বঙ্গ-নিউজঃ সৌদি আরবে পবিত্র হজের পরের দিন হিসেবে এবং বিশ্বের কোথাও প্রথম চাঁদ দেখার ভিত্তিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে আজ শনিবার উদযাপন করা হচ্ছে ঈদুল আজহা। চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের সাদ্রা দরবার শরিফ, চট্টগ্রামের চন্দনাইশের জাহাঁগিরিয়া শাহসুফি মমতাজিয়া দরবার শরিফসহ কয়েকটি দরবারের অনুসারীরা দেশে একদিন আগেই মুসলমানদের দ্বিতীয় প্রধান এই ধর্মীয় উৎসব পালন করেন। এবারও এই রেওয়াজ অনুসরণ করছেন চট্টগ্রাম, চাঁদপুর, বরিশাল, পটুয়াখালী, ফরিদপুরসহ বেশ কয়েকটি জেলার ১২৩ গ্রামের মানুষ। ব্যুরো ও প্রতিনিধিদের খবরে বিস্তারিত-
চন্দনাইশ (চট্টগ্রাম) : দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাতকানিয়া, চন্দনাইশসহ এ অঞ্চলের অন্তত ৬০ গ্রামে আজ আগাম ঈদ উদযাপন করা হচ্ছে। সাতকানিয়ার মির্জাখিল দরবার ও চন্দনাইশের জাহাঁগিরিয়া শাহসুফি মমতাজিয়া দরবারের অনুসারীরা প্রায় দুইশ বছর ধরে এ রীতি পালন করে আসছেন। এর মধ্যে আছে- সাতকানিয়া উপজেলার সোনাকানিয়া, মির্জাখিল, গারাংগিয়া, গাটিয়া ডেঙ্গা, মাদার্শা, মৈশামুড়া, পুরানগড় ও সুইপুরা, চন্দনাইশের কাঞ্চননগর, হারালা, বাইনজুরি, কানাইমাদারি, সাতবাড়িয়া, বরকল, দোহাজারী ও জামিরজুরি, বাঁশখালীর কালীপুর, চাম্বল, শেখেরখীল ও ছনুয়া, আনোয়ারার বরুমছড়া ও তৈলারদ্বীপ, লোহাগাড়ার পুটিবিলা, কলাউজান ও বড়হাতিয়া এবং পটিয়া, বোয়ালখালী, হাটহাজারী, সন্দ্বীপ, রাউজান ও ফটিকছড়ির কয়েকটি গ্রাম।
এ ছাড়া পার্বত্য জেলা বান্দরবানের লামা, আলীকদম, নাইক্ষ্যংছড়ি, কক্সবাজারের চকরিয়া, টেকনাফ, মহেশখালী ও কুতুবদিয়ার কয়েকটি গ্রামে থাকা অনুসারীরাও আজ ঈদ পালন করবেন বলে জানিয়েছেন মির্জাখিল দরবারের ছোট শাহজাদা মছউদুর রহমান।
চাঁদপুর : সাদ্রা দরবার শরিফের প্রতিষ্ঠাতা পীর মাওলানা ইসহাকের অনুসরণে জেলার হাজীগঞ্জ, মতলব, ফরিদগঞ্জ, কচুয়া ও শাহরাস্তি উপজেলার ৪০ গ্রামে আজ ঈদুল আজহা উদযাপন করা হচ্ছে। এর মধ্যে আছে- হাজীগঞ্জের সাদ্রা, বলাখাল, শ্রীপুর, মনিহার, বরকুল, আলীপুর, বেলচোঁ, রাজারগাঁও, জাকনি, কালচোঁ ও মেনাপুর, ফরিদগঞ্জের শাচনমেঘ, খিলা, উভারামপুর, পাইকপাড়া, বিঘা, উচতলী, বালিথুবা, শোল্লা, রূপসা, বাশারা, গোয়ালভাওর, কড়ইতলী ও নয়ারহাট, মতলবের মহনপুর, এখলাসপুর, দশানী, নায়েরগাঁও, বেলতলীসহ কচুয়া ও শাহরাস্তির বেশ কয়েকটি গ্রাম।
বরিশাল : মহানগরসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলার অন্তত ২৫ গ্রামে আজ পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপনের জন্য অর্ধশতাধিক মসজিদে নেওয়া হয়েছে জামাতের প্রস্তুতি। বরিশালের আগাম ঈদ উদযাপনকারীরা চট্টগ্রামের চন্দনাইশের জাহাঁগিরিয়া শাহসুফি মমতাজিয়া দরবার শরিফের অনুসারী। তাঁরা ছড়িয়ে আছেন- বরিশাল নগরীর ২২, ২৩ ও ২৬ নম্বর ওয়ার্ড, বাবুগঞ্জ উপজেলার খানপুরা, কেদারপুর, মাধবপাশাসহ ছয়টি গ্রাম, সদর উপজেলার চন্দ্রমোহন, পতাং ও লাহারহাট এবং মুলাদী, হিজলা ও মেহেন্দীগঞ্জের কয়েকটি গ্রামে।
২৩ নম্বর ওয়ার্ডের তাজকাঠি হাজীবাড়ির জাহাঁগিরিয়া শাহসুফি মমতাজিয়া জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি আমীর হোসেন গতকাল শুক্রবার বলেন, পবিত্র ঈদ উদযাপনের জন্য জায়গায় জায়গায় চাঁদ দেখার প্রয়োজন নেই। বিশ্বের কোথাও চাঁদ দেখা গেলেই হলো।
পটুয়াখালী : জেলার বদরপুর দরবার শরিফ এলাকাসহ ২৮ গ্রামের মানুষ আজ আগাম ঈদুল আজহা উদযাপন করছেন। গ্রামগুলো হচ্ছে- সদর উপজেলার বদরপুর দরবার শরিফ এলাকা ও ছোটবিঘাই, গলাচিপার সেনের হাওলা, পশুরিবুনিয়া, নিজ হাওলা ও কানকুনিপাড়া, বাউফলের মদনপুরা, শাপলাখালী, রাজনগর, বগা, ধাউরাভাঙা, সুরদী, চন্দ্রপাড়া, দ্বি-পাশা, কনকদিয়া, সাবুপুরা, বামনিকাঠি, বানাজোড়া ও আমিরাবাদ, কলাপাড়ার দক্ষিণ দেবপুর, পাটুয়া, নাইয়াপট্টি, নিশানবাড়িয়া, মরিচবুনিয়া, শাফাখালী, তেগাছিয়া, ছোনখোলা ও বাদুরতলী।
বোয়ালমারী (ফরিদপুর) : উপজেলার ১০ গ্রামে আজ কোরবানির ঈদ পালন করা হচ্ছে। গ্রামগুলোর মধ্যে সহস্রাইল, মাইটকোমরা, রাখালতলী, গঙ্গানন্দপুর, বড়গাঁ, দুর্গাপুর, কাটাগড় ও কলিমাঝি উল্লেখযোগ্য। এসব গ্রামের মানুষ মির্জাখিল দরবার শরিফের অনুসারী হিসেবে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদ পালন করছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬:৪৬:০৫ ২৪৩ বার পঠিত #ঈদ #ঈদুল আজহা