বঙ্গ-নিউজ ডটকম:বাংলাদেশের ফুটবল ঐতিহ্য যেমন দিন দিন দখল করে নিচ্ছে নেপাল। তেমনি বাঙ্গালিদের পায়ের খেলাও যেন চলেগেছে নেপালীদের পায়ে। সাফের উদ্বোধনী ম্যাচ দেখে অত্যন্ত তাই মনে হয়েছে। মার্চে যে নেপালকে ২-০ গোলে তাদের হারিয়েছে বাংলাদেশ। পরিসংখ্যানেও স্বাগতিকদের চেয়ে অনেক এগিয়ে ক্রুইফের দল। সেই তারাই যেন কাল দশরথ স্টেডিয়ামে ফুটবল ভুলে গেলেন। বাংলাদেশের ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে দামী কোচিং স্টাফরাই যেন ভুলিয়ে দিলেনে ফুটবলারদের নিজস্ব কৌশল। আর এতেই নেপালের সাদামাটা আক্রমনে প্রথম আর্ধেই হজম করলেন দুইগোল। গোলদুটিতে যতনা কৃতিত্ব ছিলো নেপালী স্টাইকারদের, তারচেয়ে অনেক বেশী দায় ছিলো বাংলাদেশ দুই ডিফেন্ডার লিংকন ও আরিফের। দ্বিতীয়ার্ধে গোলপরিশোধতো দুরের কথা উল্টো আরও তিন চারটা গোল খেলে পারবো বাংলাদেশ। যা থেকে দলকে রক্ষা করেন গোলরক্ষক মামুন খান। দেশকে লজ্জার হাত থেকে বাচালেও হার থেকে বাচাতে পারেননি এই গোলরক্ষক। এতেই পরিস্কার ২-০ গোলের হার নিয়ে সাফের মিশণ শুরু করলো বাংলাদেশ। ফিকে হয়ে হয়ে যায় দশম সাফের সেমিফাইনালের স্বপ্ন। এখন বাংলাদেশকে সেমিফাইনাল খেলতে হলে মঙ্গলবার হারাতে হবে ভারতকে। জয় পেতে হবে পাকিস্তানের ম্যাচেও। ইনজুরির কারনে একাদশে ছিলেন না অধিনায়ক মামুনুল ইসলাম। একই সমস্যায় মাঝমাঠে সোহেল রানার সার্ভিও পায়নি বাংলাদেশ। একাদশে ছিলেন না মার্চে গোলকরা স্টাইকার শাখাওয়াত হোসেন রনি। রনির বদলী হিসেবে ওয়াহেদকে খেলালেও, সুবিধা করতে পারেননি এই স্টাইকর। মামুনুল-সোহেলর অনুপস্থিতিতে মাঝমাঠের দায়িত্ব পরে অভিষিক্ত জামাল ভূইয়া ও আতিকুর রহমান মিশুর ঘারে। কিন্তু পুরো দুই মাসের অনুশীলনে মিশুকে খুব কমসময়ে মাঝমাঠে খেলিয়েছেন ক্রুইফ। যার ফলে মাঝমাঠের নিয়ন্ত্রনে নিতে শুরু থেকেই হিমশিম খেতে থাকেন জামাল ভূইয়া ও মিশু। আর এতে ম্যাচের নিয়ন্ত্রন চয়ে যায় নেপালের হাতে। ডানদিক দিয়ে ভারত খাওয়াজ একের পর এক আক্রমনে দিশেহারা হয়ে যায় বাংলাদেশের ডিফেন্ডাররা। ম্যাচের ২০ মিনিটে গোলও হজম করে বাংলাদেশ। রহিত চন্দ্রের ক্রসে ছোট বক্সে বল পেয়ে তা জালে জড়ান আনমার্ক অনীল গুরাং। সামনে দাড়িয়ে থেকে উপভোগ করেন ডিফেন্ডার আশরাফ মাহামুদ হোসেন লিংকন। মাঝে জাহিদ দু’একটি বল ডানদিক দিয়ে যোগান দিলেও তা যতেষ্ট ছিলো না। তকলিস, এমিলরাও ছিলেন একেবাওে নিস্প্রভ। যার ফলে প্রথম গোলের ১৫ মিনিট পর ব্যবধান দ্বিগুন করেন ভারত খাওয়াস। সন্দ্বীপ রায়ের বাড়িয়ে দেয় বলে সৃষ্ট জটলায় দাঁড়ানো ভারত নিশানা ভেদ করতে ভুল করেননি (২-০)। দ্বিতীয়ার্ধেও শুরুতেই জাহিদেও বদলী হিসেবে মোবারক, মিশুর যায়গায় রনি ও লিংকনের বদলী হিসেবে রায়হান মাঠে নামলেও খেলার চিত্র পাল্টাতে পারেননি। একটি বারের জন্যও ভাঙ্গতে পারেননি নেপালের রক্ষণভাগ। উল্টো গোলরক্ষক মামুন খানের কল্যানে লজ্জার হাত থেকে বেচে যায় বাংলাদেশ। অনীল গুরুং ও ভারত খাওয়াজের একাধিক প্রচেষ্ঠা রুখে দিয়ে। আগামী পরশু সাফ মিশনে ভারতের সঙ্গে খেলবে ক্রুইফের শিষ্যরা। ওই ম্যাচে জিততে পারলে আশা বেচে থাকবে সেমিফাইনালের। কিন্তু নেপালের সঙ্গে যা খেললো তাতে কতটুকু আশা করা যায় ভারত ম্যাচে, তা সময়ই বলে দিবে। বাংলাদেশ দল : মামুন খান (গোলরক্ষক) আরিফুর রহমান আরিফ, নাসির হোসেন চৌধুরি (অধিনায়ক), ওয়ালি ফয়সাল, আশরাফ মাহামুদ লিংকন (রায়হান), আতিকুর রহমান মিশু (রনি), জামাল ভূইয়া, তকলিস আহাম্মেদ, জাহিদ হোসেন (মোবারক), জাহিদ হাসান এমিলি ও ওয়াহেদ আহাম্মেদ। নেপাল : কিরন কুমার (গোলকিপার), সাগর থাপা, সন্দীপ রায়, রবিন সাস্ত্র, বিরাজ মহরাজ, রহিত চন্দ্র, ভোলা নাথ, জগজিৎ সাস্ত্র, রাজু তামাং, ভারত খাওয়াস ও অনিল গুরাং।
বাংলাদেশ সময়: ২:২৬:৫৮ ৩৮৭ বার পঠিত