“আছে শুধু ভালোবাসা দিয়ে গেলাম ” : হাসিনা

Home Page » জাতীয় » “আছে শুধু ভালোবাসা দিয়ে গেলাম ” : হাসিনা
মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৩



sheikh-hasina-intro-1.jpgবঙ্গ-নিউজ ডট কম: প্রিয় কবি রবীন্দ্রনাথকে উদ্ধৃত করে কক্সবাজারের উখিয়াবাসীকে শুভেচ্ছা জানালেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার বিকেলে সেখানে অনুষ্ঠিত এক বিশাল জনসমাবেশে বক্তৃতার ইতি টানতে গিয়ে তিনি বলেন, ”রিক্ত আমি নিঃস্ব আমি, দেয়ার কিছু নেই; আছে শুধু ভালোবাসা দিয়ে গেলাম তাই।”জনসভার আগে রামুতে ১০০ ফুট দীর্ঘ একটি বুদ্ধমূর্তি এবং নবনির্মিত ‘ভাবনা কেন্দ্র’ ভবন উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।

জনসভায় প্রধানমন্ত্রীকে বরণ করেন আওয়ামীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বীর বাহাদুর ও ভাবনা কেন্দ্রের অধ্যক্ষ করুণা শ্রীভিক্ষু।

ভোট প্রার্থনা
বৃষ্টিবিঘ্নিত জনসভায় বিপুল জনতাকে উদ্দেশ্য করে শেখ হাসিনা বলেছেন, “গত নির্বাচনে আপনারা নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আমাদের নির্বাচিত করেছেন। আপনাদের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। আপনাদের কাছে দায়বদ্ধ বলেই আমরা ক্ষমতায় আসার পর দেশজুড়ে উন্নয়ন করেছি।”

‘আওয়ামী লীগ দেশের জন্য ভাবে’ উল্লেখ করেন তিনি। রামুতে আক্রমণের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “গত ২৯ সেপ্টেম্বর কীভাবে সাম্প্রদায়িক হামলা চালানো হয়েছে আপনারা দেখেছেন। কিন্তু আমার আওয়ামী লীগের কর্মী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের সুরক্ষা করেছে। এ জন্য তাদের ধন্যবাদ জানাই।”

বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ 
বক্তৃতা দেওয়ার সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মত্যাগ স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “আমার বাবা সারাজীবন দেশের জন্য নিবেদিত প্রাণ ছিলেন। সারাটি জীবন তিনি জেলে কাটিয়েছেন। যে বয়সে ছেলেমেয়েরা বাবার হাত ধরে স্কুলে যেত, সেই বয়সে আমরা বাবাকে জেল হাজতে দেখতে যেতাম। তার (শেখ মুজিবুর রহমান) এমন আত্মত্যাগের জন্যই আমরা একটি স্বাধীন দেশ পেয়েছি।”

উন্নয়নের বিবরণ
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “কিছুক্ষণ আগে আমি অনেকগুলো প্রকল্পের উদ্বোধন করেছি।” এতো কাজ অতীতে কোনো সরকার করেনি বলেও দাবি করেন তিনি।

“আমাদের সময় দেশ খাদ্যে স্বয়ং সম্পূর্ণতা অর্জন করে। আর বিএনপি আসলে সব বন্ধ হয়ে যায়। তারা আসে ব্যবসা করতে, উন্নয়ন করতে আসে না তারা। খাদ্য আমদানি করলে তাদেরই লাভ। তারা দুর্নীতি করতে পারে।”

আওয়ামী লীগের ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের অঙ্গীকার পুনঃ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, “প্রত্যেক ইউনিয়নে তথ্য ও সেবা কেন্দ্র করে দিয়েছি। এসব কেন্দ্রে মানুষ তাদের প্রবাসী আত্মীয়-স্বজনদের সাথে যোগাযোগ করতে পারে। এখন বাংলাদেশেই ল্যাপটপ তৈরি হচ্ছে।”

সমুদ্র বিজয়

সমুদ্র জয়ের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা ক্ষমতায় এসে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক মামলা করেছি এবং মামলায় জিতে সমুদ্র বিজয় করে এনেছি। এই বিশাল সমুদ্র এখন জনগণের কাজে লাগানো হচ্ছে। বাংলাদেশে সমুদ্র গবেষণা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে।”

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি 

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে হাসিনা বলেন, “আমরা ক্ষমতায় এসে দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছি। জঙ্গিবাদ কখনোই প্রকৃত ইসলাম হতে পারে না। আওয়ামী লীগের আমলেই কঠোর হাতে জঙ্গিবাদ দমন হয়।”

শিক্ষা খাত

আওয়ামী লীগের সময়ে লেখাপড়াকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বিনা পয়সায় বই বিতরণের ব্যবস্থা করেছি। এসব বই জানুয়ারির এক তারিখেই শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করেছি। আমাদের সরকার মেয়েদের জন্য শিক্ষা উপবৃত্তির ব্যবস্থা করেছে। আমরা দরিদ্র পরিবারের মেয়েদের শিক্ষার জন্য ১ লক্ষ ৩৩ হাজার টাকার শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করেছি। আমি চাই আমাদের ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া শিখবে, মানুষের মতো মানুষ হবে।”

