বঙ্গ-নিউজ ডটকমঃ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দণ্ডিত অপরাধীদের নির্বাচনে অযোগ্য করে আইন সংশোধনের প্রস্তাব সংসদে উঠেছে।গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (সংশোধন) বিল-২০১৩ সোমবার সংসদে উত্থাপন করেন আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী এটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠিয়েছেন।
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটিকে এজন্য ১০ দিন সময় দেয়া হয়েছে। তারা প্রতিবেদন দেয়ার পর বিলটি পাসের জন্য উত্থাপিত হবে।
বর্তমান সরকারের আমলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের অধীনে মানবতাবিরোধীদের বিচার কাজ শুরু হওয়ায় আরপিও-তে নির্বাচনে প্রার্থীদের যোগ্যতা-অযোগ্যতায় এ আইনে সংশোধনী আনা হচ্ছে।
পাশাপাশি সংশোধনী প্রস্তাবে সংসদ নির্বাচনে জামানতের পরিমাণ ১০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ২০ হাজার টাকা এবং নির্বাচনী ব্যয় ১৫ লাখ টাকা থেকে ২৫ লাখ টাকায় বাড়ানো হয়েছে।
এছাড়া নির্বাচনী মামলা দাখিলের ফি ২ হাজার টাকার পরিবর্তে ৫ হাজার টাকা, রাজনৈতিক দলের তহবিলে ১০ লাখ টাকার পরিবর্তে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ব্যক্তি অনুদান ও সংস্থা অনুদান ২৫ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্বলিত বিবৃতিতে আইনমন্ত্রী বলেন, “নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার জন্য এই বিল উত্থাপন করা হয়েছে।”
যত দ্রুত সম্ভব বদলি কার্যকর
নির্বাচনকালীন প্রয়োজনমাফিক সরকারের যে কোনো বিভাগ ও সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারিদের বদলি করার বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের অনুরোধ যথাযথ কর্তৃপক্ষকে দ্রুত কার্যকরের বিষয়ে প্রস্তাব করা হয়েছে বিলে।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, সংবিধানের ১২৬ অনুচ্ছেদে ইসি সব ধরনের সহায়তার কথা বলা হলেও নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা নিয়ে বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে শক্তিশালী ইসির ভূমিকার জন্যে এ সব সংস্কার আনা হয়েছে। অনেক সময় বদলির আদেশ দিলেও কার্যকর হতে নির্দিষ্ট সময় পার হয়ে যায়।
প্রস্তাবিত সংশোধনীর ৪৪ (ই) ধারায় বলা হয়েছে, সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে সরকারের যে কোন বিভাগ বা সংস্থার যে কোন চাকরিজীবিকে বদলির প্রয়োজন হলে তার যথাযথ কর্তৃপক্ষকে লিখিভাবে অনুরোধ করবে ইসি। লিখিত ওই পত্রটি পাওয়ার যত দ্রুত সম্ভব তা কার্যকর ব্যবস্থা নিবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
স্বতন্ত্র ও দলীয় প্রার্থী বাছাই
আরপিও’র ১৪ ধারার সংশোধন প্রস্তাবে বলা হয়, কোনো ব্যক্তি একাধিক মনোনয়নপত্র [এক আসনে] জমা দিলে এর একটি বৈধ ঘোষণা হলে অন্য মনোনয়নপত্রগুলো আর বাছাইয়ের দরকার পড়বে না।
১৬ (১) ধারা সংশোধনের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, মনোনয়ন প্রত্যাহারের সময়সীমার মধ্যে যে কোনো বৈধ প্রার্থী স্বয়ং বা এজেন্ট তার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিতে পারবে। [এটি স্বতন্ত্র প্রার্থীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে]
(২) কোনো একটি আসনে একটি দল থেকে একাধিক প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়া হলে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সময়সীমার মধ্যে দল কর্তক লিখিতভাবে একজন প্রার্থীর নাম চূড়ান্ত করতে হবে। এক্ষেত্রে দলটির অন্যরা প্রার্থী হতে পারবে না।
(৩) কোনো প্রার্থীর প্রত্যাহার [উপধারা ১] বা দলের চূড়ান্ত মনোনয়নের পর [উপধারা ২] আর কোনো অবস্থায় কেউ প্রার্থী হওয়া কিংবা বাতিলের সুযোগ পাবে না।
(৪) রিটার্নিং কর্মকর্তা চূড়ান্তভাবে মনোনীত প্রার্থীদের নামের তালিকা তাঁর দপ্তরের উপযুক্ত স্থানে ঝুলিয়ে দেবেন।
(৫) মনোনয়ন প্রত্যাহারের পরের দিন রিটার্নিং কর্মকর্তা প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করবে।
বাংলাদেশ সময়: ২২:১০:৫৬ ৪৪২ বার পঠিত