ব্যুরো চিফ, ফরিদপুরঃ-
সারাবিশ্ব বর্তমানে কোভিড-১৯ মহামারী ভাইরাসের কারনে বিপর্যস্ত। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। দীর্ঘ এক বছরের বেশি সময় যাবৎ কোভিড-১৯ ভাইরাসের কারণে হাজার হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করেছেন, সংক্রমিত হয়েছে কয়েক লক্ষ মানুষ। এছাড়াও এই ভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে মানুষের শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। ফলে মানুষ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। বর্তমানে বাংলাদেশে এই মহামারী ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ উর্ধ্বগতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি মোকাবেলায় বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশক্রমে দেশব্যাপী কঠোর লক ডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক সারাদেশ চলছে কঠোর লকডাউন।
এমতাবস্থায় রাজবাড়ী জেলাবাসীকে এই মহামারী থেকে সুরক্ষিত রাখতে রাজবাড়ী জেলা প্রশাসক, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী এং সমাজসচেতন ব্যক্তিবর্গ যখন সর্বস্তরের সাধারণ জনগনকে “স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা” এবং রাজবাড়ীতে করোনা ভাইরাস রোধে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিচ্ছেন, ঠিক তখনই একদল অসাধু ব্যবসায়ী তাদের কার্যক্রমকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে রাজবাড়ী বাসীকে মৃত্যুর দারপ্রান্তে ঠেলে দিয়ে নিজেদের পুঁজি এবং আয়-রোজগার বৃদ্ধির অসৎ উদ্দেশ্যে লিপ্ত।
এ চক্র বর্তমানে বাংলাদেশের অধিক সংক্রমিত জেলা নারায়নগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর ও শিবচরের মত স্থান হতে বালু ব্যবসায়ীদের সাথে আঁতাত করে অবৈধভাবে উত্তোলনকৃত বালু বিক্রয়ের জন্য প্রতিদিন নদীপথে প্রায় ২০০ বাল্কহেড যোগে আনুমানিক ১৬০০ শ্রমিক জৌকুড়া ও ধাওয়াপাড়া ঘাটে নিয়ে এসে তাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। এই শ্রমিকরা অধিকাংশই স্বাস্থ্যবিধি না মেনে জৌকুড়া ও ধাওয়াপাড়া এলাকায় অবস্থান করছে এবং জনসমাগমে মেলামেশা করছে। ফলশ্রুতিতে উক্ত স্থানের লোকজন করোনা ভাইরাসের বাহক হয়ে তাদের পরিবারে এবং পর্যায়ক্রমে রাজবাড়ী জেলার সর্বস্তরে ছড়িয়ে পড়ছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে রাজবাড়ী জেলায় করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং ধাওয়াপাড়া- জৌকুড়া তথা এলাকার জনমানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি কয়েকগুণ বেড়ে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতির কারণে এলাকাবাসীর মধ্যে ভয়ঙ্কর আতঙ্ক বিরাজ করছে এবং তারা ক্রমেই বেচে থাকার মানসিক শক্তি হারিয়ে ফেলছেন।
বর্তমানে বাংলাদেশের এই কঠিন সংকটকালে জৌকুড়া ও ধাওয়াপাড়া এলাকাবাসী তথা রাজবাড়ীবাসীর স্বাস্থ্যঝুঁকি কমানোর এবং সরকারের লকডাউন কার্যক্রম নিশ্চিত করার জন্য কোভিড-১৯ সংক্রমণ রোধকল্পে অসাধু ব্যবসায়ীদের অবৈধ কার্যক্রম বন্ধের জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী করেন স্থানীয় কয়েকজন ভুক্তভোগী বাসিন্দা।
সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ ইব্রাহীম টিটন বলেন, স্বাস্থ্যবিধি কার্যকর করার বিষয়টি জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের কাজ। তারপরেও কোন লিখিত অভিযোগ পেলে বিষয়টি দেখবো।
জেলা প্রশাসক দিলশাদ বেগম বলেন, উন্মুক্ত স্থানে লকডাউনে কাজ বন্ধ রাখার ব্যাপারে আমাদের কোন নির্দেশনা নেই। তবে ঐ স্থানে শ্রমিকরা যদি স্বাস্থ্যবিধি না মেনে চলে সেক্ষেত্রে আমরা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নিবো।
বাংলাদেশ সময়: ২১:২০:০৯ ৬১২ বার পঠিত #করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি #কোভিড-১৯ #রাজবাড়ী