প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে খালেদা জিয়া আন্দোলনের বাতাসে চুল তো থাকবেই না, অস্তিত্বও যাবে

Home Page » জাতীয় » প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে খালেদা জিয়া আন্দোলনের বাতাসে চুল তো থাকবেই না, অস্তিত্বও যাবে
মঙ্গলবার, ২০ আগস্ট ২০১৩



521283c092d62-48.jpgবঙ্গ-নিউজ ডটকম: বিএনপির চেয়ারপারসন ও বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে বলেছেন, ‘আন্দোলনের বাতাস শুরু হলে চুল তো থাকবেই না, অস্তিত্বেও টান পড়তে পারে। জনগণের আন্দোলনের বাতাসে চুল এলোমেলো হয়ে যাবে। দিশেহারা হয়ে যাবেন।’ বিএনপির অঙ্গসংগঠন জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের ৩৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল সোমবার বিকেলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত সমাবেশে খালেদা জিয়া এসব কথা বলেন।গত রোববার বিকেলে সরকারি বাসভবন গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচনকালীন সরকারব্যবস্থা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন, ‘আমি সংবিধানে বিশ্বাস করি। যা হবে সংবিধান মোতাবেক হবে। তার থেকে একচুলও নড়া হবে না, ব্যস।’প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের জবাবে খালেদা জিয়া বলেন, ‘আমাদের দাবি ছোট্ট। তত্ত্বাবধায়ক বা অন্য যে নামেই হোক, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন। দেশের ৯০ ভাগ মানুষ এটা চায়, এখন এই সংখ্যা আরও বেড়েছে, ৯৫ বা ৯৮ শতাংশ হয়েছে।’খালেদা জিয়া বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ এমন যে যত কাজই করুক না কেন, তারা পরিবর্তন চায়। একবার এরা, আরেকবার ওরা।’ তিনি বলেন, ‘আন্দোলন করতে চাই না। চাই আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতায় পৌঁছে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে। চাই সমানে সমান খেলতে।’খালেদা জিয়া সংসদের আগামী অধিবেশনে নির্দলীয় সরকারের বিল এনে তা পাস করার দাবি জানান।খালেদা জিয়া বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী এত চিৎকার করছেন কেন? ভয় পেয়ে। ভয় কাটাতে ও দলের নেতা-কর্মীদের মনোবল বাড়াতে চিৎকার করছেন তিনি। অন্ধকারে ভয় কাটাতে মানুষ যেমন চিৎকার করে গান করে, প্রধানমন্ত্রীও সেই কারণে চিৎকার করেছেন।’ তিনি প্রধানমন্ত্রীকে সতর্ক করে বলেন, ‘এত বেশি আস্ফাালন ভালো না। জানি, ভয় পেয়ে চিৎকার করে কথা বলছেন। সকলে মিলে নির্বাচন করব। কাউকে কিছু করা হবে না। জনবিচ্ছিন্ন হয়ে জোর গলায় নিজেকে সান্ত্বনা দিতে বলছেন, “একচুলও নড়ব না।” কিন্তু জনগণের আন্দোলনের বাতাসে এপার থেকে ওপারে ভেসে যাবেন।’ বিএনপির চেয়ারপারসন নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, দাবি আদায়ে কর্মসূচি কেবল শুরু হয়েছে। সামনে আরও কর্মসূচি আসবে। এ জন্য প্রস্তুত হতে হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করে আওয়ামী লীগকে হটিয়ে

বিএনপি ক্ষমতায় আসবে। তিনি বলেন, এই সরকারের আমলে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। নির্বাচনে মাস্তান, অর্থ, অস্ত্র ও প্রশাসনকে ব্যবহার করা হয়েছে। পাঁচ সিটিতে বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন; কারণ, সরকার এমনই পচেছে যে তাদের আর কোনো কিছু দিয়ে ওঠানো যাচ্ছে না।

খালেদা জিয়া বলেন, ‘রানা প্লাজা ধসের পর নিহত ব্যক্তিদের পরিবারকে ও আহত ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী অর্থ সংগ্রহ করেছেন। কিন্তু আমি অনেক আহত ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলেছি, যাঁরা কোনো সহায়তা পাননি। পঙ্গু হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেওয়ার পর তাঁরা চিকিৎসাও করাতে পারছেন না। তাহলে সেই অর্থ কোথায় গেল? হিসাব দিতে হবে।’

বিরোধীদলীয় নেতা প্রধানমন্ত্রীকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভয় আমাকে দেখাবেন না। মাইনাস-২-এর ভয় আমি করি না। এখন আমাদের কোনো ক্ষমতা নেই। চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, লুটপাট যা করার আপনারাই করছেন। সবার নামধাম আমার কাছে আছে। চাইলে আপনাকে পাঠিয়ে দেব। কীভাবে এদের রক্ষা করবেন? আমার কিছু হবে না।’

