২. ১৯৪৭- ভারত ভাগ (উপমহাদেশের বিভাজন ) :
দ.মাউন্টব্যাটেনের পরিকল্পনা ও র্যাডক্লিফ রোয়েদাদ,
ধ.১৯৪৭ সালের ভারত শাসন আইন ,
দ.মাউন্টব্যাটেনের পরিকল্পনা ও র্যাডক্লিফ রোয়েদাদ :
মাউন্টব্যাটেনের পরিকল্পনা:
ব্রিটিশ ভারতের শাসনতান্ত্রিক রাজনৈতিক ইতিহাসে ভারতের শেষ গভর্ণর জেনারেল মাউন্টব্যাটেন পরিকল্পনা একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। কেননা,, এই পরিকল্পনায় প্রথম বারের মতো ভারতকে বিভক্ত করার কথা দ্ব্যর্থহীনভাবে ঘোষণা করা হয়। মূলতঃ ভারতে হিন্দু-মুসলমান সাম্প্রাদায়ের বিপরীতধর্মী স্বার্থে সমন্বয় করতে ব্যর্থ হয়ে ব্রিটিশ সরকার ভারতবর্ষকে বিভক্ত করে দুটি পৃথক রাষ্ট্র গঠনের সুপারিশ করে। ১৯৪৬ সালের প্রাদেশিক নির্বাচনের পর ভারতীয় উপমহাদেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা চরমে পৌঁছায়। কংগ্রেস নেতারাও এক সময় ত্যাক্ত বিরক্ত হয়ে ভারত বিভক্তিকেই সমস্যার সমাধান হিসাবে মেনে নেয়। ১৯৪৭ সালের ২০ ফেব্র“য়ারী হাউস অব কমন্সের সভায় বক্তৃতাদানকালে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী লর্ড এটলী ১৯৪৭ সালের জুন মাসের মধ্যে ভারতীয় নেতৃবৃন্দের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের ঘোষণা দেন। এই ঘোষণাকে বাস্তাবিকরূপ দানের জন্য ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী গভর্নর জেনারেল লর্ড ওয়াভেলের স্থলে লর্ড মাউন্ট ব্যাটেনকে ভারতের গভর্নর জেনারেল করে পাঠান। ১৯৪৭ সালের ২২ মার্চ মাউন্ট ব্যাটেন ভারতে আগমন করে ২৪ মার্চ শপথ নেন। তিনি ভারতের রাজনৈতিক শাসনতান্ত্রিক সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে ভারতের বিভিনড়ব রাজনৈতিক দল ও গোষ্ঠীর নেতাদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেন। কিন্তু ভারতের রাজনৈতিক সমস্যার শিকড় এত গভীরে গ্রোথিত ছিল যে তা উপরে ফেলা সম্ভব ছিলো না। বিশেষতঃ কংগ্রেস ও মুসলিম লীগকে কোন প্রস্তাবের ব্যাপারে ঐক্যবদ্ধভাবে রাজী করানো ছিলো সবচেয়ে কঠিন। এ প্রেক্ষাপটে ভারতের শেষ গভর্নর জেনারেল মাউন্টব্যাটেন ঘোষণা করেন, ভারত বিভক্তি ছাড়া ভারতের সমস্যা সমাধানের বিকল্প কোন পথ নেই। কংগ্রেস শেষ পর্যন্ত শান্তি প্রতিষ্ঠার আশায় মাউন্টব্যাটেনের পরিকল্পনায় তথা ভারতবর্ষ বিভক্তির পক্ষে মত দেয়। মুসলিম লীগ এ পরিকল্পনা দ্ব্যার্থহীন কণ্ঠে স্বাগত জানায়। কেননা,, মুসলিম লীগের দাবির প্রেক্ষিতেই ভারত বিভক্তির পরিকল্পনা করা হয়। ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে পরামর্শ সাপেক্ষে মাউন্টব্যাটেন ১৯৪৭ সালের ৩ জুন তার পরিকল্পনা ভারতীয় জনগণের নিকট পেশ করেন। এই পরিকল্পনার বৈশিষ্ট্যসমূহ নিম্নে আলোচনা করা হলোÑ
