সুনামগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি:সুনামগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার মঈনুল হক কলেজে অধ্যক্ষ মো. মতিউর রহমান ও তার স্ত্রী উপাধ্যক্ষ কর্তৃক এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে নিয়ম বহির্ভূত অতিরিক্ত টাকা আদায়ের পর এবার এইচএসসি প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৭ হাজার টাকা জোরপূর্বক আদায়ের ঘটনায় ক্ষুব্দ হয়ে ওঠছে শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় উত্তেজনা বিরাজ করায় ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। অধ্যক্ষ ও তার স্ত্রীর অনিয়ম, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুসছে শিক্ষার্থীরা।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চলতি এইচএসসি পরীক্ষায় করোনার কারণে বিপর্যস্ত শিক্ষা ব্যবস্থা সচল রাখতে এবার এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের তিন বিষয়ে মূল্যায়ণ পরীক্ষার নির্দেশনা দেয় সরকার। ফর্মফিলাপের জন্য সরকার ১ হাজার টাকা নির্ধারণ করে দিলেও অধ্যক্ষ ও তার স্ত্রী ৩ হাজার ৫০০ টাকা বাধ্যতামূলকভাবে আদায় করেছেন। এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা গত আগস্ট মাসে জেলা প্রশাসক বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। অতিরিক্ত ফি আদায়ের ব্যপারে সরকার সতর্ক করলেও সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে স্বামী স্ত্রী মিলে অতিরিক্ত টাকা আদায় করেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। এখন এইচএসসি প্রথম বর্ষের পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে জোরপূর্বক আরো ৭ হাজার টাকা করে গ্রহণ করছেন তারা। করোনায় বিপর্যস্ত পরিবারের শিক্ষার্থীরা অতিরিক্ত টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে তাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ। এ ঘটনায় প্রতিবাদ করলে প্রতিবাদী শিক্ষার্থীদের টোপ দিয়ে তাদের কয়েকজনের কাছ থেকে কম টাকা নিয়ে বিষয়টি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন দু’জন। কিন্তু অন্যান্য শিক্ষার্থীরা অন্যায্য টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে ক্যাম্পাসে উত্তেজনা বিরাজ করে। শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কর্মসূচি ঘোষণা করলে অধ্যক্ষ মো. মতিউর রহমান সদর থানা পুলিশকে বুধবার ( ৮ ডিসেম্বর) ক্যাম্পাসে ডেকে নেন। সারাদিন ক্যাম্পাসে মোতায়েন ছিল পুলিশ। এখনো ক্যাম্পাসে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
উল্লেখ্য মনগড়া স্বামী স্ত্রী মিলে সাজানো পরিচালনা কমিটি করে কলেজ পরিচালনা করে প্রতি বছর লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনায় এলাকাবাসী একটি কমিটি করে শালিস আহ্বান করেছিলেন। শালিসের মাধ্যমে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয় অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি তার দুর্নীতি ও অনিয়মের বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জেলা প্রশাসক বরাবরে জমা দিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা। এতে তার বিভিন্ন দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার চিত্র উঠে এসেছে। মো. মতিউর রহমান জাতীয়তাবাদী কর্মজীবী দলের সুনামগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি হিসেবে গত জাতীয় নির্বাচনের আগে বিএনপির মনোনয়ন চেয়ে আলোচনায় এসেছিলেন। তার বিতর্কিত কর্মকান্ডে এলাকাবাসী ক্ষুব্দ। এ বিষয়ে জানতে চাইলে
সদর থানার ওসি মো. সহিদুর রহমান বলেন, জয়নগর বাজার মঈনুল হক কলেজের অধ্যক্ষ ক্যাম্পাসে পুলিশ চেয়েছিলেন। আমরা পুলিশ পাঠিয়েছিলাম। এখন পরিস্থিতি শান্ত আছে।
অধ্যক্ষ মতিউর রহমানকে এ বিষয়ে সাংবাকিরা জানতে চাইলে তিনি বলেন, কিছু হয়নি। কিছু শিক্ষার্থী গোলমাল করতে চেয়েছিল তাই পুলিশ ডেকেছি। তিনি ও তার স্ত্রী কোন দুর্নীতি ও অনিয়মে জড়িত নন বলে জানান।
বাংলাদেশ সময়: ২৩:৪৩:০৬ ৭৮৭ বার পঠিত #অনিয়ম দূর্নীতি #সুনামগঞ্জ