সত্যিকার অর্থে, আমার এই কলামটি যখন আমি লিখতে বসি তখন খুব ইমোশনাল হয়ে হয়ে যাই, কোথা থেকে শুরু করবো কিছুই বুঝে উঠতে পারিনা ৷ অনেক সময় ধারাবাহিকতা রাখতে পারিনা ! শুরুতে মনে হয়ছিল , লেখাটি শুধু ১৯৭১ সালে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বর্ননার মাঝেই বুঝি সীমাবদ্ধ থাকবে কিন্তু পাঠকরা যখন ‘ভাষা আন্দোলন’ এর ইতিহাসটি লেখার জন্য অনুরোধ জানালো তখনই আমি বুঝতে পারলাম যে, অল্প কথায় শেষ করবার মতো কলাম এটি নয়৷ আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রসঙ্গ এলেই সঙ্গতঃ কারনে ভাষা আন্দোলনের প্রসঙ্গটি চলে আসে এবং ভাষা আন্দোলনের প্রসঙ্গ এলেই দেশ-বিভাজন তথা ভারত,বাংলাদেশ ও পাকিস্তান (এই উপমহাদেশ) এর ইতিহাস জানবার বিষয়টি চলে আসে এবং তার উপর আবার আমার জন্ম বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রায় এক দশক পরে ৷সুতরাং বাংলাদেশের এই জেনারেশনের একজন সুনাগরিক হিসেবে এই বিষয়গুলো সম্পর্কে সবকিছু আমার ধারাবাহিকভাবে না জানবারই কথা ৷আমি যতটুকু জেনেছি তার সবটাই গবেষণা,পড়াশুনা ও বড়দের কাছ থেকে শুনে শুনে জেনেছি ৷অতএব, পাঠকদের কাছে আমার অনুরোধ রইলো, কোথাও যদি আমার নিজের অজান্তে অনিছ্ছাকৃত কোনো ভুল হয়ে থাকে , সেটা নিজ গুনে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন৷
ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপট অত্যন্ত বিশাল ,বলা যেতে পারে এটি ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত বিস্তৃত। আর এই বিশাল প্রেক্ষাপটে ততোধিক বিশালত্ব নিয়ে বিরাজিত একটি নাম- বঙ্গবন্ধু—শেখ মুজিবুর রহমান। ভাষা আন্দোলন ও বঙ্গবন্ধু, বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতা সংগ্রাম, বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ—-একটি অন্যটির সঙ্গে এমনি অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত যে একটিকে ছেড়ে অন্যটি কল্পনায় আসে না। একে অন্যের সঙ্গে অবিচ্ছিন্ন সম্পর্কে জড়িত। তাই এসব বিষয়ে কিছু বলতে গেলে বঙ্গবন্ধু প্রসঙ্গে আসতেই হয় আমাদের।
১৯৪৭ সালে পাকিস্তান জন্মের আগেই প্রস্তাবিত পাকিস্তানের শাসকদের স্বরূপ উন্মোচিত হতে থাকে এবং একই সঙ্গে এ অঞ্চলের তখনকার যুবসমাজ নিজেদের অধিকার রক্ষার চিন্তা করতে শুরু করে। প্রথম বৈঠকটি হয়েছিল কলকাতার সিরাজউদ্দৌলা হোটেলের একটি কক্ষে। সে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন হাতেগোনা কয়েকজন—কাজী ইদ্রিস, শেখ মুজিবুর রহমান, শহীদুল্লাহ কায়সার, রাজশাহীর আতাউর রহমান, আখলাকুর রহমান আরো কয়েকজন। আলোচ্য বিষয় ‘পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর পূর্ববঙ্গের যুবসমাজের করণীয় কী?’ এর কয়েকদিন আগেই আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এক নিবন্ধে বলেছিলেন, প্রস্তাবিত পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হবে উর্দু। এর দাঁতভাঙা জবাব দিয়েছিলেন জ্ঞানতাপস,ভাষাবিদ অধ্যাপক ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ। আজাদে প্রকাশিত এক নিবন্ধে ড. জিয়াউদ্দীনের উত্থাপিত প্রস্তাবের বিপরীতে তিনি প্রস্তাব দিলেন, প্রস্তাবিত পাকিস্তানের যদি একটি রাষ্ট্রভাষা হয়, তবে গণতন্ত্রসম্মতভাবে শতকরা ৫৬ জনের ভাষা বাংলাই পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হওয়া উচিত। একাধিক রাষ্ট্রভাষা হলে উর্দুর কথা বিবেচনা করা যেতে পারে। ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর বক্তব্য আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল তখনকার প্রগতিশীল ও অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক চিন্তার ধারক যুবসম্প্রদায়দের মনে। এরই ফলে সিরাজউদ্দৌলা হোটেলের বৈঠকটি আয়োজিত হয়েছিল।
সর্বদলীয় ছাত্র-সংগ্রাম পরিষদের ছাত্র নেতারা তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তানের মূখ্যমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিনের মাধ্যমে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারের নিকট উল্লেখিত দাবীগুলো তুলে ধরার পরেও পাকিস্তানের গর্ভনর জেনারেল মুহাম্মাদ আলী জিন্নাহ ১৯৪৮ সালের ১৯ মার্চ ঢাকা সফরে এসে ২১ মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঘোষণা দেন ” উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্র ভাষা”। তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, “জনগণের মধ্যে যারা ষড়যন্ত্রকারী রয়েছে, তারা পাকিস্তানের শত্রু এবং তাদের কখনোই ক্ষমা করা হবে না” । এরপর ২৪ মার্চ তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একই ঘোষণা দিলে ছাত্ররা তার উক্তির চরম প্রতিবাদ জানায় এবং আবারো বিক্ষভে ফেটে পরে । সে সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জেল থেকে বেরিয়ে এসে দেখলেন পুলিশি জুলুম ও সরকারের গণবিরোধী ভূমিকায় ক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা তাদের দাবি আদায়ে বদ্ধপরিকর।পরদিন বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ছাত্র-জনতার সভা অনুষ্ঠিত হলো। সভার সভাপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব। সভা শেষে সরকারকে দাবি আদায়ে বাধ্য করতে তিনি ছাত্র-জনতাকে সঙ্গে নিয়ে ব্যবস্থাপক সভা ঘেরাও করেছিলেন। সেখানে পুলিশের লাঠিচার্জ হয়েছিল, কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হয়েছিল। শেখ মুজিবের নেতৃত্বে সেদিন সংগ্রামী ছাত্রসমাজ সব ষড়যন্ত্র এবং চক্রান্তের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ভাষা আন্দোলন করেছেন সক্রিয়ভাবে, ভাষার চেতনাকে বুকে ধারণ করেছেন ৷তাঁর চিন্তা-চেতনায় ছিল মাতৃভাষার মর্যাদা ও স্বীকৃতি বিধানের সংকল্প। বাঙালিদের জন্য একটি স্বতন্ত্র রাষ্ট্র ও ভাষা প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে এ চেতনা ছিল সর্বদা সক্রিয়। এ ব্যাপারে তিনি আমৃত্যু ছিলেন আপসহীন ও কঠোর। একই দিনে রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের একটি প্রতিনিধিদল জিন্নাহ্’র সাথে সাক্ষাৎ করে এবং বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি জানিয়ে একটি স্মারকলিপি দেয়। প্রতিনিধি দলে ছিলেন শামসুল হক, কামরুদ্দিন আহমদ, আবুল কাশেম, তাজউদ্দিন আহমদ, মোহাম্মদ তোয়াহা, আজিজ আহমদ, অলি আহাদ, নঈমুদ্দিন আহমদ, শামসুল আলম এবং নজরুল ইসলাম।