,বঙ্গ-নিউজ ডটকম:নির্বাচন ঘনিয়ে আসছে। সরকার-বিরোধী পক্ষ একে অপরের মুখোমুখি। কেউ শুনছে না কারও কথা। প্রত্যেকে নিজ নিজ অবস্থানে অনড়। সমঝোতার কোন আলামত নেই। সামনে শুধু দ্বন্দ্ব আর সংঘাত এমন আশঙ্ক বিশ্লেষকদের। প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ইতিমধ্যে ঈদপরবর্তী একদফা আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে। তার প্রধান মিত্র বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আগামী ১৩ ও ১৪ই আগস্ট দেশব্যাপী ৪৮ ঘন্টার হরতাল ঘোষণা করেছে। এতে ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র আতঙ্ক। ব্যবসায়ী সম্প্রদায় রয়েছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায়। ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) প্রেসিডেন্ট কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ ও জানিয়েছেন এমন শঙ্কার কথা। মানবজমিন অনলাইনকে দেয়া প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, সবার একই প্রশ্ন কি হতে যাচ্ছে ঈদের পর। এক অজানার পথে এগুচ্ছে দেশ। কোথাও কোন আলো দেখা যাচ্ছে না। চারদিকে শুধু অন্ধকার। ঈদের পর রাজনৈতিক মাঠ গরম হয়ে উঠছে। ইতিমধ্যে একটি দল হরতাল ডেকেছে। আমরা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছি। এখনও জানাচ্ছি উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের ধারা সমুন্নত রাখার স্বার্থে এবং পবিত্র ঈদ নির্বিঘœভাবে উদযাপন ও জনগণের যাতায়াতের সুবিধার্থে ঈদ পরবর্তী হরতাল প্রত্যাহারের জন্য জামায়াতে ইসলামীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছে এফবিসিসিআই। তিনি আরও বলেন, এক মাস পবিত্র সিয়াম সাধনার পর ধর্মপ্রাণ মুসলমান ও দেশের জনগণ অত্যন্ত আনন্দঘন পরিবেশে ঈদ পালন করেছেন। এ উপলক্ষে অধিকাংশ মানুষ রাজধানী ঢাকার বাইরে নিজ নিজ গ্রামে নিকটজনদের সঙ্গে ঈদ পালনের জন্য ঢাকা ত্যাগ করেছেন। তারা ঈদ পালন শেষে পরিবারসহ ঢাকায় ফিরে আসবেন। কিন্তু আগামী ১৩ ও ১৪ই আগস্ট টানা ৪৮ ঘণ্টা দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা হরতাল সবাইকে শঙ্কিত ও আতঙ্কিত করে তুলেছে। এফবিসিসিআই প্রেসিডেন্ট আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন- ঈদ পরবর্তী এ হরতালের ফলে ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্প কারখানা চালু রাখা, কর্মজীবীদের কর্মস্থলে যোগদান, ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কার্যক্রম ও পড়াশোনা স্বাভাবিক রাখা এবং আপামর জনগণের চলাচল অনিশ্চিত করে তুলবে। পরিবহন ও আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে বিঘœ ঘটবে। উদ্বেগ প্রকাশ করে এফবিসিসিআই এ নেতা বলেন, ঘন ঘন হরতালের মতো ধ্বংসাত্মক কর্মসূচি দেশের অর্থনীতিকে চরম বিপর্যয় এবং এক অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এছাড়া হরতাল আহবান করায় দেশে যে সংঘাত ও সংঘর্ষের রাজনৈতিক সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে তার ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন কার্যক্রম। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত হচ্ছে, জাতীয় প্রবৃদ্ধি ও জনগণের আয়ের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এ নিয়ে দেশের ব্যবসায়ী সমাজ গভীর উদ্বিগ্ন বলে জানান তিনি। রাজনৈতিক সমঝোতার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না- তো আপনাদের পরিকল্পনা কি? জানতে চাইলে ব্যবসায়ী এ নেতা বলেন, সংঘাত কারও জন্য কল্যাণ বয়ে আনে না। এ সরকার না হলে অন্য সরকার আসবে। কিন্তু সবাইকে দেশ চালাতে হবে। বিপর্যস্ত অর্থনীতি নিয়ে দেশ চালানো সম্ভব নয়। আমরা বার বার আলোচনায় বসতে বলেছি। কিন্তু কেউ আমাদের কথা শুনছে না। এর বাইরে আমাদের আর করার কিছু নেই। বিরোধী দলীয় নেতা ও বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন- তার কি হলো? জানতে চাইলে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের চেয়ারম্যান কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা সময় চেয়ে আবেদন করেছি। তিনি এখনও সময় পাননি। তবে সময় পেলে ডেকে নেবেন, আশা এফবিসিসিআই প্রেসিডেন্টের। এ মুহূর্তে ব্যবসায়ীদের করণীয় প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ব্যবসায়ী এ নেতা বলেন, এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না। ঈদপরবর্তী বোর্ড মিটিংয়ে এ বিষয়ে ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের করণীয় ঠিক করা হবে বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ২৩:২৭:১৭ ৩৭০ বার পঠিত