম্বর মাসে বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়াকে হরতালের মতো কর্মসূচি না দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজকের শিশুরাই আগামী দিনে প্রধানমন্ত্রী হবে- এ কথা মনে করিয়ে দিয়ে আওয়ামী লীগ সভপতি হাসিনা বলেন, “জানি না তিনি (খালেদা জিয়া) কথা রাখবেন কিনা। তিনি ‘না’ ছাড়া আর কিছুই বলতে জানেন না।”
শেখ হাসিনা বলেন, বিরোধীদলীয় নেত্রী লেখাপড়া ‘পছন্দ করেন না’ বলেই পরীক্ষা এলে হরতাল দিয়ে তা বন্ধ করেন।
“এর একটা কারণ আছে। উনি একবার মেট্রিক পরীক্ষা দিয়েছিলেন। বাংলা, উর্দু আর অংক ছাড়া সব বিষয়ে ফেল করেছিলেন। উনি ভাবেন নিজে যখন পারেন নাই, ছেলে-মেয়েরা কেন পাস করবে।”
বিরোধী দলের হরতালের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “মুখে উনি বলেন কি, আর কাজে করেন কি?। উনি সংবাদ সম্মেলন করে শান্তির বাণী শোনালেন, সন্ত্রাস জঙ্গিবাদকে প্রশয় দেবেন না বললেন। আর করলেন কি? বোমা মেরে শিশুর চোখ নষ্ট করলেন। তার লেলিয়ে দেয়া সন্ত্রাসীরা পুলিশ, বিজিবি আর সেনা সদস্য হত্যা করল।… সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালাল।”
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে দুই নেত্রীর টেলি আলপনের প্রসঙ্গও আসে।
গণভবনে আলোচনার আমন্ত্রণ গ্রহণ না করে হরতাল করায় খালেদা জিয়ার সমালোচনা করে তিনি বলেন, “তিনি পূবে যাব বলেন, কিন্তু যান পশ্চিমে। সংলাপে ডাকলে উল্টো পথ ধরেন।”
বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে রোববার থেকে ৬০ ঘণ্টার হরতাল ঘোষণা করার পর শনিবার তার সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলে কর্মসূচি প্রত্যাহারের আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
পাশাপাশি তাকে গণভবনে আমন্ত্রণ জানালেও বিরোধী দলীয় নেতা বলেন, হরতালের পর তিনি আমন্ত্রণ গ্রহণ করতে পারবেন।
গাজীপুরের জনসভায় শেখ হাসিনা বলেন, “উনাকে অনুরোধ করলাম ২৮ তারিখ আসেন। আলোচনা করেন। উনি বললেন পারবেন না। হরতাল করবেন। একবার বললেন আগেরদিন ৯টায় ফোন দিলে হরতাল তুলে নিতে পারতেন, আরেকবার বললেন ১৮ দলের সঙ্গে কথা না বলে পারবেন না।
“তিনি যদি ওই দিন বসতেন, তাহলে ২০টি প্রাণ বেঁচে যেত। তিনি মানুষ হত্যা করলেন। দিনমজুরের আয়ের পথ বন্ধ করলেন।”
যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতে বিরোধী দলীয় নেতা ‘মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা’ করেছেন বলেও মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।
তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে আবারো ‘নৌকা মার্কায়’ ভোট দিলে সব সমস্যার সমাধান হবে।
বর্তমান সরকারের সময়ে সব নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে দাবি করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু-অবাধ নির্বাচন করবে। বিএনপি নেত্রী আন্দোলন করছেন কেন? উনি ভেবে দেখলেন ভোট চুরি করতে পারবেন না। তাই তালগোল পাকাচ্ছেন।”
ফোন ধরার ‘প্রস্তুতি নিতেই’ যার ৪-৫ ঘণ্টা সময় লাগে, তিনি দেশের প্রধানমন্ত্রী হলে দেশের অবস্থা কি হবে- এমন প্রশ্নও জনসভায় রাখেন শেখ হাসিনা।
“উনি হাসিনামুক্ত বাংলাদেশ চান, সেজন্যই উনার ছেলে আর ক্যাবিনেটের মন্ত্রীকে দিয়ে ২১ আগস্ট বোমা হামলা করলেন।”
গাজীপুরের ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজ মাঠে জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে এই জনসভার আয়োজন করা হয়।
সমাবেশস্থল থেকেই ঢাকার মেট্টোরেল ও ১৫০ মেগাওয়াট ডুয়েট ফুয়েল পাওয়ার প্ল্যান্টসহ বেশ কিছু প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কসহ বেশ কিছু প্রকল্পের উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮:৫৩:৫০ ৩৯৭ বার পঠিত