বঙ্গ-নিউজ ডটকম:আজি বরষার কদমের সু-ঘ্রান গুটি গুটি পায়ে এসে বাতিয়ে দিল, হে বাংলা বরষা আসিছে তোর দ্বারে তোর কি অপরূপ যৌবন! ঐ দেখ্ সাজিয়ে তোর প্রকৃতি জাগিছে তোর দামালরা। কী সাহস যুবকের! কী তাদের সংগ্রামী চেতনা!! আর কী তাদের উদ্দীপনা!!! আমি এক সামান্য তরুণ হয়ে আজ যে তারুণ্যের চেতনায় মুগ্ধ। আমি কোন কবি বা গীতিকার নই। আমিও যে এক উদ্দীপনাময়ী।
হে তরুণ! আমরা কেন কবির কবিতায় ছন্দ মিলাব? আমরা যে পড়েছি ইতিহাস, দেখেছি বাস্তবতা। সেই ৫২ সালের ভাষা আন্দোলন আর ৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস যদি একবার বিচরণ করে আসি তবে যে বুঝতে পারি তরুণের মহিমা। সেতো আমাদের কাছে ইতিহাস কিন্তু আজ আমাদের সামনে জেগে উঠেছে সাভার ট্রাজেড়ি, যেখানে সবার আগে ছুঠে গিয়েছে শত শত বাংলা মায়ের সন্তান, আমরা দেখেছি হাজারো তরুণকে মানুষের বিপদে এগিয়ে আসতে, শুনেছি মানুষের হাহাকারে হাজারো তরুণের বোবা কান্নার আওয়াজ। অনেকে হয়ত বিরক্তবোধ করবেন আমি যে সবার জানা গল্প নিয়ে ন্যাকামো করছি। কিন্তু তা কখনোই নয় এটাই আসলে বাস্তবতা। আমি একজন বাংলা মায়ের সন্তান হিসেবে আমার ভেতরের অনুভূতিগুলো প্রকাশ করছি মাত্র। সম্মিলিত জোয়ান হাতের আদলে আরো সুন্দর রূপ দিতে এই বাংলাদেশকে। আমরা পারি এই দেশটিকে ফুলের ঢালি বানিয়ে দিতে। আমরাই পারি সফলতার পসরা সাজাতে। কোথায় নেই যুবকের অবদান? দেশের অর্থনীতি, রাজনীতি নাকি সংস্কৃতি? পরিবেশে সব যে তরুণের আঙ্গুলি হেলনে দোলে। কিন্তু তবুও কেন যেন মনে হয় আমরা তরুণরা সৎসাহসকে লুকিয়ে রেখে অপশক্তির দাপটে বেশি মাতাল। তরুণরা যেন সিনেমা কিংবা কল্পকাহিনীর মত উদ্ভট, অবাস্তব জীবনকে অনুকরণ ও অনুসরণ করতে ভালবাসে এবং ঐ কায়দা-কানুনমত চলাফেরা করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। দেশপ্রেম এবং মানব প্রেমের মত অধুনা সত্যকে ত্যাগ করে উগ্র জীবনযাপনে হয়ে উঠেছে উৎসাহী আর চরম অবক্ষয়ের মাঝে জীবনবোধ খুঁজে বেড়াচ্ছে। আমরা দেখেছি যুবকের অশান্তির বলি আরেক যুবক বিশ্বজিতকে প্রাণ দিতে। আমরাই ঘটাচ্ছি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সোনার ছেলে হত্যা আর চলন্ত বাসে——- -এর মত নরপিশাচের ঘটনা। আমরা মানুষরাই করে দিচ্ছি অপর শত শত মানুষকে অকালে ঝরে যাবার রাস্তা। যার ফলাফল আমাদের স্রোতের প্রতিকূলে হাঁটার প্রমাণ। দেশতো আমাকে সোনার টুকরো করে গড়ে তুলতে চায় তবে কেন, কোন অধিকারে আমরা এত নষ্ট হচ্ছি? সিগারেট কিংবা অস্ত্রের মত নিন্দনীয় হাতিয়ার হাতে তুলে নিচ্ছি? কেন দিচ্ছি না আমার মত আরও একটি প্রাণের দাম? কোন সে অপশক্তির দাপটে আমরা ঐশী হচ্ছি? আমরা কি পারি না একটি পরিচ্ছন্ন পরিবেশের জন্ম দিতে? আমরা তরুণরাইতো একমাত্র ভরসা বিশ্বের বুকে এই দেশটাকে একটি দৃষ্ঠান্তমূলক মড়েল হিসেবে তুলে ধরতে। কাজী নজরুল ইসলাম তো বলেছিলেন, “আমাদের পৃথিবী আমরা মনের মত করে গড়ে নিব” তবে কেন এই ধরা তরুণের ছোঁয়ায় কাঙ্খিত বিজয়ের বাঁিশ বাজাতে পারছে না? সুজলা-সুফলা, শস্য-শ্যমলা আমার এই সোনার বাংলা আজ দূষণের মত এক মহামারীর কবলে বিষন্ন হয়ে উঠছে। নষ্ট হয়ে যাচ্ছে তার সংস্কৃতি। পুড়ে ফেলা হচ্ছে এক ঝাঁক তরুণের রক্তের বিনিময়ে ছিনিয়ে আনা লাল-সবুজের পতাকা। ভেঙ্গে ফেলা হচ্ছে গৌরবমাখা শহীদের মিনার। তবে এই কি তারুণ্য? এটাই কি কাম্য এদেশের? এদেশ চায় একটি সুষ্ঠু-সুন্দর রাজনৈতিক ধারা, যার মূল লক্ষ্য হবে জনকল্যাণ। এইদেশ চায় একটি সুষ্ঠু শিক্ষার কারখানা যেখানে তৈরি হবে খাঁটি রতœ। চাই একটি সুস্থ-প্রাকৃতিক পরিবেশ যা একবার শরীরে তৃপ্তির পরশ বুলাতে পারে। এসবতো আমরা তরুণরাই গড়ে তুলতে পারি। যুব সমাজের নৈতিকতা এবং অনৈতিকতা যেন মূদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। প্রবল যৌবনের আত্ম-ত্যাগী নিবেদনের কাছে তার স্বার্থপরতা কখনো জয়ী হতে পারে না। এর জন্য দরকার সৎ-সাহস, দেশপ্রেম আর সহনশীলতা। আজ যেই দরিদ্রতা আর দূর্নীতি গ্রাস করে রেখেছে আমাদের সোনার বাংলাকে তা আমাদের হাতেই সরাব। আরো দৃঢ় করে তুলব এর অর্থনীতিকে। বয়ে দেব শান্তি আর শৃংখলার বন্যা। যেখানে থাকবে না কোন জাতিগত সম্প্রদায়িকতা। সংঘাত কিংবা হত্যার মত অপকর্ম। কিন্তু এ কাজতো এক হাতে করা যায় না এর জন্য চাই একতা, সাম্য, জনবল, আর সমর্থন। তাই আমি বলতে চাই আরো জাগো চির জাগ্রত যুব সমাজ। চলো হাতে হাত মিলিয়ে বলি “সবাই মিলে সোনার বাংলা গড়ি!!
…………….
লেখক
মো: রিদওয়ানুল হক
চট্টগ্রাম কলেজ
বাংলাদেশ সময়: ১৭:১৫:৫৬ ৫৮২ বার পঠিত