বঙ্গ-নিউজ ডটকমঃ মানবতা বিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসির দণ্ডাদেশ প্রাপ্ত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সংসদ সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর (সাকাচৌ) পরিবারের সদস্যদের খুশী করার জন্যে অনেকটা চাপে পড়ে দায়সারাভাবে হরতালের ঘোষণা দিয়েছে চট্টগ্রাম বিএনপি।
চট্টগ্রাম নগর বিএনপির নগর সম্পাদক ডা. শাহদাত হোসেন মঙ্গলবার বেলা ২ টার একটু আগে হাতে গোনা কয়েকজন নেতা-কর্মী নিয়ে নগর বিএনপি’র দলীয় কার্যালয় নাসিমন ভবনের সামনে আসেন।
নগর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহদাত হোসেনের সঙ্গে মহানগর, উত্তর জেলা ও দক্ষিণ জেলার উল্লেখযোগ্য কোনও নেতার উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়নি। নগর বিএনপি’র সভাপতি ও বিএনপি’র চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী এখন দেশের বাইরে রয়েছেন। খসরুর অনুসারিদেরও দেখা যায়নি। বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমানের অনুসারিরাও তেমন সাড়া দেননি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপি’র একটি বিশ্বস্থ সূত্র বঙ্গনিউজকে জানান, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পরিবারকে খুশি করার জন্যে এ হরতাল। এ হরতাল নিয়ে বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মী অনেকের তেমন তৎপরতা নেই।
দায়সারাভাবে কয়েকজন কর্মী নিয়ে ‘প্রতিবাদ সমাবেশের’ নামে তাৎক্ষণিক হরতালের ঘোষণা দেন ডা.শাহাদাত হোসেন। ঘোষণার পরপরই দ্রুত দলীয় কার্যালয় ত্যাগ করেন নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক।
দলীয় একটি সূত্র জানায়, শাহাদাত হোসেনের রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনেক অবদান রয়েছে। কৃতজ্ঞতা জানাতেই অনন্যোপায় হয়ে হরতালের ডাক দেন ডা.শাহাদাত। চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপি পক্ষ থেকে এ হরতাল আহ্বান করা হলেও উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপি’র উল্লেখযোগ্য কোন নেতাকে দেখা যায়নি শাহাদাতের পাশে।
অন্যদিকে উত্তর জেলা বিএনপির সভাপতি গিয়াসউদ্দিন কাদের চৌধুরী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছোট ভাই হলেও উপস্থিত হননি তিনি। এ বিষয়ে কোন ধরণের প্রতিক্রিয়াও জানাননি। তার মোবাইলটিও বন্ধ পাওয়া যায়।
এদিকে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর রায় ঘোষণার আগের দিন সোমবার থেকেই চট্টগ্রাম বিএনপির শীর্ষ নেতারা এ বিষয়ে কোন ধরণের মন্তব্য করতে রাজি হননি। সোমবার ডা.শাহাদাতের মোবাইলে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও কল রিসিভ করেননি তিনি। পরে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।
একইভাবে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি জাফরুল ইসলাম, উত্তর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আসলাম চৌধুরীর মোবাইলে কল দেয়া হলেও রিসিভ করেননি। চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন ও সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম আকবর খন্দকার সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর রায়ের বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
দলীয় সূত্র জানিয়েছে, দলের হাই কমান্ডের নির্দেশ না থাকায় এ বিষয়ে কথা বলছেন না চট্টগামের শীর্ষ নেতারা। ফলে চট্টগ্রাম মহানগর বা উত্তর জেলা বিএনপি কোন ধরণের কর্মসূচি দিতে পারেনি।
রায় ঘোষণার পর কেবল কৃতজ্ঞতা জানাতেই নির্দিষ্ট হাতে গোনা কয়েকজন কর্মী নিয়ে হরতাল কর্মসূচির ঘোষণা দেন ডা.শাহাদাত। তবে এতে কেন্দ্রের নির্দেশ পেয়েই তিনি এ ঘোষণা দিয়েছেন বলে নির্ভর যোগ্য সূত্র দাবি করেছে।
অন্যদিকে ডা.শাহাদাত হোসেন হরতাল ঘোষণার জন্য দলীয় কার্যালয়ে আসতে নগর বিএনপির বেশ কয়েকজনকে ফোন দেন। এসময় তারা ওই কর্মসূচিতে যাবেন কিনা নিজ নিজ নেতাদের কাছে অনুমতি চেয়েছেন বলেও দলীয় অপর একটি সূত্রে জানা গেছে।
তবে হরতাল কর্মসুচি ঘোষণার সময় ডা.শাহাদাতের অনুসারী নগর ছাত্রদলের সভাপতি গাজি সিরাজ উল্লাহ ছাড়া উল্লেখযোগ্য কাউকে দেখা যায়নি।
মাঠ পর্যায়ের বিএনপি ও ছাত্রদল-যুবদল কর্মীরা বলছেন, হরতাল কর্মসুচি ঘোষণা করলেও দলীয় কার্যালয়ে আধঘণ্টাও অবস্থান করেননি শাহাদাত। বের করা হয়নি কোন প্রতিবাদ মিছিল।
বাংলাদেশ সময়: ২১:৫২:১৪ ৩৭৫ বার পঠিত