হেফাজত প্রসঙ্গ

শেখ হাসিনা অভিযোগ করে বলেন, “মে মাসে আমি বিরোধীদলীয় নেত্রীকে আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছিলাম। উল্টো তিনি আমাকে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিলেন। তিনি আমাকে হুঁশিয়ার করলেন যে, আমি নাকি পালাবার পথ পাবো না। এরপর ৫ মে হেফাজতের হুজুরেরা শাপলা চত্বরে আসলো। তারা মিছিল করতে চাইলো, আমি অনুমতি দিলাম। কারণ প্রত্যেকেরই ব্যক্তিগত অধিকার আছে। কিন্তু তারা খালেদার ইন্ধনে আন্দোলনের নামে বায়তুল মোকারমে আগুন দিলো। জামায়াত-শিবির জায়নামাজ পোড়ালো, কোরান শরিফ পোড়ালো, মসজিদে আগুন দিলো।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমার প্রশ্ন, একজন মুসলমান কীভাবে কোরান শরীফ পোড়ায়? কোরান পুড়িয়ে কি ইসলাম রক্ষা করা যায়? ইসলামের ইতিহাসে এত কোরান পোড়ানো হয় নাই ” উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী পবিত্র কোরআন শরীফের একটি উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, “প্রত্যেক মানুষ নিজ নিজ ধর্ম পালন করবে।”

তিনি আরো বলেন, “এরপর এলেন হেফাজতের তেতুল হুজুর। তিনি বললেন, নারী দেখলে নাকি পুরুষের লালা ঝরে।”

খালেদা অনেক ‘সাজুগুজু’ করেন

‘খালেদা জিয়া অনেক সাজুগুজু করেন’ উল্লেখ করে হাসিনা বলেন, “হুজুরের নারী দেখলে লালা ঝরতেই পারে। কারণ তিনি তো দেখেন খালেদা জিয়াকে।”

৪ লাখ টাকার মঞ্চ
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার বিকেলে উখিয়ার সম্প্রীতি সমাবেশে উপস্থিত হয়ে ভাষণ দেন। এজন্যে উখিয়ার উচ্চ বিদ্যালয় খেলার মাঠে উপজেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে তৈরি করে নৌকা সদৃশ দৃষ্টিনন্দন একটি মঞ্চ।

৫ ফুট উচ্চতা, ৫০ ফুট দৈর্ঘ্য, ৩০ প্রস্থ এ নান্দনিক ও বর্ণিল মঞ্চ তৈরি করার জন্য ১৫ জন মিস্ত্রি ৪দিন দিনরাত পরিশ্রম করেছেন। সোমবার দুপুর ২ সেপ্টেম্বর দিকে মঞ্চে কাজ সম্পন্ন হয়।

উখিয়া উপজেলার মুক্তা ডেকোরেটার এন্ড ক্যাবল নেটওয়ার্কের মালিক জসিম উদ্দিন জানান, সমাবেশের আগত জনসাধারণের দৃষ্টি এড়াতে মঞ্চের দু’পাশে নৌকার অবয়ব তৈরি করা হয়েছে। মঞ্চ তৈরি করতে প্রায় ৪ লাখ টাকা খরচ হয়েছে বলে তিনি জানান।

শতাধিক তোরণ 

কক্সবাজার টেকনাফ আরকান মহাসড়কের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে প্রধানমন্ত্রীর অবতরন স্থল হেলিপ্যাড পর্যন্ত শতাধিক তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে।

কক্সবাজারে তৃতীয় সফর
ক্ষমতাসীন হওয়ার পর তৃতীয়বারের মতো মঙ্গলবার কক্সবাজার সফর করলেন প্রধানমন্ত্রী। এর ১১ মাস আগে তিনি রামুতে এসেছিলেন। এর আগে ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল সরকার গঠনের পর প্রথম তিনি কক্সবাজার আসেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯:১৫:৫৫   ৫১৬ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

জাতীয়’র আরও খবর


সালাম, আমান, রিজভী, খোকন, শিমুল ও এ্যানিসহ গ্রেফতার শতাধিক
ভারতকে হারিয়ে টাইগারদের সিরিজ জয় নিশ্চিত
 নয়াপল্টনে বিএনপি নেতাকর্মীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ ,নিহত ১
বিয়েবর্হিভূত যৌন সম্পর্ক নিষিদ্ধ: প্রতিবাদে বিক্ষােভ ইন্দোনেশিয়ায়
আড়াইহাজারে অর্থনৈতিক অঞ্চল উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
কোয়ার্টারে ব্রাজিল ক্রোয়েশিয়া মুখোমুখি
ব্যাংকে টাকা নিয়ে গুজবে কান না দেয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
মাধ্যমিক স্কুলে ভর্তির লটারি ১২ ও ১৩ ডিসেম্বর
২০ ডিসেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে করোনা টিকার চতুর্থ ডোজ
সউদী আরব তৈরি করবে বিশ্বের বৃহত্তম বিমানবন্দর

আর্কাইভ