বঙ্গ-নিউজ ডটকম:প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে হাওয়া ভবনের পরিবর্তে নতুন ভবন খুলে দুর্নীতি করবে। দেশের মানুষ তা চায় না। সম্প্রতি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ক্ষমতায় গিয়ে নতুন ধরনের সরকার চালুর যে ঘোষণা দিয়েছেন, তার পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী আজ শনিবার নারায়নগঞ্জের এক জনসভায় এসব কথা বলেন।নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে শহীদ মঞ্জুর স্টেডিয়ামে স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় দেওয়া বক্তব্যে শেখ হাসিনা তাঁর সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বিবরণও দেন। এর আগে তিনি আড়াইহাজার উপজেলার হরিপুরে ৪১২ মেগাওয়াট উত্পাদন ক্ষমতাসম্পন্ন গ্যাসভিত্তিক এক বিদ্যুেকন্দ্র উদ্বোধন করেন।
নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়ার আহ্বান
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা দেশের উন্নয়ন চাই। কথায় নয় কাজে বিশ্বাস করি।’ আড়াইহাজারের মানুষের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘সরকার আসার আগে অবস্থা কী ছিল আর এখন কী হয়েছে, তা আপনারাই ভেবে দেখুন।’ প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘যদি উন্নয়নের ধারা বজায় রাখতে চান তবে আবার নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে জয়যুক্ত করতে হবে।’ এ সময় প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত জনগণের উদ্দেশে বলেন, ‘যাঁরা যাঁরা ভোট দেবেন তাঁরা হ্যাঁ বলুন।’ এ সময় অনেকেই হ্যাঁ বলে হাত তুলে সাড়া দেয়।
বিএনপি সরকারের সব উন্নয়নকাজ বন্ধ করে দেবে
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে সরকারের উন্নয়নমূলক কাজ বন্ধ করে দেবে। তিনি বলেন, ‘আমরা বিনা মূল্যে বই দিচ্ছি, তারা তা বন্ধ করে দেবে। বিদ্যুেকন্দ্র খুলেছি, তা বন্ধ করে দেবে। দেশে আবার লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করবে।’দেশের সর্বনাশ চান খালেদা জিয়া
বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়ার প্রতি ইঙ্গিত করে শেখ হাসিনা বলেন, আমেরিকার একটি ইংরেজি পত্রিকায় উনি চিঠি লিখেছেন, যাতে দেশের পণ্যের অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা (জিএসপি) বন্ধ করে দেওয়া হয়। এভাবে কেউ দেশের সর্বনাশ চাইতে পারে, তা মেনে নেওয়া যায় না। অথচ বিরোধী দলের নেত্রী তা-ই চান।
বিএনপি দেশে আতঙ্কের রাজত্ব কায়েম করে
প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেন, যখনই বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় এসেছে, তখনই মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে। বিএনপি দেশে আতঙ্কের রাজত্ব কায়েম করেছে। দেশের মানুষ অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন চায়। কিন্তু বিএনপির দুঃশাসনের কারণে ২০০৭ সালে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। এরপর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় আসে। এ সরকারের অত্যাচার, নির্যাতনের হাত থেকে কেউ রেহাই পায়নি।
দাবি জানালেই অত্যাচার করেছে বিএনপি
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বিএনপির শাসনামলে মানুষ যখনই কোনো দাবি জানিয়েছে, সরকার তাদের ওপরে অত্যাচার, নির্যাতন চালিয়েছে। তিনি বলেন, ক্ষমতায় থাকতে কৃষক সার চাইলে পুলিশ তাদের গুলি করে হত্যা করেছে, মানুষ বিদ্যুত্ চাইলে কানসাটে গুলি চালিয়েছে। বিএনপির চরিত্র বদলায়নি।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বাংলার মাটিতেই হবে
শেখ হাসিনা বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের কাজ শুরু হয়েছে। বাংলার মাটিতেই এই বিচারকাজ শেষ হবে।’ বিরোধী দল যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচানোর চেষ্টা করলেও তাতে লাভ হবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এর আগে আড়াইহাজারে প্রধানমন্ত্রী মুক্তিযোদ্ধা এস এম মাজহারুল হক মিলনায়তন ও কমিউনিটি সেন্টারের উদ্বোধন করেন। এ ছাড়া তিনি আড়াইহাজার সার্কিট হাউস ও সোনারগাঁয়ে জ্যোতি বসু সঞ্চৃতি পাঠাগার ও সেমিনার হল উদ্বোধন করেন। তিনি বাংলাদেশ ফলিত পুষ্টি গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের প্রধান কার্যালয়, প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, মুড়াপাড়া ফেরিঘাট রাস্তায় শীতলক্ষ্যা নদীর ওপর ৫৭৫ দশমিক ২১৪ মিটার দীর্ঘ সেতু, অ্যাগ্রিকালচার ট্রেনিং ইনস্টিটিউট এবং সিদ্ধিরগঞ্জ ৩৩৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুেকন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর
বাংলাদেশ সময়: ০:২০:০৪ ৪০১ বার পঠিত