ড. বাকী বিল্লাহ বিকুল: রচিত গ্রন্থ, গবেষণা ও জীবনী

Home Page » সাহিত্য » ড. বাকী বিল্লাহ বিকুল: রচিত গ্রন্থ, গবেষণা ও জীবনী
বুধবার, ২৮ এপ্রিল ২০২১



ড. বাকী বিল্লাহ বিকুল ও তাঁর গ্রন্থ

 ড. বাকী বিল্লাহ বিকুল

ড. বাকী বিল্লাহ বিকুল ( জন্ম : ২৫.০২.১৯৭৭) বাংলাদেশি শিক্ষক, লেখক, গবেষক, কবি, কলামিস্ট  ও রাজনীতি বিশ্লেষক। তাঁর লেখার বিষয়বস্তু উনিশ শতকের কবি-সাহিত্যিক ও আধুনিক সাহিত্য এবং ইতিহাস। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে বিশদ গবেষণা করেছেন। প্রবন্ধ-গবেষণা তাঁর প্রধান বিচরণ ক্ষেত্র হলেও কবিতা রচনাকে একধরনের দায়বদ্ধতা, সময়েতিহাস ও প্রেম বলে তিনি মনে করেন।

প্রাথমিক জীবন :
ড. বাকী বিল্লাহ  বিকুল ১৯৭৭ সালের ২৫ ফেব্রয়ারি মাগুরা জেলার মহম্মদপুর থানার অন্তর্গত বিনোদপুর ইউনিয়নের উরুড়া গ্রামের বিশ্বাস পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁর পিতা আপ্তাব উদ্দিন বিশ্বাস বাংলাদেশের মহান  স্বাধীনতা যুদ্ধের অন্যতম বীরসৈনিক, মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। মাতার নাম মিসেস শাহিদা বেগম। তিনি নয় ভাইবোনের মধ্যে চতুর্থ। ভাইদের মধ্যে তৃতীয়। তাঁর জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা বাবুল ইসলাম বাবু পরিবারসহ লন্ডনে বসবাস করেন। তাঁর আর এক ভাই এ্যাড. ড. ওহিদুর রহমান টিপু, লন্ডন, ম্যানচেষ্টারের দীর্ঘদিন ধরে কনস্যূলার ছিলেন। তিনি বর্তমানে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী পার্টি বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। বাকী বিল্লাহ বিকুল ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়,
কুষ্টিয়ার বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ থেকে ১৯৯৬ সালে স্নাতক, ১৯৯৭ সালে  স্নাতকোত্তর  ও ২০০৯ সালে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।

কর্মজীবন :
ড. বাকী বিল্লাহ বিকুল কুষ্টিয়া জেলার হালসা আদর্শ ডিগ্রি কলেজে ২০০২ সালে যোগদানের মাধ্যমে শিক্ষকতা জীবন শুরু করেন। ২০১০ সালে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় বাংলা বিভাগে প্রভাষক পদে যোগদান
করে বর্তমানে  সহযোগী অধ্যাপক পদে কর্মরত আছেন। কিছুদিনের মধ্যে অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পাবেন।

