বঙ্গ-নিউজ ডটকম//
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রের স্টোররুম থেকে ১০টি পিস্তল (স্টারটিং পিস্তল) চুরির ঘটনা ঘটেছে। স্টোররুমের গ্রিল কেটে এ ঘটনা ঘটে । পিস্তল ছাড়াও আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র চুরি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। পরিচিত কোন সন্ত্রাসী গোষ্ঠী বা ছাত্র সংগঠনের নেতারা এর সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে বলে শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে। বিষয়টি স্বীকার করেছেন শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রের পরিচালক শওকতুর রহমান। শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রের কর্মকর্তারা বলেছেন, ১লা ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের ‘হীরকজয়ন্তী মহোৎসব’ এর দিন ব্যস্ততার ফাঁকে চুরির ঘটনা ঘটতে পারে। বড় ধরনের এ চুরির ঘটনা ঘটলেও বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কিছুই জানে না। বিষয়টি তদন্তে গঠন করা হয়নি কোন তদন্ত কমিটি। করা হয়নি কোন মামলাও। তবে জিডি করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি ও স্পোর্টস বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সহিদ আকতার হুসাইন মানবজমিনকে বলেছেন, শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রের পক্ষ থেকে তাকে কিছুই জানানো হয়নি। তবে তিনি বিষয়টি অন্য মাধ্যম থেকে জেনেছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, স্টোররুমে জার্মানির তৈরি ১০ থেকে ১২টি স্টারটিং পিস্তল, লোহার যন্ত্রপাতি, পুরাতন স্টিলের জিনিসপত্র, পুরাতন তামার থালা-বাসন, আশির দশকে এশিয়ান গেমসে ব্যবহৃত মূল্যবান যন্ত্রপাতি, ব্যাডমিন্টনের র্যাকেট, ক্রিকেট, ফুটবলসহ খেলার সব ধরনের যন্ত্রপাতি সংগৃহীত ছিল। চুরির ঘটনার পর নিরাপত্তার স্বার্থে স্টোররুমের পাশে অবস্থিত দু’টি আমগাছ কেটে ফেলা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ মনে করছে আমগাছ বেয়ে গ্রিল কেটে চোর ভেতরে প্রবেশ করে মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, পরিচিত কোন ব্যক্তি এই চুরির সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে। কেননা স্টোররুমে বেশ কয়েকটি স্টারটিং পিস্তল সংরক্ষিত আছে। পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, স্টারটিং পিস্তলে বুলেট রাখার স্থানটি ফাঁকা এবং সামনে ক্যাপ (টুপি) থাকে। ফলে যে কোন ধরনের বিস্ফোরক দিয়ে গুলি করলে তা বিকট আকারে শব্দ উৎপন্ন হয়। শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রের একটি সূত্র জানিয়েছে, স্টোররুমে ১০ থেকে ১২টি স্টারটিং পিস্তল সংরক্ষিত ছিল। এছাড়া আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ বস্তু ছিল। এখন পর্যন্ত মামলা না করা ও কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি না জানার কারণে চুরির ঘটনায় নানা রহস্য তৈরি হয়েছে। সূত্র জানিয়েছে, এটা নিয়ে আলোচনা হলে থলের বিড়াল বেরিয়ে পড়বে এমন আশঙ্কায় কোন তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়নি। একই কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষকে এমনকি স্পোর্টস বোর্ডের চেয়ারম্যানকেও জানানো হয়নি। এ বিষয়ে শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রের পরিচালক শওকতুর রহমান বলেন, অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের অনুষ্ঠানের দিন চুরি হতে পারে। তিনি বলেন, বেশি কিছু চুরি হয়নি। ব্যাডমিন্টনের কয়েকটি রেকেট চুরি হয়েছে বলে জানান তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি এবং প্রো-ভিসিকে বিষয়টি জানিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, না এখনও জানাইনি। স্টোর রুম থেকে স্টারটিং পিস্তল চুরির বিষয়ে তিনি বলেন, শুধু র্যাকেট চুরি হয়েছে। স্টারটিং পিস্তল চুরি হয়নি। তিনি বলেন, স্টোররুমে এখনও দু’টি স্টারটিং পিস্তল সংরক্ষিত আছে। বাকি পিস্তলগুলো কোথায় গেল জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনেক আগে থেকেই দু’টি পিস্তলই ছিল। কোন মামলা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, শাহবাগ থানায় একটি জিডি করেছি। ভিসি ও প্রো-ভিসিকে না জানালেও প্রক্টরকে বিষয়টি জানিয়েছেন বলে জানান পরিচালক। তবে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমার জানা মতে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত কোন মামলা হয়নি। তবে জিডি’র বিষয়টি তিনি জানেন না বলে জানান। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি ও স্পোর্টস বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সহিদ আকতার হুসাইন বলেন, শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্র থেকে আমাকে এখনও কিছুই জানানো হয়নি। তিনি বলেন, স্টোররুমে স্টারটিং পিস্তলসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র সংরক্ষিত আছে। চুরির ঘটনা ঘটলেও এখনও কেন জানানো হয়নি বা তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়নি সে বিষয়ে শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রের পরিচালকের কাছে জবাব চাওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ৪:৫৪:৪৩ ৬০২ বার পঠিত