কিন্তু তৎকালীন পাকিস্তানের গভর্নর ‘জেনারেল মুহাম্মাদ আলী জিন্নাহ্’ –পূর্ব পাকিস্তানের মূখ্যমন্ত্রী ‘খাজা নাজিমুদ্দিন’ এর সাথে স্বাক্ষরিত চুক্তিকে একপেশে এবং চাপের মুখে সম্পাদিত বলে প্রত্যাখান করেন। অনেক তর্ক-বিতর্ক ও অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। ছাত্ররা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার জন্য জিন্নাহ্’র নিকট আরো একটি স্মারকলিপি পেশ করে। ২৮ মার্চ জিন্নাহ্ ঢাকা ত্যাগ করেন এবং সেদিন সন্ধ্যায় রেডিওতে দেয়া ভাষণে তার পূর্বেকার অবস্থানের কথাই পুনর্ব্যক্ত করেন। জিন্নাহ্’র ঢাকা ত্যাগের পর ছাত্রলীগ এবং তমুদ্দন মজলিসের এক সভা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে তমুদ্দন মজলিসের আহ্বায়ক ‘শামসুল আলম’ তার দায়িত্ব মোহাম্মদ তোয়াহা’র কাছে হস্তান্তর করেন।আর এভাবেই ‘বাংলা’ কে রাষ্ট্রভাষা করার আন্দোলন আরও বেগবান গতিতে এগিয়ে যেতে থাকে ৷
এরপর ১৯৪৮ সালের ১৮ নভেম্বর পাকিস্তানের প্রথম প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলি খান পূর্ব পাকিস্তান সফরে আসেন। ২৭ নভেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠে তিনি এক ছাত্রসভায় ভাষণ দেন। ঐ সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র ইউনিয়নের তরফ থেকে প্রদত্ত মানপত্রে বাংলা ভাষার দাবি পুনরায় উত্থাপন করা হয়, কিন্তু তিনি কোনোরূপ মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকেন। ১৭ নভেম্বর তারিখে আতাউর রহমান খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত রাষ্ট্রভাষা কর্মপরিষদের এক সভায় আজিজ আহমদ, আবুল কাশেম, শেখ মুজিবুর রহমান, কামরুদ্দীন আহমদ, আবদুল মান্নান, তাজউদ্দিন আহমদ প্রমুখ একটি স্মারকলিপি প্রণয়ন করেন এবং সেটি প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলি খানের কাছে পাঠানো হয়। প্রধানমন্ত্রী এক্ষেত্রেও কোনো সাড়া দেননি ৷
‘বাংলাদেশ’ এর অবস্হান সেসময় ছিল ভারত ও পাকিস্তানের মাঝামাঝিতে এবং এ অবস্হান শুধুমাত্র ভৌগলিক দিক থেকে নয় ভাষাগত ও সাংস্কৃতিক দিক থেকেও ৷ তাই এ অঞ্চলে ‘ভারত ও পাকিস্তান’ এর সমন্বয়ে একরকম মিশ্র –সংস্কৃতি পরিলক্ষিত হয় যা বাঙ্গালি-সংস্কৃতি নামে পরিচিত৷১৯৪৭ এর পর তৎকালীন সময়ে ‘বাংলদেশ’ পাকিস্তানীদের কাছে ‘পূর্ব-পাকিস্তান’ এবং ভারতের কলকাতাবাসীর কাছে ‘পূর্ব-বাংলা’ বা ‘পূর্ব –বঙ্গ’ নামে পরিচিত ছিল ৷ তখন ‘পশ্চিম –বাংলা’বা ‘পশ্চিম-বঙ্গ’ বলা হতো ভারতের কলকাতা কে ৷