মাউন্টব্যাটেন পরিকল্পনার বৈশিষ্ট্যসমূহ -
(১) ভারতবর্ষকে বিভক্ত করে পাকিস্তান ও ভারত নামে ডোমিনিয়নের মর্যাদাসম্পন্ন দুটি পৃথক রাষ্ট্র গঠনের সুপারিশ করা হয়।
(২) এ পরিকল্পনায় বাংলা এবং পাঞ্জাব প্রদেশের জেলাগুলোকে সম্প্রদায়ভিত্তিক সংখ্যাগরিষ্ঠতার আলোকে পাকিস্তান অথবা ভারতের যে কোন একটিতে যোগ দেয়ার অধিকার প্রদান করা হয।
(৩) উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ, বেলুচিস্তান এবং আসামের সিলেট জেলা ভারত অথবা পাকিস্তান কোনটিতে যোগদান করবে তা গণভোটের মাধ্যমে স্থির করার সুপারিশ প্রদান করা হয়।
(৪) পরিকল্পনায় পাকিস্তান এবং ভারত নামক দুটি ডোমিনিয়নের সীমানা চিহ্নিত করার জন্য একটি সীমানা নির্ধারণ কমিশন গঠনের প্রস্তাব করা হয়।
(৫) পরিকল্পনায় পাকিস্তান এবং ভারতের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর সংক্রান্ত বিষয়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট কর্তৃক একটি সুনির্দিষ্ট আইন প্রণয়নের প্রস্তাব রাখা হয়।
(৬) পরিকল্পনায় চলতি গণ-পরিষদকে তার কার্য চালিয়ে যাওয়ার সুপারিশ করে এবং সাথে সাথে এটাও প্রস্তাব রাখা হয় যে, চলতি গণ-পরিষদ কর্তৃক শাসনতন্ত্র যে সকল অঞ্চল গ্রহণ করতে রাজি থাকবে না তাদের ওপর তা কার্যকরী হবে না।
(৭) এ পরিকল্পনায় ঘোষিত হয় যে, যে সকল অঞ্চল চলতি গণ-পরিষদের কাজকর্মে যোগদান করতে অনিচ্ছুক সে সকল অঞ্চলের গণ-প্রতিনিধিদের নিয়ে শাসনতন্ত্র প্রণয়নের উদ্দেশ্যে একটি গণ-পরিষদ গঠন করা হবে।
৮) সিন্ধু প্রদেশের আইনসভা সিন্ধান্ত গ্রহণ করবে যে, তারা চলতি গণ-পরিষদে যোগদান করবে কিনা।
(৯) নতুন ডোমিনিয়নদ্বয় কমনওয়েলথভুক্ত থাকবে কি না সেটা সম্পর্কে স্ব স্ব ডোনিনিয়নের গণ-পরিষদ সিন্ধান্ত গ্রহণ করবে।
র্যাডক্লিফ রোয়েদাদ/বাংলা ও পাঞ্জাবের বিভক্তি-
১৯৪৭ সালের ৩ জুনের পরিকল্পনায় ভারতবর্ষকে বিভক্ত করে পাকিস্তান ও ভারত নামে ডোমিনিয়নের মর্যাদাসম্পনড়ব দুটি রাষ্ট্র গঠনের সুপারিশ করা হয়। ভারতবর্ষের কংগ্রেস ও মুসলিম লীগ উভয়ই পরিকল্পনাটি গ্রহণ করে। ৩রা জুনের পরিকল্পনানুসারে ভারতের গভর্নর জেনারেল লর্ড মাউন্টব্যাটেন বাংলা ও পাঞ্জাব প্রদেশের বিভক্তিকরণের প্রশেড়ব এ দুটি প্রদেশের সীমানা নিধারণকল্পে সিরিল র্যাডক্লিফ (Cyril Redcliffe) কে প্রধান করে একটি বাউন্ডারী কমিশন গঠন করেন। তাঁর নামানুসারে কমিশনের নামকরণ হয় র্যাডক্লিফ কমিশন। উক্ত র্যাডক্লিফ কমিশন বাংলা প্রদেশকে বিভক্ত করে পূর্ব বঙ্গ ও পশ্চিম বঙ্গ এবং পাঞ্জাবকে বিভক্তি করে পূর্ব পাঞ্জাব ও পশ্চিম পাঞ্জাব হিসেবে সীমানা নির্ধারণ করেন। লর্ড মাউন্ডব্যাটেন উক্ত কমিশন কর্তৃক দুটি প্রদেশের নির্ধারিত সীমানা অনুমোদন করেন। এটাই র্যাডক্লিফ রোয়েদাদ হিসেবে পরিচিত।
