বঙ্গ-নিউজ ডটকম:প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে ও তার তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই ইন্টারনেটের দাম কমানো ও গতি বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন তার ফেসবুক অনুসারীরা।
ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা জয়কে জানিয়েছেন, সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখিয়ে ক্ষমতায় এলেও এখনও সকলের জন্য /85সহজলভ্য হয়নি ইন্টারনেট। উচ্চমূল্যের কারণে অনেকেই পর্যাপ্ত ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারছে না।
ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা বলছেন বর্তমানে ইন্টারনেটের যে দাম তা ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’-এর প্রতিবন্ধক ।
শুক্রবার রাত দশটার মিনিট দশেক আগে জয় তার ফেসবুক পেজে একটি স্ট্যাটাস দেন। স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, ‘বাংলাদেশে ইন্টারনেট সংযোগের দাম নিয়ে আমি অনেক অনুরোধ পেয়েছি। আমাদের সরকার আসার পর থেকেই এই বিষয়টিতে আমরা মনোযোগ দিয়েছি। আর এই নিয়ে আমার ভবিষ্যতেও কিছু পরিকল্পনা আছে যা আওয়ামী লীগ পুনর্নির্বাচিত হলে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে ।
২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় আসে তখন ইন্টারনেটের প্রতি মেগাবাইটের দাম ছিল ৮০ হাজার টাকা। গত চার বছরে ওই দাম কমিয়ে আমরা ১৮ হাজারে নামিয়ে এনেছি। তবে ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো খুচরা গ্রাহকদের জন্য দাম তেমন কমায়নি। তারা ইন্টারনেটের গতি বাড়িয়েছে, কিন্তু দাম এখনো বেশি।
থ্রিজি এবং ফোরজি’র জন্য ইন্টারনেটের দাম আরো কমানোই আমার পরিকল্পনা। ফলে দ্রুতগতির ইন্টারনেট পাওয়া সহজ হবে, বাড়বে ইন্টারনেট ব্যবহাকারীও। ব্যবহারকারী বাড়লে দামও কমবে। সেবাদাতাদের জন্য সর্বোচ্চ মূল্যও বেঁধে দেওয়ার পরিকল্পনা করছি।
আওয়ামী লীগ পুনর্নির্বাচিত না হলে এ পরিকল্পনাগুলোর কোনোটিই বাস্তবায়ন করতে পারবে না। ডিজিটাল বাংলাদেশ তৈরিতে আমরা বিস্ময়কর অগ্রগতি অর্জন করেছি, তবে এখনো অনেক কাজ বাকি। বাংলাদেশকে পুরোপুরি ডিজিটাল করতে নৌকায় ভোট দিন।’
জয়ের এ ফেসবুক পোস্টের পর ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের অনেকেই তাকে সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই ইন্টারনেটের দাম কমানোর পরামর্শ দিয়েছেন। তার ফেসবুক পেজে স্ট্যাটাসটির জবাবের বিভিন্নজনের মন্তব্য তুলে ধরা হলো।
বেশিরভাগই জয়ের কাছে দাবি তুলেছেন, এক জিবি (গিগা বাইট) ইন্টারনেট পঞ্চাশ থেকে একশ টাকার মধ্যে দিতে।
আনোয়ার হোসেন শাহীন নামের এক তরুণ স্ট্যাটাসটির নিচে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, ‘ইন্টারনেটের দাম কমানো একটা ঘোষণার ব্যাপার মাত্র। আন্তরিকতা থাকলে আপনাদের মেয়াদে এটা করা সম্ভব। এটা করলে ভোট বাড়বে ছাড়া কমবে না।’
তাকিব উল ইসলাম লেখেন, ‘এখনো কয়েকমাস সময় আছে হাতে। মোবাইল অপারেটরগুলোকে রেট কমাতে বলেন। সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের নাগালের মধ্যে (যেমন ১ জিবি ৫০-১০০ টাকা) আনেন। যেই ভোটটা চাইলেন ওইটা চাওয়াও লাগবে না। এমনি দিয়ে দেবে ভোট। এখন নয় তো কখোনই নয়। সময় খুব কম।’
নোমান আহমেদ পোস্টে লেখেন, ‘আমরা বিদেশে না থাকলেও মাথায় বুদ্ধি কম নয়, আগে দাম কমান অ্যান্ড স্পিড বাড়ান তারপর ভোট চাইতে আইসেন।’
‘ব্যবহারকারী বাড়লে দামও কমবে’ জয়ের এ স্ট্যাটাসের জবাবে বন্য নামে একজন লিখেছেন, ‘ আপনার এ কথার সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করছি, কারণ দাম কমলেই গ্রাহক বাড়ে।
কখনো ভবিষ্যতে দাম কমানোর কথা বলে আপনি সবাইকে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে বলতে পারবেন না। আলুর দাম পাঁচ টাকা থেকে একবছর পরে দু’টাকা হবে বলে, আপনি কি আগ বাড়িয়ে কখনো এক কেজির বদলে দশ কেজি আলু কিনবেন? বিটিআরসি কি করছে! আগে দাম কমান ব্যবহারকারী এমনিতেই বাড়বে…।’
বিষ্ণু সরকার আকাশ বলেছেন, ‘দাম কমাতে ৫ বছর লাগবে ক্যান? সদিচ্ছা থাকলে এক সপ্তাহে যথাযথ কর্তৃপক্ষ দাম নির্ধারিত করতে পারে।’
রাজন রাজুর প্রতিক্রিয়া- ‘দেশে দ্রুতগতির মোবাইল ইন্টারনেটের প্রয়োজন যেমন 3G এর সহজলভ্য করা উচিত যাতে সবার হাতে হাতে ইন্টারনেট আসতে পারে।’
আকিব হোসাইন নামের একজন জয়কে প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘আপনার ধারণা কী সামনে অন্য সরকার এসে দাম না কমিয়ে আপনার জন্য রেখে দেবে?’
মাসুদ নামের আরেকজন জয়কে পরামর্শ দিয়ে বলেন, ‘অন্য দেশের তুলনায় আমাদের দেশে ইন্টারনেট স্পিড খুবই কম। এ কচ্ছপ গতির ইন্টারনেট দিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ করা সম্ভব নয়। কাজেই আপনি এখনই ব্যবস্থা নিন।’
প্রসঙ্গত, জয়ের ফেসবুক পেজ সম্প্রতি তরুণদের মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। ফেসবুক কর্তৃপক্ষ জয়ের পেজটিকে ‘বিশেষ সম্মান’ চিহ্নিত (মার্কড) করেছে।
গত মঙ্গলবার রাতে ‘সজীব ওয়াজেদ’ নামের পেজটিকে অফিসিয়ালি চিহ্নিত করেছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। ফলে এখন থেকে সজীব ওয়াজেদ এর পেজ এ তার নামের ঠিক ডানপাশে একটি রাইট মার্ক (টিক চিহ্ন) দেখতে পাওয়া যাবে।
বাংলাদেশে প্রথম কোনো নাগরিকের ক্ষেত্রে ভেরিফিকেশনের মাধ্যমে এ সম্মাননার স্বীকৃতি দিয়েছে ফেসবুক।
বাংলাদেশ সময়: ৯:৫৪:০৩ ৩৫৭ বার পঠিত