বঙ্গ-নিউজ: বহুল আলোচিত অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে গত ৩১ জানুয়ারি। রায়ে প্রধান দুই আসামিকে মৃত্যুদুণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। তারা হলেন- টেকনাফ থানার তৎকালীন ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের তৎকালীন পরিদর্শক লিয়াকত আলী।
সিনহা মো. রাশেদ খান, প্রদীপ কুএ ছাড়া ১৫ জন অভিযুক্তের মধ্যে ৬ জনের যাবজ্জীবন এবং ৭ জনকে খালাস দেন কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালত। আজ মঙ্গলবার মৃত্যুদণ্ড পাওয়া প্রদীপ ও লিয়াকতের ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টের ডেসপাস শাখায় এসে পৌঁছেছে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সুপ্রিম কোর্টের বিশেষ কর্মকর্তা সাইফুর রহমান।
এ মামলায় বিচারিক আদালতের রায়সহ সংশ্লিষ্ট নথিপত্র গ্রহণ করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এগুলো এখন সংশ্লিষ্ট শাখায় পাঠানো হবে, নিয়ম অনুযায়ী তৈরি হবে মামলার পেপারবুক। এরপর প্রধান বিচারপতি বেঞ্চ নির্ধারণ করে দিলে মামলার শুনানি শুরু হবে। নিয়ন অনুযায়ী, ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৭৪ ধারায় বিচারিক আদালতের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের রায়ে হাইকোর্টের অনুমোদন প্রয়োজন হয়। সেজন্য মামলার নথি ‘ডেথ রেফারেন্স’ আকারে উচ্চ আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এই মামলায় যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের বরখাস্ত উপ-পরিদর্শক, এসআই, নন্দদুলাল রক্ষিত, বরখাস্ত কনস্টেবল সাগর দেব, দেহরক্ষী রুবেল শর্মা এবং পুলিশের সোর্স শামলাপুরের মারিশবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা মো. নেজামুদ্দিন, নুরুল আমিন ও আয়াজ উদ্দিন।
খালাস পেয়েছেন- বরখাস্ত সহকারী উপ-পরিদর্শক, এএসআই, লিটন মিয়া, বরখাস্ত কনস্টেবল কামাল হোসেন, সাফানুর করিম, আব্দুল্লাহ আল মামুন, এপিবিএনের বরখাস্ত উপ-পরিদর্শক, এসআই, মো. শাহজাহান, বরখাস্ত কনস্টেবল মো. আবদুল্লাহ ও মো. রাজীব।
কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের টেকনাফের বাহারছড়া চেকপোস্টে ২০২০ সালের ৩১ জুলাই ঈদুল আজহার আগের দিবাগত রাতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান।
ওই ঘটনার ৫ দিন পর অর্থাৎ ৫ আগস্ট নিহত সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে আদালতে মামলা করেন। এতে বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের তৎকালীন ইনচার্জ লিয়াকত আলীকে প্রধান আসামি করা হয়। এ ছাড়া টেকনাফ থানার তৎকালীন ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ৯ পুলিশ সদস্যকে আসামি করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় র্যাব।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ৪ মাসের বেশি সময় ধরে চলা তদন্তের পর ২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন। সিনহা হত্যাকাণ্ডকে পরিকল্পিত ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করা হয় অভিযোগপত্রে। রায়ের পর্যবেক্ষণেও একে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
গত বছরের ২৭ জুন ১৫ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। এরপর গত ২৩ আগস্ট সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ এবং জেরা শুরু হয় কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালতে। যা শেষ হয় গত বছরের ১ ডিসেম্বর। এ মামলায় আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন ৬৫ জন সাক্ষী।
বাংলাদেশ সময়: ২০:৪৫:১৭ ৫৯৮ বার পঠিত #ডেথ রেফারেন্স #সিনহা হত্যা #হাইকোর্ট