১৯৪৭ সালের ৩ জুন লর্ড মাউন্টব্যাটেন ভারত বিভক্তির পরিকল্পনার কথা ঘোষনা করেন, তিনি ভারতের রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানে ভারতবর্ষকে বিভক্ত করে দুটি পৃথক রাষ্ট্র গঠনের সুপারিশ করেন। মুসলিম লীগ মাউন্ডব্যাটেন পরিকল্পনাকে স্বাগত জানায়, কেননা,, এতে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার দাবি মেনে নেয়া। হয়ে ছিলো। অন্যদিকে কংগ্রেস নীতিগতভাবে ভারত বিভক্তিকে সমর্থন না করলেও শান্তি প্রতিষ্ঠার আশায় মাউন্ট ব্যাটেনের পরিকল্পনা মেনে নেয়।
ধ. ১৯৪৭ সালের ভারত শাসন আইন :
ভারত স্বাধীনতা আইন -
লর্ড মাউন্ট ব্যাটেনের পরিকল্পনাকে বাস্তবায়িত করার জন্য ব্রিটিশ সরকার ১৯৪৭ সালের ১০ জুলাই যে আইন পাশ করে তা ভারত স্বাধীনাত আইন নামে পরিচিত। মূলতঃ এ আইনের মাধ্যমেই ভারতবর্ষে ব্রিটিশ শাসনের আবসান ঘটে। নিম্নে এ আইনের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলো আলোচনা করা হলো :
(১) দুটি ডোমিনিয়ান সৃষ্টি -
এ আইন ১৯৪৭ সালের ১৪ই আগষ্ট হতে ভারতে ব্রিটিশ শাসনের অবসান ঘটায় এবং ভারতকে বিভক্ত করে ভারত ইউনিয়ন এবং পাকিস্তান নামে দুটি নতুন ডোমিনিয়ন সৃষ্টি করে। এ আইন উক্ত ডোমিনিয়ন দুটির আইনগত সার্বভৌমত্ব (খবমধষ ঝড়াবৎবরমহঃু) স্বীকার করে।
(২) সীমানা নির্ধারণ -
এ আইন অনুসারে সাবেক উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ, সিন্ধু, বেলুচিস্তান, পশ্চিম পাঞ্জাব, সাবেক পূর্ব বাংলা ও সিলেট জেলার মুসলমান প্রধান অঞ্চলগুলো নিয়ে পাকিস্তান গঠিত হবে এবং মাদ্রাজ, যুক্ত প্রদেশ, মধ্য প্রদেশ, বিহার, পূর্ব পাঞ্জাব, পশ্চিম বাংলা, সিলেট জেলার মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকা ছাড়া আসাম, দিল্লী, আজমীর, নিয়ে ভারতীয় ইউনিয়ন গঠিত হয়।
(৩) ডোমিনিয়নের গণপরিষদ -
১৯৪৭ সালের ভারত স্বাধীনতা আইন অনুসারে পাকিস্তান ও ভারত ডোমিনিয়নের গণপরিষদের (Constituent Assemble)) কাছে নতুন শাসনতন্ত্র রচনার ক্ষমতা অর্পন করা হয়, নিদ্ধান্ত হয়, নতুন শাসনতন্ত্র রচনার আজ্ঞা পর্যন্ত উক্ত গণপরিষদ দুটো স্ব স্ব দেশের আইন সভারূপেও কাজ করে যাবে। সুতরাং গণপরিষদের কাজ হলো, দুটি ভবিষ্যতের জন্য শাসনতন্ত্র প্রণয়ন এবং কেন্দ্রীয় আইনসভার কার্য সম্পাদন।
(৪) গভর্নর জেনারেলের পদ -
