বঙ্গনিউজঃ করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির খুব একটা উন্নতি নেই। এরমধ্যেই বিধিনিষেধ (লকডাউন) শিথিল করা হয়েছে। ধারণক্ষমতার শতভাগ যাত্রী নিয়ে ১৯ দিন পর আবারও সড়কে চলতে শুরু করেছে গণপরিবহন। বুধবার (১১ আগস্ট) ভোর থেকে রাজধানীতে গণপরিবহন চলতে শুরু করে। এর আগে অর্ধেক গণপরিবহন সড়কে নামিয়ে তাতে শতভাগ যাত্রী পরিবহনের নির্দেশনা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) গতকাল মঙ্গলবার এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, মোট পরিবহনের অর্ধেক চলাচল করবে। প্রতিটি জেলায় স্থানীয় প্রশাসন অর্ধেক বাস চলাচলের সংখ্যা ঠিক করবে, দাঁড়িয়ে যাত্রী পরিবহন করা যাবে না। দুই আসনে এক যাত্রী এবং ৬০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধির বিধানও থাকছে না। অর্থাৎ স্বাভাবিক সময়ের ভাড়ায় ফিরে যাচ্ছে গণপরিবহন।
তবে রাস্তায় অর্ধেক গাড়ি চলাচল নির্ণয় করা কঠিন হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ। তিনি বলেন, প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, মোট পরিবহন সংখ্যার অর্ধেক চলাচল করবে। এক্ষেত্রে এক মালিকের কয়টি গাড়ি আছে বা কতটি গাড়ি চালাচ্ছে দেশব্যাপী এ বিষয়টি নির্ণয় করা একদিকে যেমন কঠিন হবে অন্যদিকে শ্রমিকরাও বেকার থাকবে তাদের কষ্ট লাঘব শেষ হবে না। মালিকরাও ব্যবসায়িকভাবে চরম ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
তাছাড়া দীর্ঘদিন পরে গাড়ি চালু হবে, যার একটি মাত্র গাড়ি আছে তার অবস্থা কি হবে? অর্ধেক গাড়ি চলাচল করলে পরিবহন সংকট দেখা দেবে এবং যাত্রীর চাপ বাড়বে। এতে করে সংক্রমণ বাড়ার সম্ভাবনা থাকবে। এসব দিক বিবেচনা করে মোট পরিবহন সংখ্যার অর্ধেক চলাচলের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে সব গাড়ি চলাচলের সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য আমরা সরকারের কাছে বিনীতভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি। ‘
তিনি আরো বলেন, আমরা সরকারের নির্দেশনা মেনেই বর্ধিত ভাড়া না নিয়ে আগের ভাড়ায় গাড়ি চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। গণপরিবহন চালুর বিষয়ে সার্বিক নির্দেশনা দিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)৷
নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে-
* আসন সংখ্যার অতিরিক্ত কোনো যাত্রী পরিবহন করা যাবে না এবং দাঁড়িয়ে কোনো যাত্রী বহন করা যাবে না। সড়ক পথে গণপরিবহন চলাচলের ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসন (সিটি করপোরেশন এলাকায় বিভাগীয় কমিশনার জেলা পর্যায়ে জেলাপ্রশাসক) নিজ নিজ অধিক্ষেত্রের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সংশ্লিষ্ট দপ্তর/সংস্থা, মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করে প্রতিদিন মোট পরিবহন সংখ্যার অর্ধেক চালু করতে পারবে।
* আগের ভাড়ায় (৬০ শতাংশ বর্ধিত ভাড়া প্রযোজ্য হবে না) গণপরিবহন চলবে। অতিরিক্ত ভাড়া কোনোভাবেই আদায় করা যাবে না।
* গণপরিবহনের যাত্রী, চালক, সুপারভাইজার/কন্ডাক্টর, হেলপার-কাম ক্লিনার এবং টিকেট বিক্রয় কেন্দ্রের দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তিগণের মাস্ক পরিধান/ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে এবং তাদের জন্য প্রয়োজনীয় হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখতে হবে।
* যাত্রার শুরু ও শেষে যানবাহন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নসহ জীবাণুনাশক দিয়ে জীবাণুমুক্ত করতে হবে। এছাড়াও যানবাহনের মালিকদের যাত্রীদের হাতব্যাগ, মালপত্র জীবাণুনাশক ছিটিয়ে জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থা করতে হবে।
* গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি সংক্রান্ত অন্যান্য প্রয়োজনীয় বিষয়াদি মেনে চলতে হবে। অন্যথায় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এ আদেশ বহার থাকবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১২:০৬:৫৩ ৬৬৭ বার পঠিত # #করোনা #করোনাভাইরাস #গণপরিবহন #বিধিনিষেধ #শিথিল