বঙ্গ-নিউজ ডটকমঃদেশের দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতার মধ্যে সংলাপ বিষয়ে জারি করা রুলের শুনানি শুরু হবে আগামী ২৬ সেপ্টেম্ব|
রোববার বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি জাফর আহমদের বেঞ্চ শুনানির এই দিন ঠিক করে দেয়।
রিট আবেদনকারী মো. ইউনুস আলী আকন্দ নিজেই এদিন শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মোখলেসুর রহমান।
পরে মো. ইউনুস আলী আকন্ বলেন, “এই রিটের রুল শুনানির জন্য কয়েকদিন আগে আবেদন করেছিলাম। আজ আবেদনটি তালিকায় ছিল। আদালত আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর শুনানির জন্য দিন নির্ধারণ করেছে।”
এর আগে গত ২৭ মার্চ আদালত এ বিষয়ে রুল জারি করে।
অবাধ ও স্বচ্ছভাবে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে চলমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া এবং তাদের নেতৃত্বাধীন জোটের মধ্যে সংসদের ভিতরে-বাইরে রাজনৈতিক সংলাপ অনুষ্ঠানের নির্দেশ কেন দেয়া হবে না- তা জানতে চাওয়া হয় এই রুলে।
রাজনৈতিক অধিকার ও কার্যক্রমের নামে বোমা ও ককটেল নিক্ষেপ, গাড়ি ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের মতো ‘অবৈধ কার্যক্রম’ বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্র সচিবকে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, তাও ওই রুলে জানতে চাওয়া হয়।
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী, বিএনপি চেয়ারপার্সন এবং স্বরাষ্ট্র সচিবসহ বিবাদীদের চার সপ্তাহের মধ্যে এর জবাব দিতে বলা হয়।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইউনুস আলী আকন্দ গত ১৪ মার্চ এই রিট আবেদন করেন।
প্রাথমিক শুনানিতে আবেদনকারী পক্ষে ব্যারিস্টার নাজমুর হুদা বলেন, হরতাল একটি গণতান্ত্রিক অধিকার। কিন্তু এই অধিকার দিয়ে গাড়ি ভাংচুর, নির্দোষ মানুষের উপর আক্রমণ বৈধতা পেতে পারে না।
“হরতালের মানে তো শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ। কিন্তু এখন এর মাধ্যমে ১৬কোটি মানুষ জিম্মি হয়ে গেছে। এটা থেকে উদ্ধার পেতে হলে আপনাদের এগিয়ে আসতে হবে। আপনাদের হাত অনেক লম্বা। আপনারা এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারেন এবং এ ধরনের কাজ প্রতিরোধ করতে পারেন।”
এ সময় আদালত বলেন, “আমরাতো তাদের বসার জন্য বাধ্য করতে পারি না।”
উত্তরে নাজমুল হুদা বলেন, “রিটে সক্রিয়তা বা নিষ্ক্রিয়তাকে চ্যালেঞ্জ করা যায়। দুই নেত্রীর কার্যকলাপ দেশের বারোটা বাজাচ্ছে। আর তারা নিষ্ক্রিয় থেকে আলোচনায় বসছেন না। সুতরাং আপনারা এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আদেশ দিতে পারেন।”
“আমরাতো বেশি কিছু চাইছি না। আমরা কেবল একটা রুল চাইছি। তাদের আপনি রুল দিন। তারাই এসে বলুক, তারা কেন বসবেন বা বসবেন না। রুল শুনানির পর্যায়ে এখতিয়ারের বিষয়ে বিস্তারিত শুনানির সুযোগ রয়েছে। সেখানে প্রয়োজনে শীর্ষস্থানীয় আইনজীবীদের বলবেন, তারা অ্যামিকাস কিউরি হিসাবে আসবেন।”
প্রাথমিক শুনানিতে এম কে রহমান বলেন, দুই জোটের কোনো নিবন্ধন নেই। তাই এদের বিবাদী করা যায় না। নির্বাচন কমিশন জোটভুক্ত নিবন্ধিত দলগুলোকে সংলাপের জন্য ডেকেছিল। কিন্তু বিএনপিসহ অনেকেই তাতে সাড়া দেয়নি।
“এটি এমন একটি রাজনৈতিক বিষয়, যাতে রুল দিলে কে তা বাস্তবায়ন করবে- তা স্পষ্ট নয়। আর বাস্তবায়ন অযোগ্য বিষয়ে আদালত কোনো আদেশ দিতে পারে না।”
এর আগে গত ১৯ মার্চ এই রিটের ওপর প্রথম দিনের শুনানিতে ইউনুস আলী আকন্দ বলেন, “সাম্প্রতিক দিনগুলোতে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতায় দেড় শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। দেশের মানুষের স্বার্থে এবং আগামী সাধারণ নির্বাচন অবাধ, শান্তিপূর্ণ স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য করতে রাজনৈতিক দলগুলোর মুখোমুখি অবস্থান ত্যাগ করে দুই নেত্রীকে নিয়ে রাজনৈতিক সংলাপ শুরু করতে নির্দেশনা প্রয়োজন।”
আদালত এ সময় বলে, সংলাপ ও নির্বাচন নিয়ে তো সংবিধানেই বলা আছে।
জবাবে আবেদনকারী বলেন, বর্তমানে দুই প্রধান দলের মধ্যে বিদ্বেষপূর্ণ পরিস্থিতির সৃষ্টি হওয়ায় আদালতের নির্দেশনা প্রয়োজন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭:৪০:০৫ ৪৪৬ বার পঠিত