এ আইনের কেন্দ্রীয় শাসনের ব্যাপারে উভয় ডোমিনিয়নের জন্য একজন করে গভর্নর জেনারেল থাকবে এবং ডোমিনিয়ন কেবিনেটের পরামর্শ মে ইংল্যাণ্ডের রাজা কর্তৃক গভর্নর জেনারেল নিযুক্ত হবেন। তবে তিনি হবেন, একজন নিয়মতান্ত্রিক প্রধান মাত্র। আইনসভার নিকট দায়িত্বশীল মন্ত্রিসভার পরামর্শ অনুযায়ী তিনি কাজ করবেন। তার ব্যক্তিগত বিচার বুদ্ধি ((Individul Judgement) ও স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা ((Discretionery Powers)) বিলুপ্ত হবে।
(৫) কমনওয়েলথ প্রসঙ্গ -
এ আইনের মাধ্যমে ডোমিনিয়নদ্বয় ব্রিটিশ কমনওয়েলথভুক্ত থাকবে কিনা সে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার পূর্ণ অধিকার তাদের প্রদান করা হয়।
(৬) প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসন -
১৯৪৭ সালের ভারত স্বাধীনতা আইন ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইনের কিছুটা পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করে প্রাদেশিক শাসনব্যবস্থায় দায়িত্বশীল সরকার প্রতিষ্ঠা করে। ভারত স্বাধীনতা আইনে ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইনে প্রাদেশিক গভর্নরদের যে বিশেষ ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছিল তা বিলুপ্ত হয়। এখন হতে তারা হলেন
প্রদেশে গভর্নর জেনারেলের প্রতিনিধি মাত্র। তারা কোন বিশেষ ক্ষমতার অধিকারী না হয়ে বরং নিয়মতান্ত্রিক শাসক বলে পরিগণিত। মন্ত্রিসভা প্রাদেশিক আইনসভার নিকট দায়ী থাকবে এবং প্রাদেশিক গভর্নর মন্ত্রিসভার পরামর্শ অনুসারে কার্য সম্পনড়ব করবেন।
(৭) ব্রিটিশ সরকারের কর্তৃত্বের অবসান -
এ আইন অনুসারে ১৯৪৭ সালের ১৪ই আগস্টের পর হতে ডোমিনিয়ন বা প্রদেশগুলোতে শাসন ব্যাপারে ব্রিটিশ সরকারের সর্বপ্রথম কর্তৃত্বের পরিসমাপ্তি ঘটে। উভয় ডোমিনিয়নই ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইন পরিবর্তন ও পরিবর্ধিত করে শাসন পরিচালনার ক্ষমতা লাভ করে। উভয় ডোমিনিয়নের আইনসভা কর্তৃক প্রণীত আইনকে বাতিল করার কোন ক্ষমতা ব্রিটিশ সরকারের রইল না।
(৮) দেশীয় রাজ্যগুলোর স্বাধীনতা -
এ আইনের মাধ্যমে দেশীয় রাজ্যসমূহের উপর ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের প্রাধান্যের অবসান ঘটে। এর মাধ্যমে দেশীয় রাজ্যগুলোর সাথে সম্পাদিত সকল চুক্তি এবং সন্ধি ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট হতে বাতিল বলে ঘোষণা করা হয়। উপরন্ত, এ আইনের মাধ্যমে দেশীয় রাজ্যগুলোকে ইচ্ছামত ভারতে বা পাকিস্তানে যোগদান করার স্বাধীনতা প্রদান করা হয়।
(৯) ভারত সচিবের পদ বিলুপ্তি -
