বঙ্গনিউজঃ পূর্ব ঘটনার জের ধরে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ও কাজী নজরুল ইসলাম হলের ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় হলের প্রায় ১৫ জন আহত হয়েছেন। শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন- শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাদাৎ মো. সায়েম, বঙ্গবন্ধু হলের ছাত্রলীগ কর্মী ইকবাল, রাকিব, অনুপ দাশ, সোহাগ, ফাহিম ও কাজী নজরুল ইসলাম হলের সাকিব হাসান দীপ, আশরাফুল রায়হান, তানভীর হোসেন সাকিব, আশিকুর রহমান, রাকিব জাহিদ, আরিফুর রহমান, ফয়সাল, ওয়াদুদ, এমরান, আবদুল্লাহ আল মাসুম ও মিজানুর রহমানসহ বেশ কয়েকজন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার দুপুরে জুমার নামাজের পর তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দু’হলের নেতাকর্মীদের মাঝে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। ওইদিন সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধু হলের ছাত্রলীগ কর্মী আবরারকে বিনা উস্কানিতে মারধর করেন বঙ্গবন্ধু হলের আকরাম ও সালাউদ্দিন সোহাগ নামে কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মী। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাত সাড়ে ১২টার দিকে দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়ায় উভয় হলের ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। এ সময় তাদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। উভয় পক্ষই একে অপরকে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। এসময় বিভিন্ন নেতাকর্মীর হাতে লাঠি, রডসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র দেখা গেছে। ঘণ্টাব্যাপী চলা সংঘর্ষ প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা নিয়ন্ত্রণে আনেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কাজী নজরুল ইসলাম হল ছাত্রলীগের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) নাজমুল হাসান পলাশ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হলের তিন-চারশ পোলাপান আমাদের হলে এসে হামলা চালিয়েছে। আমি হলের সবাইকে ভেতরে রাখার চেষ্টা করেছি। ওরা যেভাবে হামলা চালিয়েছে, কয়েকজন নিহত হয়ে যেত।’
বঙ্গবন্ধু হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাদাৎ মো. সায়েম বলেন, ‘নজরুল হলের রায়হান আমাদের হলের একজনকে মারধর করে। আমি তাদেরকে থামিয়ে নজরুল হলের সামনে গেলে কয়েকজন জুনিয়র মিলে আমাকে মারধর করে। তবু আমি তাদের সভাপতিসহ অন্যান্যদের বোঝানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু তারা আমাদের দিকে ইট মারতে থাকে।’
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলাম মাজেদ বলেন, ‘কে কী করেছে, আমরা সবাই দেখেছি। এখন সবাই নিজ নিজ হলে অবস্থান করছে। আমরা পরবর্তীতে নেতাদের সাথে বসে বিষয়টি মীমাংসা করবো।’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলেন প্রাধ্যক্ষ ড. মোকাদ্দেস-উল-ইসলাম বলেন, ছাত্রদের সংঘর্ষের কথা শুনে আমি হলে আসি। এরপর প্রক্টোরিয়াল টিমকে সাথে নিয়ে শিক্ষার্থীদের হলে নিয়ে আসি এবং হলের ফটক বন্ধ করে দেই। এখন শিক্ষার্থীরা হলে অবস্থান করছে।
কাজী নজরুল ইসলাম হলের প্রাধ্যক্ষ ড. মিহির লাল ভৌমিকের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও সাড়া পাওয়া যায়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি। উভয় হলের ফটক এখন বন্ধ করে রাখা হয়েছে। সবার সঙ্গে বসে বিষয়টি মীমাংসা করা হবে।
উল্লেখ্য, শুক্রবার নামাজ পড়তে যাওয়ার সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ছাত্রলীগ কর্মী সেলিম রেজাকে পথ থেকে সরে দাঁড়াতে বলে কাজী নজরুল ইসলাম হল ছাত্রলীগ নেতা ও ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের সাংগঠনিক সম্পাদক আশরাফুল রায়হান। নামায শেষে রায়হানের কাছে বিষয়টি জানতে চায় বঙ্গবন্ধু হলের সেলিম রেজা, রিফাতসহ কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মী। এ সময় দু’হলের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয় এবং হাতাহাতি হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১২:০৮:৪৪ ২৯২ বার পঠিত # #কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় #ছাত্রলীগ #সংঘর্ষ