স্টাফ রিপোর্টার,বঙ্গ-নিউজ:উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে সোমেশ্বরী নদীর পানি বেড়েই চলছে ।ঝুঁকিতে রয়েছে হাওরের সবকটি বাঁধ।সুনামগঞ্জ জেলার মধ্যনগর উপজেলার ঘোরাডোবা হাওর উপ-প্রকল্পের ১৩৬ নম্বর পিআইসির গাফিলতির কারনে ঝুঁকিতে আছে ফলডোয়ারি ফসলরক্ষা বাঁধ ।বাঁধে ফাটল ধরায় স্বেচ্ছা শ্রমের ভিত্তিতে কাজ করে যাচ্ছে স্থানীয় কৃষকেরা।এই ফসলরক্ষা বাঁধকে কেন্দ্র করে মধ্যনগর ও পাশ্ববর্তী নেত্রকোণা জেলার কলমাকান্দা উপজেলায় শতাধিক গ্রামের জমির ফসল রয়েছে বোয়ালা,হোহানি,রূপেশ্বর,সোনাডোবী,পাইব্যারবিল,আইলী,তিলাচাহুর,গছতলা,নলাডগরা,হাইন্যাগাঁও ও চাকুয়ার হাওরে।ঘোরাডোবা হাওর উপ-প্রকল্পের ১৩৬ নম্বর পিআইসির কাজের জন্য ১৮ লাখ ৮৩ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার।কিন্তু ওই পিআইসির সভাপতি মধ্যনগর সদর ইউনিয়নের মধ্যনগর পূর্বপাড়া গ্রামের বেনিমাধব রায়ের ছেলে সুজিত রায় নামমাত্র মাটি ভরাট করে ফলডোয়ারি ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ শেষ করে।যারফলে পিআইসির গাফিলতির কারনেই ফসলরক্ষা বাঁধে এই ফাটল দেখা দিয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয় কৃষকদের এবং ওই পিআইসির নৈপথ্যে রয়েছেন সুনামগঞ্জ জেলার মৎস্যজীবি লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক রুহুল আমিন খান ।বৃহস্পতিবার দুপুরে থেকে ধর্মপাশা উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তার নির্দেশে ওই বাঁধে এস্কুভেটর দিয়ে মাটি ভরাট করছে স্থানীয় কৃষকেরা।এরপূর্বে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ হিসেবে বাঁধটি পরিদর্শন করেন উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মোঃ মুুুুনতাসির হাসান।
বোয়ালা হাওরের কৃষক মোঃ আলাউদ্দিন বলেন,বোয়ালা হাওরে আমার ১০ কেয়ার বোরো ফসলের জমি রয়েছে।সারা বছরে আমরা একটি মাত্র ফসলের চাষাবাদ করি।বাঁধ ভেঙ্গে যদি আমাদের স্বপ্নের ফসল অকাল বণ্যায় ডোবে যায় তাহলে আমাদের সীমাহিন কষ্ট করে চলতে হবে।
গছতলা হাওরের কৃষক আয়নাল হক বলেন,ফলডোয়ারি ফসলরক্ষা বাঁধে ফাটল ধরায় আমরা সবাই রাতদিন মিলে মিশে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে কাজ করে যাচ্ছি।যাতে করে বাঁধটিকে আমরা রক্ষা করতে পারি ।এই বাঁধটি ভেঙ্গে গেলে শতাধিক গ্রামের মানুষ তাদের ফসল হারিয়ে নিঃশ্ব হয়ে যাবে।এখন পর্যন্ত পিআইসির কোনো লোক আমরা এই বাঁধে দেখতে পায়নি।
সোনাডোবী হাওরের কৃষক শাহান শাহ বলেন,আমাদের মধ্যনগর ও কলমাকান্দা উপজেলার শত শত একর জমি রয়েছে এই হাওরে ।ফলডোয়ারি বাঁধে ফাটল ধরায় শতাধিক গ্রামের কৃষক উৎকণ্ঠায় রয়েছে।যদি তাদের সারা বছরের খোরাকি স্বপ্নের ফসল সোমেশ্বরীর পানিতে তলিয়ে যায় তাহলে দু’চোখে অন্ধকার ছাড়া কিছুই দেখবে না।
মধ্যনগর উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক পরিতোষ সরকার বলেন,শেখ হাসিনার সরকার হাওরের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে শত শত কোটি টাকার বরাদ্দ দিয়েছে।ভূমিহীন ও একজন বহিরাগত কে দেওয়া হয়েছে এই হাওরের পিআইসি।য়ার এই হাওরে কোনো জমি নেই। যার ফলে নামমাত্র কাজ হওয়ায় সাধারণ কৃষকেরা এর প্রতিবাদ করতে পারেনি।
ওই পিআইসির সভাপতি সুজিত রায় বলেন,বাঁধে ফাটল দেওয়ার সাথে সাথে সবাই মিলে কাজ করেছে।বর্তমানে একটি এস্কুভেটর দিয়ে সেখানে কাজ করানো হচ্ছে।আশাকরি ওই সমস্যা মোকাবিলা করতে পারব।
এই বিষয়ে বংশীকুন্ডা দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রাসেল আহমদ বলেন,ঘোরাডোবা হাওর উপ-প্রকল্পের ১৩৬ নম্বর পিআইসির বাঁধের কাজের সাথে যারা জড়িত এদের দূর্নীতির বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গঠনের দাবি জানাচ্ছি। এই হাওর গুলোতে দুই উপজেলার মানুষের প্রচুর ফসলী জমি রয়েছে।আমার ইউনিয়নের দুটি গ্রামের জমিও রয়েছে।
ধর্মপাশা উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মোঃ মুনতাসির হাসান বলেন,বাঁধে ফাটল ধরার সাথে সাথে আমি ওইদিন রাতেই বাঁধটি পরিদর্শন করেছি।বাঁধটি টিকিয়ে রাখতে এস্কুভেটর দিয়ে মাটি দেওয়া হচ্ছে।পরবর্তীতে তদন্ত করে পিআইসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১০:২৬:৫৬ ৬৪২ বার পঠিত #ফসলরক্ষা বাঁধ #মধ্যনগর #সুনামগঞ্জ