বিএনপির চেয়ারপারসন বলেন, ‘এখনো সময় আছে, সংকট সমাধান করুন। তা না হলে কেউ নির্বাচন করবে না। মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টিও বলেছে, একদলীয় নির্বাচনে তারা যাবে না। একদলীয় নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না, করতেও দেওয়া হবে না।’

নতুন ধারার রাজনীতি ও সরকার: সমাবেশে খালেদা জিয়া বলেছেন, ক্ষমতায় গেলে বিএনপি নতুন ধারার সরকার প্রতিষ্ঠা করবে এবং নতুন ধারার রাজনীতি করবে। সেখানে কোনো বিভক্তি থাকবে না। সবাইকে নিয়ে রাজনীতি করা হবে।

খালেদা জিয়া অভিযোগ করেন, (সরকারি চাকরিতে) কোটার মাধ্যমে অযোগ্য ব্যক্তিদের নিয়োগ না দিয়ে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হবে। কোটাপদ্ধতি নিয়ে তাঁর সরকারের কিছু ভুল ছিল বলেও স্বীকার করেন তিনি। তবে তিনি এও বলেন, কিছু কোটা থাকবে। একবারেই বাতিল করা হবে না। তবে সেই কোটা কাদের জন্য, তা ঠিক করা হবে।

ক্ষমতায় গেলে একটি কৃষিনীতি করা হবে এবং কৃষিজমি অন্য খাতে ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না। দ্রুতগতির ট্রেন সার্ভিস চালু, গভীর সমুদ্রবন্দর স্থাপন, কুইক রেন্টাল বাদ দিয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ, সড়ক ও সেতু নির্মাণ করার ঘোষণা দেন বিএনপির নেত্রী। তিনি বলেন, আরও পরে দলের ইশতেহার মানুষের কাছে তুলে ধরা হবে। বিদেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখা হবে, তবে রাষ্ট্র পরিচালনায় কোনো দেশের আধিপত্য মেনে নেওয়া হবে না।

হেফাজত প্রতিবাদ করতে ঢাকায় এসেছিল: খালেদা জিয়া বলেন, ব্লগারদের কারণে হেফাজতে ইসলামের উত্থান হয়েছে। ব্লগাররা এমন না করলে হেফাজত তৈরি হতো না। তিনি বলেন, হেফাজতের কর্মীরা ব্লগারদের আচরণের প্রতিবাদ করতে ঢাকায় এসেছিলেন। তাঁরা ছিলেন নিরস্ত্র। অথচ তাঁদের ওপর এক লাখ ৫৫ হাজারটি গুলি বর্ষণ করা হয়েছে। এতে বহু লোক মারা গেছে। কিন্তু সরকার তা স্বীকার করেনি।

সৌদি রাষ্ট্রদূতের বাসায় প্রধানমন্ত্রীর ইফতারে যাওয়ার প্রতি ইঙ্গিত করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘এত কিছুর পর মুসলমান সাজতে সৌদি অ্যাম্বাসেডরের বাসায় গিয়েছিলেন।’

খালেদা জিয়া দৈনিক আমার দেশ-এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান ও মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের সম্পাদক আদিলুর রহমান খানের মুক্তি দাবি করে বলেন, তাঁরা সত্য কথা বলেছিলেন। তিনি দিগন্ত টিভি বন্ধেরও সমালোচনা করেন।

স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি হাবিব-উন-নবী খানের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকা, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক সরাফত আলী প্রমুখ বক্তব্য দেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৪:০০:৪৯   ৩৯৭ বার পঠিত  




জাতীয়’র আরও খবর


সালাম, আমান, রিজভী, খোকন, শিমুল ও এ্যানিসহ গ্রেফতার শতাধিক
ভারতকে হারিয়ে টাইগারদের সিরিজ জয় নিশ্চিত
 নয়াপল্টনে বিএনপি নেতাকর্মীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ ,নিহত ১
বিয়েবর্হিভূত যৌন সম্পর্ক নিষিদ্ধ: প্রতিবাদে বিক্ষােভ ইন্দোনেশিয়ায়
আড়াইহাজারে অর্থনৈতিক অঞ্চল উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
কোয়ার্টারে ব্রাজিল ক্রোয়েশিয়া মুখোমুখি
ব্যাংকে টাকা নিয়ে গুজবে কান না দেয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
মাধ্যমিক স্কুলে ভর্তির লটারি ১২ ও ১৩ ডিসেম্বর
২০ ডিসেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে করোনা টিকার চতুর্থ ডোজ
সউদী আরব তৈরি করবে বিশ্বের বৃহত্তম বিমানবন্দর

আর্কাইভ