তানিয়া সুলতানা বঙ্গনিউজ :অভিযোগ উঠেছে একসময়ের জনপ্রিয় বলিউড নায়িকা প্রীতি জিনতার বিরুদ্ধে। অভিযোগ অনেকটা এ রকম, প্রীতি তাঁর প্রথম প্রযোজিত ছবি ইশক ইন প্যারিস নিয়ে চূড়ান্ত রকমের অবহেলা করছেন। তিনি ব্যস্ত আছেন তাঁর ব্যবসা, বিশেষ করে আইপিএল নিয়ে। আর এ কারণে বেজায় চটেছেন ছবির পরিচালক প্রেম রাজ। নিজের সৃষ্টির প্রতি বিমাতাসুলভ আচরণের কারণে প্রীতি নিজেই বিপদে পড়তে যাচ্ছেন—ধারণা করছেন সবাই, বিশেষ করে ছবির পরিচালক। পক্ষকাল আগে এ রকম একটি খবর বলিউডের আকাশে-বাতাসে উড়তে দেখা যায়। আর এই খবরটি পড়ে প্রীতি যতটা না বিস্ময় প্রকাশ করেছেন, তার চেয়ে বেশি কষ্ট পেয়েছেন ছবির পরিচালক প্রেম রাজ নিজে। প্রেম বলেন, ‘আমার পরিচালিত প্রথম ছবি ম্যায় ঔর মিসেস খান্না সুপারফ্লপ হওয়ার পর পুরো বলিউড যেখানে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল, তখন প্রীতিই একমাত্র আমার ওপর বিশ্বাস রেখেছিলেন। ওই ছবিতে কারিনার চরিত্রে শুরুতে প্রীতিকেই প্রস্তাব দিয়েছিলাম। প্রীতি তাঁর ব্যস্ততার কারণে ছবিটি করতে পারেননি ঠিকই, তবে আইটেম গানে কাজ করে আমাকে সাহায্য করেছেন। পরবর্তী সময়ে যখন একটি ছবির চিত্রনাট্য লিখে প্রযোজক পাচ্ছিলাম না, তখন প্রীতিই রক্ষাকর্তার ভূমিকায় আমার হাত ধরেছেন। একটি ফ্লপ ছবির পরিচালককে দিয়ে নিজের প্রযোজনা সংস্থার প্রথম ছবি নির্মাণ করিয়েছেন। আমার শর্ত ছিল, ছবিতে নায়কের চরিত্রে কোনো তারকা-মহা তারকাকে নেওয়া যাবে না। কারণ, তাতে করে চরিত্রের বিশ্বস্ততা নষ্ট হবে। প্রীতি আমার সে কথাতেও রাজি হলেন। ছবির নায়ক হিসেবে আমরা পেলাম রেহান মালিককে। কথা ছিল ইংলিশ ভিংলিশ, হিরোইন-এর সঙ্গে ২১ সেপ্টেম্বর মুক্তি পাবে ইশক ইন প্যারিস। সব প্রস্তুতি যখন শেষের পথে, তখন হঠাৎ করেই আমি অসুস্থ হয়ে পড়লাম। ডাক্তার জানালেন, মরণব্যাধি ক্যানসার আমার শরীরে বাসা বেঁধেছে। আকাশ ভেঙে পড়ে আমার মাথায়। বিশ্বাস করুন, এরপর প্রীতি নিজে ঘোষণা করেন, আমি সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত তিনি তাঁর ছবি মুক্তি দেবেন না। এরপর আমাকে লন্ডনে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো, ব্যয়ভার বহন করা, নিয়মিত খোঁজখবর নেওয়া—প্রীতি সব দায়িত্ব একা নিজের কাঁধে তুলে নেন। নিজের প্রযোজিত প্রথম ছবির মায়া ত্যাগ করে একজন বোন হিসেবে আমার পাশে দাঁড়ান। আর তাঁকে নিয়ে যখন চারদিকে গুজব-গুঞ্জন হয়, তখন সত্যিই ঘেন্না হয় হলুদ সাংবাদিকতার ওপর।’
প্রীতি এই ঘটনা প্রসঙ্গে অবশ্য একটি বাক্যও ব্যয় করতে নারাজ। মৃদু হেসে তিনি জানান, ‘মে মাসে মুক্তি পাবে ইশক ইন প্যারিস। বড় পর্দা হোক কিংবা পরবর্তীকালে ছোট পর্দা, আশা করি আমার ভক্তরা আমার ছবিটি দেখবে।’ প্রীতির এই হাসিই বোধহয় তাঁর নীরব প্রতিবাদ। প্রীতিকে সর্বশেষ মূলধারার বাণিজ্যিক ছবিতে দেখা গিয়েছিল আজ থেকে ছয় বছর আগে, ঝুম বারাবার ঝুম ছবিতে। তারও এক বছর আগে মুক্তি পায় প্রীতির সর্বশেষ সফল ছবি কাভি আলবিদা না কেহনা। ঝুম বারাবার ঝুম-এর পর যদিও দ্য লাস্ট লিয়ার, হ্যাভেন অন আর্থ—দুটি বিকল্প ধারার ছবি এবং হিরোজ ছবিতে ছোট্ট একটি চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যায় প্রীতিকে, তবে একসময়ের জনপ্রিয় বলিউড অভিনেত্রীকে দর্শক আর নিয়মিত পায়নি। তবে এবার প্রীতি আশাবাদী, ব্যবসার পাশাপাশি অভিনয়ে মন দেবেন তিনি। এ বছর আরেকটি ছবি ভাইয়াজি সুপারহিট (সানি দেউল)-এ দেখা যাবে তাঁকে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭:২১:১১ ৭৮২ বার পঠিত