লেখকের সংক্ষিপ্ত জীবন-আখ্যান :
ড. বাকী বিল্লাহ বিকুল-এর সাহিত্যচর্চা শুরু নব্বই দশকে। বেশিরভাগ সাহিত্যিকের মতোই তিনিও সাহিত্যজগতে প্রবেশ করেন কবিতা লেখার মধ্য দিয়ে। ১৯৯১ সালে ঢাকা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজে এইচ.এস.সি শ্রেণিতে পড়বার সময় সহপাঠী বন্ধু নারায়ণগঞ্জের মিজমিজির হুমায়ুন ক্লাস ডায়েরি থেকে লেখকের লেখা প্রথম কবিতাগুলো টুকে নিয়ে ঢাকা এবং নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন দেয়ালিকায় প্রকাশ করেছিলেন। কলেজ জীবন শেষ হবার প্রাক্কালে বন্ধু আরো কিছু কবিতা নিয়ে গিয়ে কয়েকটি ম্যাগাজিনে সেই সময় প্রকাশ করেছিলেন। প্রকাশিত সেইসব কবিতার কিছু ফটোকপি তিনি লেখককে সরবরাহ করেছিলেন কিন্তু ‘ছাত্রজীবনের নানা পথপরিক্রমায়, বাসা বদলের দিনে সেগুলো টিনের বাক্স থেকে এক সময় হারিয়ে যায়। সেইসব কবিতার সন্ধান তিনি আজো করে চলেছেন। তিনি তার এক স্টাটাসে উল্লেখ করেছেন, ‘আমি আমার সেই বন্ধুকে খুঁজে চলেছি। তাঁর কাছে রয়েছে আমার অনেক ইতিহাস। বিশেষত কবিতার।’ রাজধানী ঢাকা ছেড়ে কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৯৩-১৯৯৪ শিক্ষাবর্ষে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে ভর্তি হন। কলেজ জীবন থেকে যে লেখালেখির সূচনা হয়েছিলো তা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে আরো বেগবান হয়ে ওঠে। একজন মেধাবী প্রগতিশীল ঘরানার ছাত্রনেতা ও সংস্কৃতিবান শিক্ষার্থী হিসেবে তৎকালীন সময়ে তিনি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন। এই সময় কুষ্টিয়া থেকে প্রকাশিত ঐতিহ্যবাহী চৌধুরী পরিবারের জাতীয় দৈনিক ‘আন্দোলনের বাজার’ এবং এই পরিবারের বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব, বিশিষ্ট গবেষক, ফোকলোরবিদ অধ্যাপক ড. আবুল আহসান চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ সান্নিধ্য লেখকের জীবন বদলে দিতে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে বলে জানা যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের দীর্ঘ ছাত্রজীবনে ‘আন্দোলনের বাজার’ পত্রিকায় একাধারে নানা সংগঠন সংবাদ প্রেরণ, বহু কলাম ও ছোটোগল্প প্রকাশের মধ্য দিয়ে লেখালেখির জগতে ছাত্রজীবন থেকেই তিনি বিশেষ পরিচিতি লাভ করতে থাকেন। ১৯৯৪-২০০১ সাল পর্যন্ত তারও পরে পিএইচডি গবেষণায় যুক্ত থাকার ফলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশিত নানা ম্যাগাজিনে তাঁর বহু লেখা সেখানে প্রকাশিত হবার সুযোগ পায়। শিক্ষার্থী জীবনের লেখালেখির যে ধারা চলছিলো তার গতি আজো প্রবলভাবে প্রবহমান। একের পর এক তিনি এখন নানা বিষয়ের ওপর প্রতিবছর একাধিক গ্রন্থ রচনায় পারঙ্গমতার স্বাক্ষর  রেখে চলেছেন।  লেখক নিজেকে শুধুমাত্র কবি পরিচয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে চান না। তিনি কার্যত একজন বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক। আধুনিক বাংলা সাহিত্যের বিভিন্ন শাখা বিশেষত উপন্যাসের ক্ষেত্রে তাঁর রয়েছে বিশেষ আগ্রহ। তিনি এখন একাধারে নিয়মিত গবেষণাধর্মী প্রবন্ধচর্চা , কবিতা লেখা, জাতীয় পত্রিকায় বিভিন্ন বিষয়ের ওপর কলাম লেখা ও ছোটোগল্প লেখায় মুন্সিয়ানার পরিচয় দিয়ে চলেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনার জন্যে তাঁকে নিয়মিত একাডেমিক লেখালেখির সঙ্গেও যুক্ত থাকতে হয়। দেশিয় ও আন্তর্জাতিক জার্নালে  তাঁর বহুসংখ্যক গবেষণাধর্মী প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। এক সময় ড. বাকী বিল্লাহ বিকুল ‘সাপ্তাহিক কুষ্টিয়ার মুখ’ পত্রিকা সম্পাদনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। দীর্ঘদিন তিনি  এ পত্রিকাটির ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন।


সাহিত্যকর্ম :

কাব্যগ্রন্থ :
মায়াবী উঠোন , ঝিনুক, ঢাকা, ২০১৬
হলুদ বসন্ত, ঝিনুক, ঢাকা, ২০১৬
স্বদেশলক্ষ্মীর  তিমিররাত্রি [যৌথকাব্য] গ্রাফোসম্যান, ঢাকা, ২০১৬
খোকাকে খোলা চিঠি ও অন্যান্য কবিতা, গ্রাফোসম্যান প্রকাশনী, ঢাকা, ২০১৭
খোঁপার গোলাপে প্রেম নেই, শোভা প্রকাশ, ঢাকা, ২০১৯
নরক আমার বোন, শোভা প্রকাশ, ঢাকা, ২০২০
আলো অন্ধকারে যায়, শোভা প্রকাশ, ঢাকা, ২০২১

প্রবন্ধগ্রন্থ :
বাংলা উপন্যাসে নদী : সমাজ ও শ্রমজীবী মানুষ, ঝিনুক , ঢাকা, ২০১৫
অবিনাশী রবীন্দ্রনাথ, গ্রাফোসম্যান প্রকাশনী, ঢাকা, ২০১৭
বঙ্গবন্ধু : মননে সৃজনে, ঝিনুক প্রকাশনী, ঢাকা, ২০১৯
কথাসাহিত্যে নদীজীবন বহুকৌণিক দৃষ্টি, শোভা প্রকাশ, ঢাকা, ২০১৯
কথাসাহিত্য ও কবিতা ভাবনার অন্তস্বর, শোভা প্রকাশ, ঢাকা, ২০২১

