বঙ্গনিউজ : শ্রীলঙ্কায় জরুরি অবস্থা ভঙ্গ করে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী রাজধানী কলম্বোতে প্রধানমন্ত্রী রানিল ভিক্রামাসিংহের অফিসে ঢুকে পড়েছে।
পার্লামেন্টের স্পিকার মি. ভিক্রামাসিংহেকে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘোষণা করার পরেই প্রতিবাদকারীরা তার দপ্তরের ভেতরে ঢুকে পড়লো।
এর আগে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়। তাদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কয়েক দফায় কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে।
বিক্ষোভকারীরা প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয় ছাড়াও রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন একটি টিভি চ্যানেলের অফিসের ভেতরেও ঢুকে পড়লে তার সম্প্রচার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
এর আগে প্রেসিডেন্ট গোটাভায়া রাজাপাকশা দেশ ছেড়ে মালদ্বীপে চলে যান।
এর পরে রানিল ভিক্রামাসিংহেকে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘোষণা করা হলে তিনি জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, শ্রীলঙ্কার সংবিধান উপেক্ষা করা যাবে না।
কলম্বো থেকে বিবিসির একজন সংবাদদাতা বলছেন, মি. ভিক্রামাসিংহের সবশেষ বিবৃতি থেকে ইংগিত পাওয়া যাচ্ছে যে সেনাবাহিনী হয়তো রাজধানীর নিরাপত্তার দায়িত্ব নিতে যাচ্ছে।
জরুরি অবস্থা ঘোষণা
শ্রীলঙ্কার চলমান নজিরবিহীন রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক সঙ্কট ও বিক্ষোভের মধ্যে সেখানে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী রানিল ভিক্রামাসিংহে।
জরুরী অবস্থা ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা আগে সামরিক বিমানে করে দেশ ছেড়ে চলে গেছেন প্রেসিডেন্ট গোটাভায়া রাজাপাকশা।
প্রেসিডেন্টের দেশ ছেড়ে যাবার খবর বের হওয়ার পর সকাল থেকেই কলোম্বোর রাস্তায় বের হয়ে আসেন হাজার হাজার বিক্ষোভকারী।
তারা প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন এবং পার্লামেন্ট ভবনের উদ্দেশ্যে যেতে থাকেন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কারফিউ ও জরুরী অবস্থা ঘোষণা করা হয়।
সেনাবাহিনীর কাঁদানে গ্যাস
এর আগে রাজধানী কলোম্বোতে কারফিউ উপেক্ষা করে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন হাজার হাজার উত্তেজিত বিক্ষোভকারী।
প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের সামনে সেনাবাহিনী অবস্থান নিয়েছে। বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে পুলিশ।
ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে কাঁদানে গ্যাসের ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে গেছে পুরো এলাকা। নিরাপদে আশ্রয় নেবার জন্য মানুষজনকে দৌড়াতে দেখা গেছে।
এ’সব ঘটনা ঘটছে যখন শ্রীলংকার বিরোধীদলগুলো একটি নতুন সরকার গঠনের লক্ষ্যে আলোচনা শুরু করেছে।
মালদ্বীপে আশ্রয়
শ্রীলঙ্কার বিমান বাহিনী নিশ্চিত করেছে যে ৭৩ বছর বয়সী প্রেসিডেন্ট তার স্ত্রী এবং দুজন নিরাপত্তা কর্মকর্তাসহ প্রতিবেশী দেশ মালদ্বীপে আশ্রয় নিয়েছেন।
স্থানীয় সময় ভোর তিনটায় তিনি মালদ্বীপের রাজধানী মালে পৌঁছান।
এ’মাসের ৯ তারিখ উত্তেজিত জনতা তার বাসভবনে প্রবেশ করার পর থেকে নিরুদ্দেশ ছিলেন গোটাভায়া রাজাপাকশা। বুধবার তার পদত্যাগ ঘোষণা করার কথা ছিল।
তার দেশ ত্যাগের মাধ্যমে রাজাপাকশা পরিবারের কয়েক দশকের শাসনের অবসান হল।
বিবিসি জানতে পেরেছে মি. রাজাপাকশা মালদ্বীপে অবস্থান করবেন না। তিনি তৃতীয় কোন দেশে চলে যাবেন বলে জানা গেছে।
তার ভাই সাবেক অর্থমন্ত্রী বাসিল রাজাপাকশা ইতিমধ্যেই শ্রীলঙ্কা ত্যাগ করেছেন এবং তিনি যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্য রয়েছেন।
জ্বালানি সংকট
কয়েক মাস ধরে দেশটিতে ভয়াবহ জ্বালানি, বিদ্যুৎ, খাদ্য ও ঔষধ সংকট চলছে।
দেশটির ইতিহাসের সবচাইতে বড় অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের জন্য সেখানকার জনগণ রাজাপাকশা পরিবার ও তাদের অধীনে পরিচালিত প্রশাসনকে দায়ী করে।
বাংলাদেশ সময়: ১১:৩০:৪১ ২৮৮ বার পঠিত #জ্বালানি সংকট #প্রেসিডেন্ট #মালদ্বীপ #রাজাপাকশা #শ্রীলঙ্কা