কোন কোন দেশের নারি সবচেয়ে সুখী?

Home Page » এক্সক্লুসিভ » কোন কোন দেশের নারি সবচেয়ে সুখী?
রবিবার, ৩১ মার্চ ২০১৩



8may.jpeg  তানিয়া্ সুলতানা :প্রায় শত বছর ধরে মে মাসের ৮ তারিখ বিশ্ব নারী দিবস হিসেবে উদযাপিত হয়ে আসছে। এক কথা ঠিক যে, নারীর স্থান ও ক্ষমতা দিন দিন উন্নত হচ্ছে। তবে কেবল একটি বিশেষ দিবসে গৃহীত সকল কার্যক্রমদ্বারা নারী স্বার্থ রক্ষা ও বাস্তবায়ন করা তা আদৌ সম্ভব নয়, প্রয়োজন নানান বাস্তবমুখী উদ্যোগ গ্রহণ করা।

সম্প্রতি বৃটেনের এক সংবাদ মাধ্যম যে সকল দেশ নারীর ক্ষমতা উন্নয়ে বিশেষ ভূমিকা পালন করছে সে সকল দেশের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে। বিভিন্ন দেশ নারীর ক্ষমতা উন্নয়নের ক্ষেত্রে যে সব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে আসুন আজকের আসরে আমরা সে বিষয় নিয়ে তথ্যবহুল কিছু সময় আপনাদের সাথে কাটাতে পারি।

আপনারা জেনে অবাক হবেন যে, নারীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সবচে ভালো দেশ কাতার। কাতারের নারী বিশ্বের অন্যান্য স্থানের নারীর চেয়ে সহজে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারেন। কাতারে উচ্চ বিদ্যালয়ে স্নাতকধারী পুরষ ও মহিলার হার ১:৬ দাঁড়িয়েছে। এ ক্ষেত্রে চাদের অবস্থান সবচেয়ে খারাপ, দেশটির মাত্র হার ৩: ১ শতাংশ। কিন্তু কাতারের ক্ষেত্রে নারীদের এই অগ্রগতির পেছনে বিশেষ কিছু কারণ রয়েছে। আপনি জেনে বিস্মিত হবেন যে কাতারের পুরুষ আর মহিলার আনুপাতিক হার ২ : ১ অর্থাত্ প্রায় ৯০ শতাংশ বেশি। বর্তমানে কাতারের কর্ম ও রাজনীতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীর অবস্থানের বেশ উন্নতি হয়েছে। অনেক নারী বর্তমানে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সরকারী অফিসে কাজের সুযোগ পাচ্ছে। অন্যদিকে কাতারের পুরুষদের একটি প্রবণতা হচ্ছে যে, অনেকেই বিশ্ববিদ্যায়ে ভর্তি হতে চায় না। সে কারণে উচ্চ শিক্ষায় ভর্তি হওয়ার সুযোগ নারীরাই ভোগ করে থাকে বেশি। জানা গেছে, আগামী ৫ বছরের মধ্যে কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ে নারীদের ভর্তি হওয়ার হার ৫৬ শতাংশ উন্নীত হবে এবং এর বিপরীতে পুরুষের হার মাত্র ৩০ শতাংশে উন্নীত হবে।

বিশ্বের সবচে সুখী এবং সুখকর অবস্থায় রয়েছে আইসল্যান্ডের নারীরা। আইসল্যান্ড রাজনীতি, শিক্ষা, কর্মসংস্থা এবং স্বাস্থ্য প্রায় প্রতিটি সূচকেই পৃথিবীর অনেক দেশের তুলনায় এগিয়ে আছে এবং এ কারণে সেখানে নারী সুখী জীবন কাটতে পারে। দেশটিতে পুরুষ নারীর সমতা বা Equality of the sexes’র ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়। আইসল্যান্ডে রয়েছে শক্তিশালী নারী আন্দোলন এবং সেখানে রাজনীতি করা নারীর সংখ্যাও অনেক বেশি। পার্লামেণ্টের প্রায় অর্ধেক সদস্য নারী। বিশ্ব অর্থনীতি ফোরামের গত বছরের প্রকাশিত জেন্ডার বৈষম্য সূচক অনুযায়ী আইসল্যান্ড এ ক্ষেত্রে আগের বছরের চতুর্থ স্থান থেকে প্রথম স্থানে উন্নীত হয়েছে। এক্ষেত্রে ফিনল্যান্ড, নরওয়ে, সুইডেন আইসল্যান্ডের পিছনে পড়ে যায়।

আইসল্যান্ডের রাজনীতি এবং জীবন-যাত্রার মান উভয়ই শক্তিশালী। সে দেশের বেশ কয়েকজন মন্ত্রী বলেন, অতিরিক্ত সময়ে সে দেশের নারীরা রাজনীতি নিয়ে আলাপ করেন না। সে সময় তারা সাধারণ নারীর মত সন্তান ও স্বামীর সঙ্গে ছুটি কাটান এবং সুন্দর জীবন উপভোগ করেন।