সম্পাদিত গ্রন্থাবলী :
রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদীর জিজ্ঞাসা, অ্যাডর্ন, ঢাকা, ২০১১
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সেঁজুতি, ঝিনুক, ঢাকা, ২০১৬
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিনে, ঝিনুক, ঢাকা,২০১৬
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শেষলেখা, ঝিনুক, ঢাকা, ২০১৬
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রাজা, ঝিনুক, ঢাকা, ২০১৭
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রক্তকরবী, ঝিনুক, ঢাকা, ২০১৭
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অচলায়তন, ঝিনুক, ঢাকা, ২০১৭
সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর ছোটগল্প, ঝিনুক, ঢাকা, ২০১৬
সৈয়দ ওয়ালীউল্লার্হ উজানে মৃত্যু, নুসরাত প্রকাশনী, ঢাকা, ২০১৬
সৈয়দ ওয়ালীউল্লার্হ তরঙ্গ ভঙ্গ, নুসরাত প্রকাশনী, ঢাকা, ২০১৬
সৈয়দ ওয়ালীউল্লার্হ চাঁদের অমাবস্যা, নুসরাত প্রকাশনী, ঢাকা, ২০১৬
নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের ছোটগল্প, ঝিনুক, ঢাকা, ২০১৬
উৎপল দত্তের টিনের তলোয়ার, ঝিনুক, ঢাকা, ২০১৬
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের রাজসিংহ, ঝিনুক, ঢাকা, ২০১৭
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের চিহ্ন, ঝিনুক, ঢাকা, ২০১৭
তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের পঞ্চগ্রাম, ঝিনুক, ঢাকা, ২০১৭
ফোকলোর তত্ত ¡ও বাংলার লোকসাহিত্য, ঝিনুক, ঢাকা, ২০১৭
হাসান আজিজুল হকের সুনির্বাচিত গল্প, ঝিনুক, ঢাকা, ২০১৭
হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ঝিনুক প্রকাশনী, ঢাকা, ২০২০
কাজী নজরুল ইসলামের তিনটি কাব্য পাঠ-পরিক্রমা, [যৌথ], বুক্স ফেয়ার, ঢাকা, ২০২০

প্রশাসনিক যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা :
পরিচালক, টিএসসিসি, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, ৩০/১০/২০১৮
সহকারী প্রক্টর, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় , ০৮/৬/২০১১-০৮/৬/২০১২
সহকারী প্রক্টর, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, ১২/২/২০১৩-১২/২/২০১৪
বি.এন.সি.সি. প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ক্যাডেট, সুন্দরবন রেজিমেন্ট, খুলনা

পুরস্কার ও সম্মাননা :
ত্রৈমাসিক সাহিত্য দিগন্ত Íপুরস্কার, ২০২০, ঢাকা
কবি ওমর আলী স্বর্ণপদক , ২০১৮, ঢাকা
দৈনিক বাঙ্গালীর কণ্ঠ পুরস্কার ২০১৮, ঢাকা
চারণ কবি বিজয় সরকার ফাউন্ডেশন সম্মাননা-২০১১, নড়াইল
কবি রোকেয়া রহমান সাহিত্যচর্চা কেন্দ্র সম্মাননা-২০০৬, কুষ্টিয়া
জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ পুরস্কার-১৯৯৮, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
‘২১ ফেব্রুয়ারি -১৯৯৮’ রচনা প্রতিযোগিতা পুরস্কার, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
‘স্বাধীনতার রজত জয়ন্তী উদ্যাপন-১৯৯৭’ রচনা প্রতিযোগিতা পুরস্কার, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
‘জাতীয় শিশু-কিশোর সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা-১৯৯০’ রচনা প্রতিযোগিতা পুরস্কার, মাগুরা
‘জাতীয় শিশু-কিশোর সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা-১৯৮৯’ রচনা প্রতিযোগিতা পুরস্কার, মাগুরা

ড. বাকী বিল্লাহ বিকুল

ড. বাকী বিল্লাহ বিকুল ও তাঁর গ্রন্থ

ড. বাকী বিল্লাহ বিকুল

ড. বাকী বিল্লাহ বিকুল গ্রন্থ

ড. বাকী বিল্লাহ বিকুল গ্রন্থ

ড. বাকী বিল্লাহ বিকুল

বাংলাদেশ সময়: ২১:৩৯:১৮   ১৪৩৩ বার পঠিত   #  #  #  #  #  #  #  #  #  #  #  #  #  #




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

সাহিত্য’র আরও খবর


সাধক কবি রামপ্রসাদ সেন: স্বপন চক্রবর্তী
ড. গোলসান আরা বেগমের কবিতা “আমি তো গাঁয়ের মেয়ে ”
৫০ বছরের গৌরব নিয়ে জাবির বাংলা বিভাগ বিশাল ‘সুবর্ণ জয়ন্তী’ উৎসব আয়োজন করেছে
অধ্যক্ষ ড. গোলসান আরা বেগমের কবিতা- ‘তোমার খোঁজে ‘
অতুলপ্রসাদ সেন: ৩য় (শেষ ) পর্ব-স্বপন চক্রবর্তী
অতুলপ্রসাদ সেন;পর্ব ২-স্বপন চক্রবর্তী
অতুলপ্রসাদ সেন-স্বপন চক্রবর্তী
অধ্যক্ষ ড. গোলসান আরা বেগমের কবিতা ” যাবে দাদু ভাই ?”
বাদল দিনে- হাসান মিয়া
ইমাম শিকদারের কবিতা ‘ছোট্ট শিশু’

আর্কাইভ