বঙ্গনিউজ ডেস্কঃ যুক্তরাজ্যের লন্ডন শহরের একটি অভিজাত হলে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী ও একমাত্র পূর্ণাঙ্গ আবাসিক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে প্রথম আন্তর্জাতিক উৎসব।
জাহাঙ্গীরনগর অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন ইন ইউকের (জুয়াক) উদ্যোগে গতে রোববার অনুষ্ঠিত এই উৎসবে যুক্তরাজ্য, ইউরোপ ও বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তিন শতাধিক প্রাক্তন ছাত্রছাত্রী যোগ দেন।
প্রথমে প্রাক্তনদের অভর্থনা জানান রোজিনা হাফিজ। উৎসবের শুরুতেই শতাধিক প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে জাহানারা আখতার শিমলার নেতৃত্বে ছিল এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। বেলুন উড়িয়ে উৎসবের শুভ সূচনা করেন উদযাপন পরিষদের চেয়ারম্যান ড. উয়াছিউল ইসলাম, সদস্য সচিব জুবায়ের বাবু এবং বাংলাদেশ থেকে আসা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও মাওলানা ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আলাউদ্দিন।
দুপুরের পর পর কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় লন্ডন শহরের ইম্প্রেশন হল। মোর্শেদ আকতার বাদলের উপস্থাপনায় স্মৃতিচারণা করেন প্রাক্তনরা ছাত্রছাত্রীরা। দুপুরের খাবারের পর শুরু হয় যুক্তরাজ্যে বেড়ে উঠা নতুন প্রজন্মের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
জুয়াকের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাসুদ হাসান খানের সভাপতিত্বে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন এবং জুয়াকের যৌথ আলোচনা অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন জুয়াকের সাধারণ সম্পাদক ফারুক খান।
প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন- ৪র্থ ব্যাচের অর্থনীতির প্রাক্তন ছাত্র এবং ইউনিভার্সিটি অব কেন্টের প্রফেসর ড. মোহাম্মদ হাসান শিবলী। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ থেকে আসা জাবির সিনেট সদস্য ও কেন্দ্রীয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের প্রথম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শেখ মনোয়ার হোসেন, নরওয়ে থেকে সাদিক হাসান, যুক্তরাষ্ট্র থেকে মোজাম্মেল হক দুলাল, অস্ট্রেলিয়া থেকে খালেদা কায়সার মিনি, জার্মানি থেকে আনিসুল হক এবং যুক্তরাজ্য থেকে গোলাম সারওয়ার।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন- নুরুল মঈন, আনিসুল হক, সামিনা আখতার কাঞ্চন, জালাল উদ্দিন, শাহিদুন নবী, মিশকাত চৌধুরী ও প্রফেসর ড. আলমগীর কবির।
ড. উয়াছিউল ইসলামের সভাপতিত্বে সুবর্ণজয়ন্তীর মূল অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন জুবায়ের বাবু। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আলাউদ্দিন। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ দূতাবাসের মিনিস্টার (পলিটিক্যাল) এএফএম জাহিদুল ইসলাম, এসএম পাটোয়ারী, রেজাউল করিম রাজু, জাকির হোসেন ও মাসুদ হাসান খান।
উৎসবের মূল আকর্ষণ ছিল মিশকাত চৌধুরীর সম্পাদনায় ক্রোড়পত্র ‘সুবর্ণ রেখা’। প্রাক্তনদের লেখায় সমৃদ্ধ এই ক্রোড়পত্র ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়। অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন লন্ডনের টাওয়ার হেমলেটস কাউন্সিলের নবনির্বাচিত এক্সিকিউটিভ মেয়র লুৎফুর রহমান এবং যুক্তরাজ্যের সংসদের নিউহ্যাম এলাকার এমপি ও সাবেক মন্ত্রী স্টেফেন টিমস।
সন্ধ্যা ৭টায় ‘এগিয়ে চলার পঞ্চাশ বছর’ সূচনা সঙ্গীত দিয়ে শুরু হয় সাংস্কৃতিক পর্ব। সাহিত্য পালের নির্দেশনায় ফারিয়ার নওমি আঁচল এবং খালেদ পাটুয়ারীর উপস্থাপনায় এই সঙ্গীতানুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ ছিলেন তারেক, যিনি অনুষ্ঠানের সূচনা সঙ্গীতের সুর ও কণ্ঠ দিয়ে ইতোমধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন। তাছাড়া অনুষ্ঠানে ওমর ফারুক, সাজ্জাদ, জুবায়ের বাবু এবং অতিথি শিল্পী লাবনী বড়ুয়া ও তন্বি গান পরিবেশন করেন।
রাত ১১টায় তারেকের গানে নেচে গেয়ে উৎসব শেষ করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে প্রথম আন্তর্জাতিক এই উৎসব। অনুষ্ঠানের সার্বিক দায়িত্বে ছিলেন খালেদ মোহাম্মদ ইবাদ উল্লাহ ইবু, সৈয়দ ইনান, জোতিষ সাহা, আফিয়া নার্গিস, জাহানারা আখতার শিমলা, সাহেদা বানু রুপা, তুষার আহমেদ, তারিকুল আহমেদ, মুকুল ও শম্পা।
যুক্তরাজ্যে জুয়াকের মতো একটি শক্তিশালী সংগঠন থাকায় এই উৎসবটি সফলভাবে সম্পন্ন করতে পারায় উদযাপন পরিষদের পক্ষ থেকে জুয়াক এবং জুয়াকের সব নেতা ও সদস্যদের আন্তরিক ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন ড. ওয়াছিউল ইসলাম ও জুবায়ের বাবু।
বাংলাদেশ সময়: ১৫:৪৯:৫১ ২৬৪ বার পঠিত #আন্তর্জাতিক উৎসব #আমরা জাবিয়ান #জাবির সুবর্ণজয়ন্তী #জাবিয়ান #জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে