বঙ্গ-নিউজ ডটকম: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক জনসভায় বলেছেন, “আপনারা হাত তুলে ওয়াদা করুন, আগামী নির্বাচনে নৌকায় ভোট দেবেন।”হাসিনা বলেন, “বিএনপি জঙ্গীবাদের রাজনীতি করে, খুনের রাজনীতি করে। উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখতে, জঙ্গীবাদ মুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হলে আবার আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় নিয়ে আসতে হবে।”
বৃহস্পতিবার বিকেলে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির পাইন্দং সিঅ্যান্ডবি মাঠে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় তিনি একথা বলেন।
আওয়ামী লীগ মানুষের জন্য কাজ করে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “দেশের উন্নয়নে আওয়ামী লীগ কাজ করে। আর তারা (বিএনপি, জামায়াত, হেফাজত) ইসলামের নাম ভাঙিয়ে চলে আর মানুষ খুন করে।”
শেখ হাসিনা বলেন,“ইসলাম প্রচারে আওয়ামী লীগই কাজ করেছে,অথচ জামায়াত ও হেফাজত আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে প্রচার চালাচ্ছে।”
তিনি বলেন,“সব ধর্মের মানুষ সমান অধিকার নিয়ে বাস করবে সেই নীতিতে বিশ্বাস করে। ক্ষমতার মালিক আল্লাহ। কে ক্ষমতায় যাবে না যাবে, তা আল্লাহ নির্ধারণ করবেন।”
যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, “যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বাংলার মাটিতে হবেই। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।”
আগামী নির্বাচনকালীন সরকার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমি বিরোধীদলীয় নেত্রীকে বলেছি আলোচনায় আসুন। তিনি আমাকে আল্টিমেটাম দিলেন। আমি না কি পালনোর পথ পাবো না।”
শেখ হাসিনা বলেন, “৫ মে হেফাজতে ইসলাম নামের একটি অরাজনৈতিক সংগঠন মতিঝিলে নাশকতা চালিয়েছে। তারা কোরআন শরীফ পুড়িয়েছে। যারা কোরআন শরীফ পোড়ায় তারা ইসলামের সেবা করতে পারে না।”
বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামে নৌবাহিনীর দুটি সমুদ্র টহল বিমান, তিনটি যুদ্ধ জাহাজ এবং দেশের সবচেয়ে বড় যুদ্ধজাহাজ বিএনএস বঙ্গবন্ধুকে ন্যাশনাল স্টান্ডার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “দেশের সমুদ্রসীমার সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য অদূর ভবিষ্যতে নৌবাহিনীতে সাবমেরিন যুক্ত করা হবে।”
জাতীয় অগ্রগতির সার্থে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করে সমুদ্র সম্পদ পাহারা দেয়ার জন্য নৌবাহিনীর সদস্যদের প্রতি আহবান জানান প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা এসময় ভারতের সাথে সমুদ্রসীমা বিরোধের মামলায়ও জয়লাভ করার আশা ব্যক্ত করেন।
চট্টগ্রামে নৌবাহিনীর তিনটি যুদ্ধজাহাজ ও নৌ-বাহিনীর দুটি টহল বিমান উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দরে পৌঁছান। এরপর তিনি জহুরুল হক বিমানঘাটিতে যান। সেখানে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগতম জানান নৌবাহিনীর প্রধান এম ফরিদ হাবীব, বিমান বাহিনীর প্রধান মার্শাল মোহাম্মদ ইনামুল বারী এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ইকবাল করিম ভূঁইয়া।
এসময় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর বহরে জার্মানিতে তৈরী প্রথম সমুদ্র টহল বিমান ‘ডর্নিয়ার’ আনুষ্ঠানিকভাবে সংযুক্ত করেন তিনি।
এরপর বিএনএফ ঈশা খাঁ ঘাটিতে যান প্রধানমন্ত্রী।
নৌঘাটি ঈশা খাঁতে চীনের তৈরী যুদ্ধ জাহাজ দূর্জয় ও নির্মূল এবং দেশে তৈরী সুরমার কমিশনিং করেন প্রধানমন্ত্রী।
এরপর পবিত্র কোরআনের আয়াত ও নৌবাহিনীর মনোগ্রাম সম্মলিত জাতীয় পতাকা প্রদানের মাধ্যমে বিএনএস বঙ্গবন্ধুকে ন্যাশনাল স্টান্ডার্ড সম্মাননা জানান তিনি।
এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতা সত্বেও জাতীয় অগ্রগতির জন্য সমুদ্র এলাকার নিরাপত্তা বিধানে সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করবে।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টায় মিয়ানমারের সাথে সমুদ্র বিরোধে বিজয় অর্জিত হয়েছে, ভারতের সাথেও একইভাবে আইনী লড়াইয়ে বাংলাদেশ জয়লাভ করবে।”
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, “১৯৯৬ সালে বর্তমান সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর নৌবাহিনীতে এভিয়েশন ওয়িনং সংযোজন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়। পরবর্তীতে ২০০১ সালে নোবাহিনী হেলিকপ্টার উড্ডয় সক্ষম অত্যাধুনিক শিপগ্রেট বিএনএফ-এ সংযোজিত হওয়ার মাধ্যমে নোবাহিনীতে এভিয়েশন ওয়িং সংযোজন প্রক্রিয়া শুরু হয়। এরই ধারাবাহিকতায় নৌবাহিতে ইতালি থেকে দু’টি হেলিকপ্টার আর জার্মানি থেকে আনা ডর্নিয়াল মেরেটোয়াল প্রেট্রোল এয়ার কাফ্ট সংযোজন করা হয়েছে।”
“এটি বর্তমান সরকারে ত্রিমাত্রিক ঐকান্তিক প্রয়াসের মাইল ফলক,” যোগ করেন তিনি।
এরপর তিনি বিএনএস বঙ্গবন্ধু ঘুরে দেখেন । তিনবাহিনীর প্রধানসহ উর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
বিকেলে ফটিকছড়িতে আয়োজিত এক জনসভায় ভাষণ দেওয়ার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর।
বাংলাদেশ সময়: ১৯:১৩:২৭ ৮২৭ বার পঠিত