১৯৪৭ সালের ভারত স্বাধীনতা আইন ভারত সচিবের পদকে বিলুপ্ত করে। ভারতে বা পাকিস্তানের শাসনক্ষেত্রে নীতি নির্ধারণের দায়িত্ব আর হোয়াইট হলের (ডযরঃব ঐধষষ) উপর না থেকে দিলী ও করাচীর উপর ন্যস্ত হয়।
মূলতঃ মাউন্টব্যাটেন পরিকল্পনার আলোকে ১৯৪৭ সালের ১৪ এবং ১৫ আগস্ট পাকিস্তান এবং ইন্ডিয়া (ভারত) নামে দুটি স্বতন্ত্র, স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়।
ক্স ভারত স্বাধীনতা আইনের তাৎপর্য :
১৯৪৭ সালের ভারত স্বাধীনতা আইনের গুরুত্ব অপরিসীম। নম্নিে তা আলোচনা করা হলো-
১. ১৯৪৭ সালের ভারত স্বাধীনতা আইন ব্রিটিশ ভারতের রাজনৈতিক ও শাসনতান্ত্রিক সমস্যা সমাধানের পথে সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ ও সর্বশেষ পদপেক্ষপ এর মাধ্যমেই ভারতের স্বাধীনতা নিশ্চিত হয়।
২. এই আইন দ্বারা সুদীর্ঘ প্রায় ২০০ বছরের ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের অবসান এবং দুটি স্বাধীন রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটে।
৩. এই আইন দ্বারা গভর্নর জেনারেল ও গভর্নরের স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা বিলুপ্ত করায় ভবিষ্যতে ভারত ও পাকিস্তানের সংসদীয় ও দায়িত্বশীল সরকার প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হয়।
৪. সশস্ত্র যুদ্ধ বা বিনা রক্তপাতে এই আইন দ্বারা ভারতবর্ষ বিভক্তির মাধ্যমে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম হয়। তবে এই আইনের কিছু কিছু ক্ষেত্রে অস্পষ্টতার কারণে দেশীয় রাজ্য বিশেষ করে অঙ্গরাজ্যগুলো কিভাবে দুটি স্বাধীনে রাষ্ট্রের সাথে যুক্ত হবে, সে সম্পর্কে সুস্পষ্ট বিধান না থাকায় কাশ্মীরসহ অনেক সমস্যার সৃষ্টি হয়। এই আইনে মূল লাহোর প্রস্তাবকে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। বাংলা ও পাঞ্জাবের মতো দুটি সমৃদ্ধ প্রদেশকে সাম্প্রদায়িকভাবে বিভক্ত করা হয়েছে।
লর্ড মাউন্টব্যাটেনের ভারত বিভক্তির পরিকল্পনা ব্রিটিশ সরকার ১৯৪৭ সালের ১০ জুলাই পাশ করে। পাশকৃত এ আইনই ভারত স্বাধীনতা আইন নামে পরিচিত। এ আইনের মাধ্যমে ভারতবর্ষে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের অবসান হয়। পৃথিবীর মানচিত্রে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসাবে ভারত ও পাকিস্তানের অভ্যুদ্বয় ঘটে। (চলবে)
তথ্যসূত্র : বুকস্ , ইন্টারনটে ৷
লেখক : ফারহানা আকতার, ডিরেক্টর এন্ড এ্যাসোসয়িটে প্রফসের, ইন্টারন্যাশনাল রবীন্দ্র রিচার্স ইনস্টটিউিট, কলামস্টি, কথাসাহত্যিকি
বাংলাদেশ সময়: ২৩:৫০:৩০ ৬৭৬ বার পঠিত # #ইতিহাস #উপমহাদেশের বিভাজন #নতুন প্রজণ্ম #মুক্তিযুদ্ধ