বঙ্গ-নিউজ ডটকমঃ
নিচে লিখিত বিবৃতিটি তুলে ধরা হলোঃ
‘১০ অক্টোবর ২০১৩
প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ
পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচী অনুযায়ী আমরা গতকাল ০৯ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে প্রশাসনিক ভবনের সামনে দুপুর ১টা থেকে অবস্থান নেই। এই শান্তিপূর্ণ ও অহিংস অবস্থানের উদ্দেশ্য ছিল সম্মানিত সিন্ডিকেট সদস্যগণকে অনুরোধ করা যেন তাঁরা আজকের সিন্ডিকেট সভাটি না করেন। বেলা আনুমানিক সাড়ে তিনটায় মাননীয় উপাচার্য প্রো-উপাচার্যদ্বয়, প্রক্টর ও সহকারী প্রক্টরগণকে নিয়ে প্রশাসনিক ভবনের সামনে আসেন সিন্ডিকেট সভায় যোগদানের জন্য। প্রশাসনিক ভবনের সকল প্রবেশপথ তখন উন্মূক্ত ছিল। আন্দোলনরত শিক্ষকগণ প্রধান প্রবেশপথে দাঁড়ানো ছিলেন। মাননীয় উপাচার্য, প্রো-উপাচার্যদ্বয়, প্রক্টর ও সহকারী প্রক্টরগণ প্রধান প্রবেশপথের দিকে এগিয়ে আসলে শিক্ষকগণ তাঁদের সিন্ডিকেট সভায় যোগ না দেয়ার অনুরোধ করতে এগিয়ে গেলে মাননীয় উপাচার্য একইসঙ্গে পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক জনাব জামালউদ্দিন ও ফার্মেসী বিভাগের শিক্ষক জনাব মো: ফখরুল ইসলামকে দুইহাতের কুনুই দিয়ে আঘাত করেন। এতে জনাব জামালউদ্দিন মাটিতে পড়ে যান। এই ঘটনা ঘটার পর আন্দোলনকারী শিক্ষকগণ প্রতিবাদ করতে থাকেন। এ পর্যায়ে মাননীয় প্রো-উপাচার্যদ্বয় মাননীয় উপাচার্যের পক্ষ নিয়ে শিক্ষকগণের সঙ্গে বাক-বিতন্ডায় লিপ্ত হন এবং শিক্ষকগণের সঙ্গে অশোভন আচরণ করতে থাকেন। এমতাবস্থায় মাহমুদুর রহমান জনির (পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ, ৩৬ ব্যাচ))নেতৃত্বে ১৫/২০ জন দুর্বৃত্ত ছাত্রের একটি দল শিক্ষকগণের পেছনে এসে দাঁড়ায় এবং শিক্ষকগণকে ধাক্কা দিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষকগণের বসার চেয়ারগুলো ভাঙ্গতে থাকে এবং দুর্বৃত্ত ছাত্ররা লাঞ্ছিত করে মাইμোবায়োলজী বিভাগের সভাপতি ড. মো. আনোয়ার খসরু পারভেজকে। চেয়ার ভাঙ্গা শেষে ছাত্ররা এই বলে হুমকি দেয় যে “অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আমার আসতেছি, পারলে তোরা থাকিস।” ধারাবাহিকভাবে যেভাবে এই ঘটনাগুলো ঘটেছে তাতে সহজেই অনুমেয় যে, এ ঘটনা পরিকল্পিত যার সঙ্গে মাননীয় উপাচার্য, প্রো-উপাচার্যদ্বয়, প্রক্টর ও সহকারী প্রক্টর জনাব কাজী সাইফুল ইসলাম প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। সেজন্য এঁরা কেউ এই অনাক্সিক্ষত কর্মকাণ্ডরোধে কোনই ভূমিকা রাখেননি। ড. মো. আনোয়ার খসরু পারভেজ আহত হওয়ার পর প্রক্টরের কাছে মাননীয় উপাচার্য ও প্রো-উপাচার্যদ্বয়ের উপস্থিতিতে বিচার দাবি করেন। প্রক্টর তাঁর প্রতি সহানুভূতি না দেখিয়ে উল্টো ড. পারভেজের দিকে “তুই কে” বলে একাধিকবার তেড়ে যান এবং ড. পারভেজকে মারতে উদ্যত হন। ভয়ানক উত্তেজিত প্রক্টরকে কোনভাবেই যখন নিবৃত করা যাচ্ছিল না তখন শিক্ষকগণ খানিকটা দূরে দাঁড়িয়ে থাকা ড. পারভেজকে প্রক্টরের সামনে নিয়ে আসেন এবং প্রক্টরের উদ্দেশ্যে বলেন যে, “আপনি মারতে চাচ্ছেন? মারেন।” এরপর আধাঘন্টার মাথায় একই গ্র“পের ২০/২৫ জন সন্ত্রাসী ছাত্রের একটি দল হকিস্টিক, রড, পাইপ ও লোহার চেইন নিয়ে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান করে। এরপর দুর্বৃত্ত ছাত্ররা এসে উপাচার্যভবনের পাশে যেখানে আন্দোলনরত শিক্ষকগণ গত কয়েকদিন ধরে শান্তিপূর্ণ অবস্থান করছিলেন তা দখল করে নেয়; ব্যানার পোড়ায়, চেয়ার ও বাল্ব ভাঙ্গে এবং সেখানে অবস্থান নেয়।
শিক্ষকগণ আনুমানিক সাড়ে পাঁচটার দিকে ঘটনার প্রতিবাদে মৌনমিছিল করে উপাচার্য ভবনের সামনে আসেন এবং দেখতে পান শিক্ষকদের নির্ধারিত স্থান ছাত্ররা দখল করে বসে আছে। শিক্ষকগণ ছাত্রদের উদ্দেশ্যে বলেন “তোমরা আমাদের ছাত্র তোমাদের সাথে আমাদের কোন বিরোধ নেই।” ছাত্রদেরকে শিক্ষকগণের চেয়ারগুলো ছেড়ে দিয়ে পাশে কোথাও বসতে বলেন। এই পর্যায়ে নগর ও পরিকল্পনা বিভাগের ছাত্রত্ব নেই এমন একজন ছ্ত্রা মামুন, শিক্ষকগণের উপর ঝাপিয়ে পড়ে এবং তার সঙ্গে অন্য দুর্বৃত্ত ছাত্ররাও শিক্ষকগণকে লাঞ্ছিত করতে থাকে। এবার দুর্বৃত্ত ছাত্রকর্তৃক লাঞ্ছিত হন সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শামছূল আলম, ফার্মেসী বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ মাফরুহী সাত্তার, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষক জনাব মো. তানজিমুল হক মোল−া এবং কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক জনাব আবু সাঈদ মো. মোস্তাফিজুর রহমান। এরপর একই ছাত্ররা মিছিল শুরু করে এবং থেমে থেমে শিক্ষকগণের উদ্দেশ্যে অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল করতে থাকে।
শিক্ষকগণের উপর হামলার সংগে যারা জড়িত তারা হলো:
উপাচার্য, প্রক্টর এবং উপাচার্য, প্রো-উপাচার্যদ্বয় ও প্রক্টরের প্রত্যক্ষ মদদে নিন্মলিখিত ছাত্ররা শিক্ষকগণের উপর হামলা চালায়:
রুহুল আমিন (রসায়ন ৩৭ ব্যাচ), মামুন খান (নগর অঞ্চল ৩৫ ব্যাচ), কায়কোবাদ (লোক প্রশাসন ৩৯ ব্যাচ),সজিব (ম্যানেজমেন্ট ৪০ ব্যাচ),লিংকন (আই.আই.টি ৪০ ব্যাচ), প্রত্যয় (ইংরেজি ৪১ ব্যাচ), মুশফিক (আই.বি.এ ৪১ ব্যাচ), মিনহাজ (নৃ-বিজ্ঞান ৩৯ ব্যাচ), শোয়েব (পরিবেশ বিজ্ঞান ৩৯ ব্যাচ), পরশ (বাংলা ৪০ ব্যাচ), মিথুন কুন্ডু (আই.বি.এ ৩৮ ব্যাচ), রাজু (নগর অঞ্চল ৪০ ব্যাচ), আনন্দ (৪১ ব্যাচ), টিটু (৪০ ব্যাচ)
হামলার ঘটনার মদদদাতা ও হামলাকারী দুর্বৃত্ত ছাত্রদের বিরুদ্ধে তদ¤— সাপেক্ষে দৃষ্টান্ত—মূলক শাস্তি বিধানের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।‘
বিনীত
অধ্যাপক ড. মুহম্মদ হানিফ আলী
আহ্বায়ক
অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ কামরুল আহসান
সদস্যসচিব
সাধারণ শিক্ষক ফোরাম
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
বাংলাদেশ সময়: ০:৫২:৫৬ ৪৪৬ বার পঠিত