বঙ্গ-নিউজ ডটকমঃ জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদের (ইকোসক) সদস্য নির্বাচিত হয়েছে বাংলাদেশ। বুধবারের ভোটাভুটিতে সদস্য দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ তৃতীয় সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে এই সদস্যপদ পায়। এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভোট পেয়েছে বাংলাদেশ। মোট ১৮৭ ভোটের মধ্যে ১৮১টি ভোট পড়ে বাংলাদেশের পক্ষে। এর মাধ্যমে আগামী তিন বছরের (২০১৪-২০১৬) জন্য ইকোসকের সদস্য থাকবে বাংলাদেশ। জাতিসংঘ সদর দপ্তরে এবছর অনুষ্ঠিত সাধারণ অধিবেশন কক্ষেই এই ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ভোট পরিচালনা করেন জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশন ২০১৩ এর সভাপতি জন অ্যাশ।
বিজয়ের পরপরই জাতিসংঘের পক্ষ থেকে সেখানে নিযুক্ত স্থায়ী প্রতিনিধি ড. একে আবদুল মোমেনকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাতে থাকেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা। মর্যাদাসম্পন্ন পদের ভোটাভুটির এই দিনে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত আনোয়ারুল করিম চৌধুরী, যুক্তরাষ্ট্র সফররত সাবেক রাষ্ট্রদূত মহিউদ্দিন আহমেদও এসময় উপস্থিত ছিলেন।
জয়ের পর জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. একে আবদুল মোমেন এক ই-মেইল বার্তায় বঙ্গনিউজকে বলেন, বাংলাদেশের এই বিজয় এটাই প্রমাণ করে বিশ্বসমাজ বাংলাদেশ সরকারের ওপর যথেষ্ট আস্থাশীল। বিশেষ করে সামাজিক ও অর্থনৈতিক খাতগুলোতে উল্লেখযোগ্য অর্জনের কারণেই বাংলাদেশ বিশ্বের কাছ থেকে এই মর্যাদা পেলো।
নির্বাচনে বিজয়ের পর জাতিসংঘের সকল সদস্য রাষ্ট্রকে বাংলাদেশ মিশনের পক্ষ থেকে এই স্বীকৃতির জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানান ড. মোমেন।
ড. মোমেন আরও বলেন, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যে বর্তমান সরকারের আর্থিক ব্যবস্থাপনা দক্ষতার কারনে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা বেস্টনী কর্মসূচি সমাজের অবহেলিত, সুবিধা বঞ্চিত মানুষের জীবন যাত্রার বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে। অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে শেখ হাসিনা প্রশাসনের বিপ্লবী কর্মকান্ডের স্বীকৃতি মিলেছে ইকোসকের সদস্য নির্বাচনে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রসমূহের বিপুল ভোট পাওয়ার মাধ্যমে।
বাংলাদেশ মিশনের প্রথম সচিব (প্রেস) মামুন-অর-রশিদ জানান, ইকোসকের এবারের নির্বাচনে এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চল থেকে চীন এবং সাউথ কোরিয়া পুনঃনির্বাচিত হয়েছে। বিদায়ী সদস্য পাকিস্তান এবং কাতারের স্থলাভিষিক্ত হয়েছে বাংলাদেশ ও কাজাকস্থান। কমিটির নির্বাচিত অন্য সদস্যরা হচ্ছে জর্জিয়া (প্রাপ্ত ভোট ১৭৭), রাশিয়া (প্রাপ্ত ভোট ১৮০), সার্ভিয়া (প্রাপ্ত ভোট ১৮২), বসওয়ানা (প্রাপ্ত ভোট ১৮২), ডেনমার্ক (প্রাপ্ত ভোট ১৭৫), নিউজিল্যান্ড (প্রাপ্ত ভোট ১৭৯), সুইডেন (প্রাপ্ত ভোট ১৭৬), ইউনাইটেড কিংডম (প্রাপ্ত ভোট ১৭৮), সাউথ কোরিয়া (প্রাপ্ত ভোট ১৭৯), নির্বাচনে সর্বোচ্চ ভোট পেয়েছে চীন (প্রাপ্ত ভোট ১৮৭)। ইটালী পেয়েছে ২ ভোট। সেনেগাল, কাতার, লিতুনিয়া, মেক্সিকো, সুইজারল্যান্ড, পর্তুগাল ও জার্মানি পেয়েছে ১ ভোট করে।
১২৫ ভোট পেলেই নির্বাচিত হওয়ার বিধান থাকলেও বাংলাদেশ ভোট দাতা ১৮৭ সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে ১৮১ টি ভোট পেয়ে এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। নির্বাচিত ১৮টি সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে ভোট প্রাপ্তি বিবেচনায় বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয়। বিশেষভাবে উল্লেখ্য, বাংলাদেশ জাতিসংঘের ৪৩টি কমিটিতে সক্রিয় রয়েছে।
মামুন-অর-রশিদ জানান, বাংলাদেশের বিপুল সংখ্যক ভোট প্রাপ্তিতে জাতিসংঘের বিভিন্ন সদস্য রাষ্ট্র বাংলাদেশ মিশনের স্থায়ী প্রতিনিধি ড.এ.কে আব্দুল মোমেনকে অভিনন্দন জানাতে থাকেন।
সদস্য রাষ্ট্রগুলো জাতিসংঘে বাংলাদেশের সক্রিয় পদচারনা এবং দেশটির অর্থনৈতিক ও সামাজিক অগ্রগতিতে দৃষ্টান্তমূলক দক্ষতারও প্রসংশা করেন। তারা মনে করেন অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদের মত জাতিসংঘের এই গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অগ্রগতির অভিজ্ঞতা বিশেষ সহায়ক ভূমিকা রাখবে, বলেন মামুন-অর-রশিদ।
বাংলাদেশ সময়: ১৪:৩০:৫৯ ৩৬৯ বার পঠিত