বোল্টের গতির রহস্যভেদ?

Home Page » খেলা » বোল্টের গতির রহস্যভেদ?
সোমবার, ১৯ আগস্ট ২০১৩



521195d09ce46-bolt-secret.JPGবঙ্গ-নিউজ ডটকম : সবাইকে ছাপিয়ে বোল্ট ছবি: রয়টার্স‘এই পৃথিবীতে নাকি সাত শ কোটি মানুষ আছে। ভাবতে ভালোই লাগে, এত মানুষের মধ্যে আমিই সবচেয়ে জোরে দৌড়াই।’ নিজের সম্পর্কে এভাবেই মুগ্ধতা প্রকাশ করেছিলেন উসাইন বোল্ট। সত্যিই, বোল্ট মুগ্ধ করে চলেছেন। করলেন আবারও মস্কোর বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে ট্রেবল জিতে। কিন্তু কী সেই রহস্য, যা বোল্টকে ‘বোল্ট’ বানিয়েছে? বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, এই উত্তর তাঁদের জানা।

২০০৯ বার্লিন বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপের ১০০ মিটারে ৯.৫৮ সেকেন্ড টাইমিং গড়েছিলেন বোল্ট। ইতিহাসেই এর চেয়ে কম সময়ে ১০০ মিটারে দৌড়ায়নি আর কেউ। বিজ্ঞানীরা বলছেন, একটি গাণিতিক মডেল দিয়ে বোল্টের এই অবিশ্বাস্য গতির ব্যাখ্যা দেওয়া সম্ভব। ৬ ফুট ৫ ইঞ্চি উচ্চতা নিয়ে বাতাসের ধাক্কাকেও পরাস্ত করে ছুটে চলার জন্য তাঁর শরীরকে যে পরিমাণ শক্তি ব্যয় করতে হয়, সেই ব্যাখ্যাও এই মডেল দিয়ে দেওয়া সম্ভব বলে দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা। ‘ইউরোপিয়ান জার্নাল অব ফিজিক্স’-এ প্রকাশিত এক নিবন্ধে ওই গবেষক দল জানিয়েছে, অনন্যসাধারণ অ্যাথলেটরা কীভাবে এত জোরে দৌড়ান, জানা যাবে সেই রহস্য।
যে গাণিতিক মডেলটি প্রস্তাব করা হয়েছে, তাঁর মতে, বার্লিনে বোল্টের ৯.৫৮ সেকেন্ড টাইমিংটি অর্জিত হয়েছে প্রতি সেকেন্ডে ১২.২ মিটার করে দৌড়ে, যেটি ঘণ্টায় প্রায় ২৭ মাইলের সমান।গবেষক দলটি হিসাব করে দেখিয়েছে, দৌড় শুরু করার এক সেকেন্ডেরও কম সময়ের মধ্যে বোল্ট তাঁর সর্বোচ্চ শক্তিতে পৌঁছে যান, কিন্তু তখন তাঁর গতি থাকে সর্বোচ্চ গতির অর্ধেক। এর থেকে বাতাসের ধাক্কার তাত্ক্ষণিক প্রভাবটা বোঝা যায়। তাঁরা দেখেছেন, বোল্টের পেশিগুলো যে শক্তি উত্পাদন করে, এর ৮ শতাংশেরও কম ব্যয় হয় গতিতে, বাকি শক্তির পুরোটাই চলে যায় বাতাসের ধাক্কা সামলে দেহটাকে তেড়েফুঁড়ে এগিয়ে নিতে।

বোল্টের দেহের ভর তুলনা করার সময় দেখা গেছে, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ট্র্যাকের উচ্চতা এবং বাতাসের তাপমাত্রা বোল্টের বাতাসের ধাক্কা ভেদ করে এগিয়ে চলার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। প্রতি এক ভরে বোল্টের বাতাসের ধাক্কা ভেদ করার হিসাব বলছে, গড়পড়তা সাধারণ মানুষের তুলনায় বোল্টকে বেশি বাতাসের ধাক্কা সামলাতে হয়। অর্থাত্ বোল্টের জন্য কাজটা আরও বেশি কঠিন। কারণ, সাধারণ মানুষের তুলনায় এই বিশালদেহীকে বাতাস বেশি পরিমাণে ধাক্কা দিয়ে গতিরোধ করতে চায়।

ন্যাশনাল অটোনমাস ইউনিভার্সিটি অব মেক্সিকোর গবেষক হোর্হে হার্নান্দেজ মনে করিয়ে দিচ্ছেন, এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এক সেকেন্ডের এক শ ভাগের এক ভাগের এদিক-ওদিকও ১০০ মিটার দৌড়ে বিশাল কিছু। তাঁর বক্তব্য, বোল্ট যদি আরও হালকা ঘনত্বের বায়ুমণ্ডলের কোনো পৃথিবীতে দৌড়াতেন, অবশ্যই তাঁর গতি হতো আরও বেশি।

কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক জন ব্যারো এর আগে বিশ্লেষণ করেছিলেন, কীভাবে বোল্টের পক্ষে ৯.৫৮ সেকেন্ডের রেকর্ডটাও ভেঙে দেওয়া সম্ভব। তিনি জানাচ্ছেন, বোল্টকে বিশেষভাবে সাহায্য করে তাঁর লম্বা লম্বা পা ফেলে দৌড়ানোটাই। ‘ওর এমন অনেক পেশি তন্তু আছে, যেগুলো দ্রুত স্পন্দিত হওয়ার ফলে দ্রুততর সাড়া দিতে পারে। এর সঙ্গে তার লম্বা পদক্ষেপ মিলে ওকে এমন অসাধারণ গতি এনে দেয়।’ বলেছেন ব্যারো। দুম করে বন্দুকের গুলি ছোড়ার পর তাতে সাড়া দিতে বোল্টের দেরি হয়ে যায়।

এই স্টার্টিংটা আরও নিখুঁত করতে পারলে, দৌড়ের সময় বাতাস যদি অনুকূল দিকে প্রবাহিত হয়, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে বোল্ট যদি বেশি উঁচুতে দৌড়ান—তাহলে তাঁর পক্ষে ১০০ মিটারে নতুন বিশ্ব রেকর্ড গড়া সম্ভব বলেও রায় ব্যারোর।

বাংলাদেশ সময়: ১৪:০২:৪৬   ৩৮৬ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

খেলা’র আরও খবর


ভারতকে হারিয়ে টাইগারদের সিরিজ জয় নিশ্চিত
কোয়ার্টারে ব্রাজিল ক্রোয়েশিয়া মুখোমুখি
সুনামগঞ্জ স্টেডিয়ামে দু’দিনব্যাপী কুস্তি উৎসব কাল থেকে শুরু
অসাধারণ জয় ও দ্বিতীয় রাউন্ডে আর্জেন্টিনা
আর্জেন্টিনার জয় ও বাংলাদেশের উল্লাস -ভিডিও পোস্ট করল ফিফা
আজ মেসির জন্য মেক্সিকোর বিরুদ্ধে খেলাটি ‘বাঁচা-মরার লড়াই’
বিশ্ব কাপ ফুটবলে ইরানের কাছে হেরে গেল ওয়েলস
সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক নেয়া ফুটবল দলের ১০ কোচ
হার দিয়ে মেসিদের বিশ্বকাপ শুরু
শুরুর বাঁশিতে ফুটবলের পৃথিবী

আর্কাইভ