এ দিকে আইসল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী এফ গুল ডেডো টিল হচ্ছেন দেশের ইতিহাসে প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী এবং বিশ্বে প্রথম নেত্রী, যিনি নিজেকে সমকামী হিসেবে ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, আইসল্যান্ডে নারীরা সবচেয়ে বেশি সমান অধিকার ভোগকারী নাগরিক, এরা পুরুষের পণ্য নয়। জেন্ডার সমতার ক্ষেত্রে আইসল্যান্ড অন্য অনেক দেশের তুলনায় এগিয়েছে।

লুক্সেমবার্গে নারীর বাষিক গড় আয় সবচে বেশি। নারীদের এ আয় দেশটির পুরষের তুলনায় সমান অর্থাত্ প্রায় ৪০ হাজার মার্কিন ডলার। সে তুলনায় সৌদি আরবের পুরুষের তুলনায় নারীর আয় সবনিম্নে অবস্থান করছে। এ দেশে একজন পুরুষের ৩৬ হাজার ৭’শ ২৭ ডলার আয়ের বিপরীতে নারী আয় কেবল ৭ হাজার ১’শ ৫৭ ডলার।

তবে মা হওয়ার জন্য সবচেয়ে ভাল দেশ নরওয়ে। এ দেশে গর্ভবতী নারি ও সন্তান জন্মকালীন মৃত্যুর হার সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে। এর হার হলো বিস্ময়কর ভাবে ৭৬০০ ভাগের এক ভাগ। এদেশে প্রতিটি গর্ভবতী নারীর জন্য রয়েছে বিশেষ অভিজ্ঞ এবং দক্ষতা সম্পন্ন নার্সের সার্বক্ষণিক সেব। আর এ ক্ষেত্রে আফগানিস্তানের পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ। বলা হয়ে থাকে যে, সে দেশে নারীদের সন্তান-জন্মকালীন মৃত্যুর হার যুদ্ধের ময়দানে গুলিবর্ষণে মুত্যুর তুলনায় ২০০গুণ বেশি।

অন্যদিকে নরওয়ের নারীরা মাতৃত্বকালীন দীর্ঘ ছুটি উপভোগ করে থাকে। তাদের জন্য সরকারি ছুটি ৯০ সপ্তাহ প্রায় দু’বছেরর কাছাকাছি এবং এরমধ্যে প্রসবকালীন ছুটি হলো ৩৮ সপ্তাহ। এছাড়া আগামী ১ জুলাই থেকে সন্তানের জন্ম হওয়া উপলক্ষে বাবাকেও ছুটির সময় ১২ সপ্তাহ থেকে ১৪ সপ্তাহ বাড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে নওয়ে সরকার। এর ফলে নতুন বাবা মা মোট ৪৯ সপ্তাহের প্রসবকালীন ছুটি কাটতে পারেন।

থাইল্যান্ডে বহুজাতিক কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানে নারীর সংখ্যা সারা বিশ্বের প্রথম স্থানে রয়েছে। এ হার হলো ৪৫ শতাংশ। তবে এক্ষেত্রে জাপান রয়েছে সর্বনিম্ন স্থানে-মাত্র ৮শতাংশ নারী এই ধরণের কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানে কাজের সুযোগ পায়।

দু’হাজার ১১ সালে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসগরীয় অঞ্চলের ১৩টি দেশের নারীদের কর্মসংস্থানে যোগদান, উচ্চ শিক্ষায় অংশগ্রহণ এবং কর্পোরেট কার্যনির্বাহী হওয়ার হার এবং গড় আয় নিয়ে গবেষণা হয়েছিল। গবেষণার মানদন্ড হিসেবে ১০০ পয়েন্ট নির্ধারণ করা হয়। গবেষণার ফলাফল থেকে জানা গেছে, থাইল্যান্ড ৯২.৩ পয়েন্ট পেয়ে প্রথম স্থানে রয়েছে। থাইল্যান্ডে নারী সিইও সংখ্যা সারা বিশ্বে সবচেয়ে বেশি।

বাংলাদেশ সময়: ২০:২৯:১২   ১২৬৪ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

এক্সক্লুসিভ’র আরও খবর


এস এস সি পাশের হার কমছে বেড়েছে জিপিএ-৫
শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রবেশপত্রে সানি লিওনের ছবি!
শক্তিশালী প্রসেসরে নতুন স্মার্টফোন বাজারে আনছে মটোরোলা
ভারত ৩৬টি স্যাটেলাইট স্থাপন করল একসঙ্গে !!
স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বসবাস, পরে কথিত স্বামীকে কুপিয়ে হত্যা
সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের স্মরণে পদযাত্রা
রাশিয়ার নৌবাহিনীতে যুক্ত হয়েছে বিশ্বের দীর্ঘতম সাবমেরিন!
টিকিট দুর্নীতির প্রতিবাদে রনি, সহজ ডটকমকে ২ লাখ টাকা জরিমানা
ট্রাকচাপায় মেয়েসহ তারা তিনজন নিহত; রাস্তায় গর্ভস্থ শিশু ভুমিষ্ঠ
রোহিঙ্গা যুবক নুর বারেক আটক ,২০ লাখ টাকা উদ্ধার

আর্কাইভ