বঙ্গ-নিউজ ডটকম:কোটি টাকা ব্যয়ে সংবর্ধনা দেয়া হবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। প্রস্তুতি চূড়ান্ত। তৈরি করা হয়েছে বিশাল মঞ্চ। অনুষ্ঠানে সবচেয়ে আকর্ষণীয় ও ব্যয়বহুল ব্যানার তৈরি করা হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর ছবি দিয়ে। মঞ্চজুড়ে থাকবে শেখ হাসিনার ছবি। ব্যানারের আয়তন লম্বায় ১৫ ফিট ও পাশে ২০ ফিট। এছাড়াও থাকছে বিশালাকৃতির নৌকা। সবমিলিয়ে ২ ঘণ্টার অনুষ্ঠানের জন্য ব্যয় করা হবে দেড় লাখ ডলার। যা বাংলাদেশী টাকায় ১ কোটি ২০ লাখ টাকার বেশি। আর এসব খরচই হচ্ছে প্রবাসী বাংলাদেশীদের টাকায়। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ শনিবার রাতে নিউ ইয়র্কের হিলটন হোটেলের গ্র্যান্ড বলরুমের থার্ড ফ্লোরে এ সংবর্ধনার আয়োজন করেছে। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের ভাষায়- এটা হবে প্রধানমন্ত্রীকে দেয়া ঐতিহাসিক সংবর্ধনা। এর আগে নিউ ইয়র্কে তাকে যত সংবর্ধনা দেয়া হয়েছে তার রেকর্ড ভাঙতেই এ আয়োজন। শুধু হলরুম ভাড়া করা হয়েছে ৩০ হাজার ডলারে, ২৫ জন নিরাপত্তাকর্মী, মাইক্রোফোন সাউন্ড সিস্টেম, ব্যানার লিফলেট, ১০ হাজারে ডলার ১৪টি পত্রিকায় বিজ্ঞাপন। প্রত্যেকটাতে ২ হাজার ডলার করে। পানি ও খাবার ছাড়াও আয়োজক কর্মীদের প্রতিদিন ১০০ ডলার করে দেয়া হচ্ছে সংবর্ধনার প্রস্তুতির জন্য। এর আগে ভারতে সোনিয়া গান্ধীকে দেয়া এক সংবর্ধনায় পুরো মঞ্চজুড়ে তার ছবিসহ ব্যানার টাঙানো হয়েছিল। ওই অনুষ্ঠানকে অনুসরণ করছে বলে জানায়, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ। অনুষ্ঠান ঘিরে এরই মধ্যে ৭৪টি বিলবোর্ড তৈরি করা হয়েছে। মহাজোট সরকারের আমলের বিভিন্ন সফলতা ও সরকারের গুণকীর্তন এসব বিলবোর্ডে স্থান পেয়েছে। এছাড়া তৈরি করা হয়েছে অসংখ্য ব্যানার ও ফেস্টুন। বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় পোস্টার বানানো হয়েছে চার হাজার। নিউ ইয়র্কের বাঙালি অধ্যুষিত এলাকায় এসব পোস্টার লাগানো হয়েছে। বিশেষ করে জ্যাকসন হাইটস, জ্যামাইকা, ব্রুকলিন, ব্রঞ্চ, ম্যানহাটনে এসব পোস্টারের ছড়াছড়ি। পোস্টার আইন লঙ্ঘন করায় এরই মধ্যে নিউ ইয়র্ক পুলিশের পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগকে সতর্ক করা হয়েছে। এদিকে অনুষ্ঠানের অর্থ যোগান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন দলের তৃণমূল নেতাকর্মীরা। তারা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের কাছ থেকে নির্দিষ্টহারে এ চাঁদা তোলা হয়েছে। এমনকি আওয়ামী লীগ সমর্থকদের কাছেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কথা বলে চাঁদা আদায় করা হয়েছে। প্রসঙ্গত বর্তমানে নিউ ইয়র্কে প্রায় দুই লাখ বাঙালি প্রবাসী রয়েছেন। এ প্রসঙ্গে নিউ ইয়র্ক আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান মানবজমিনকে বলেন, প্রবাসীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে প্রধানমন্ত্রীকে এবার সংবর্ধনা দেবে। এখানে চাঁদার কোন বিষয় ছিল না। যে যা পেরেছেন তাই দিয়েছেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী এখানে দিক- নির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখবেন। আগামী নির্বাচনে তার কি অঙ্গীকার হবে তা বলবেন। যেসব কাজ শেষ করতে পারেননি তার ব্যাখ্যা দেবেন। আগামীতে জনগণ তাকে আবার কেন নির্বাচিত করবেন সে বিষয়টিও তুলে ধরবেন। এদিকে সংবর্ধনার চাঁদার বিষয়ে আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠকরা ভিন্ন ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তারা বলেন, আগে নেত্রীর পাশে বসা নিয়েও চাঁদা তোলা হতো। নেত্রীর পাশের চেয়ার ও তার সঙ্গে ছবি তোলার সুযোগ দিয়ে ডলার নেয়া হতো। হয়তো এমন অনেকে আছেন নেত্রীর পাশে বসার জন্য ৫ হাজার ডলার পর্যন্ত দিয়েছেন। এখন পরিস্থিতি পাল্টেছে। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় শ্রমিক লীগের এক শীর্ষ নেতা বলেন, গত দুই বছর ধরে প্রধানমন্ত্রীর সংবর্ধনার জন্য কোন চাঁদা অঙ্গ সংগঠকদের কাছ থেকে নেয়া হচ্ছে না। এখন পুরো ব্যয়ভার বহন করছেন নিউ ইয়র্ক আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান। সম্প্র্রতি তিনি ঘোড়াশালে একটি পাওয়ার প্ল্যান্টের কাজ পেয়েছেন। মূলত ওই প্রকল্পর অর্থ থেকে দলের সব ব্যয় বহন করছেন তিনি। এ প্রসঙ্গে সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ঘোড়াশালে ম্যাক্স পাওয়ার কোম্পানির নামে একটি পাওয়ার প্ল্যান্টের কাজ পেয়েছি। তবে যারা বলছেন এ প্রকল্প থেকে ব্যয় বহন করছি তা সঠিক নয়। ওটাতো আমার ব্যবসা। এদিকে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ৫ হাজার লোকের সমাগম হবে বলে প্রত্যাশা করছেন আওয়ামী লীগের নেতারা। এ প্রসঙ্গে নিউ ইয়র্ক আয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ রহমান সাজ্জাদ মানবজমিনকে বলেন, আমাদের এবারের সংবর্ধনা হবে ঐতিহাসিক। গত বছর ফ্লোরিডায় প্রধানমন্ত্রীকে সংবর্ধনা দেয়া হয়েছিল। তখন যে পরিমাণ লোক সমাগম হয়েছিল এবার অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে যাবে। অনুষ্ঠানটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এটিএন বাংলা সরাসরি সম্প্রচার করবে। অনুষ্ঠানের নিরাপত্তার জন্য নিউ ইয়র্ক পুলিশের ২৫ সদস্যর একটি চৌকস দল দায়িত্ব পালন করবেন। পাশাপাশি স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের দেড়শ’ ভলান্টিয়ার
বাংলাদেশ সময়: ০:২৯:৩৭ ৫০৯ বার পঠিত