‘মাতৃভাষা বাংলা’ কে যথাযথ সম্মান ও মর্যাদা প্রদর্শের কথা বলতে গেলে বাংলার সকল মনীষী ,পণ্ডিতব্যক্তিবর্গ ও স্বনামধন্য শিক্ষক,সাহিত্য,কবি ও সাংবাদিকগণরা অকপটে বলে গেছেন৷ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর যেমন মাতৃভাষায় পাঠক্রম চালু করার বিষয়ে সেসময়ে দারুণভাবে আলোড়িত হয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে বাংলা ভাষার প্রচলন, শিখন ও প্রয়োগের ওপর জোর দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান আমাদের মাতৃভাষা বাংলায় সংবিধান প্রণয়ন করে রাষ্ট্রভাষা বাংলার মর্যাদাকে সহস্রগুণ বাড়িয়ে দিয়ে গিয়েছেন ৷ভারতীয় উপমহাদেশে মুসলিম জাগরণ এবং বাঙালির চেতনা বিকাশের অগ্রদূত হিসাবে স্বীকৃত হয়েছিলেন বহুভাষাবিদ পন্ডিত ও শিক্ষাবিদ ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ। তিনি ছিলেন একাধারে শিক্ষাবিদ, ভাষাবিজ্ঞানী, গবেষক, আইনজীবী, অনুবাদক, কবি, সাহিত্যিক, লোকবিজ্ঞানী, দার্শনিক, জ্ঞানতাপস ও ভাষাসৈনিক । মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ছিলেন একইসঙ্গে অসাম্প্রদায়িক চেতনার মানুষ এবং ব্যক্তি জীবনে নিষ্ঠাবান ধার্মিক। তিনি বলেছেন ‘আমরা হিন্দু বা মুসলমান যেমন সত্য,তার চেয়ে বেশী সত্য আমরা বাঙ্গালি’৷ মুহম্মদ শহীদুল্লাহর অমর উক্তি, ‘মাতা –মাতৃভাষা- মাতৃভূমি প্রত্যেক মানুষের পরম শ্রদ্ধার বস্তু। এই তিনের প্রতি যার শ্রদ্ধা নেই সে পশুবিশেষ’। মাতৃভাষার প্রতি এই ভালোবাসাই তাঁকে অমর করেছে।এছাড়াও বিট্রিশ-ভারত বিভক্ত হওয়ার তিন দশক আগে ১৯১৮ সালে বাংলা ভাষার একজন স্বনামধন্য পণ্ডিত-সাহিত্যিক আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ বলেছিলেন, ‘কোনো জাতিই তার মাতৃভাষার চর্চা ব্যতীত অন্য কোনো ভাষার মাধ্যমে নিজেদের উন্নতি করতে পারবে না’ ৷এ সম্পর্কে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছেন, ‘‘ইংরাজিতে যাহা শিখিয়াছ তাহা বাংলায় প্রকাশ কর, বাংলা সাহিত্য উন্নতি লাভ করুক ও অবশেষে বাংলা বিদ্যালয়ে দেশ ছাইয়া সেই সমুদয় শিক্ষা বাংলায় ব্যাপ্ত হইয়া পড়ুক৷” অধ্যাপক হিসেবে রবীন্দ্রনাথ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দিয়েছিলেন ১৯৩২-এ৷ বঙ্গাব্দ তেরো শ’র আষাঢ় সংখ্যায় তিনি শিক্ষায় মাতৃভাষার স্থান সম্বন্ধে যা বলেছিলেন তা এখনো উদ্ধৃতিযোগ্য – ‘‘কোন শিক্ষাকে স্থায়ী করিতে চাইলে, গভীর করিতে হইলে, ব্যাপক করিতে হইলে তাহাকে চিরপরিচিত মাতৃভাষায় বিগলিত করিয়া দিতে হয়৷বাংলাভাষাকে চিনতে হবে ভালো করে; কোথায় তার শক্তি, কোথায় তার দুর্বলতা, দুইই আমাদের জানা চাই৷” ‘বাংলাভাষা’ এর প্রতি রবীন্দ্রনাথের এই শ্রদ্ধার প্রতিরূপ হলো তাঁর দুই অসামান্য গ্রন্থ ‘বাংলাভাষা-পরিচয়’ ও ‘বাংলা শব্দতত্ত্ব’৷মাতৃভাষা বাংলার স্বপক্ষে ছিলো তাঁর আজন্ম সংগ্রাম৷ তাঁর বহু প্রবন্ধে, চিঠিপত্রে তার পরিচয় পাওয়া যায় ৷ তবে অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় এই যে, লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমরা আমাদের ‘মাতৃভাষা-বাংলা’ কে ফিরে পেয়েও যেনো পাইনি কারন এখন আমাদের বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই নিউ জেনারেশনের শিক্ষার মাধ্যম হছ্ছে -ইংরেজী ৷তাই এখনও এ যুগের বহু মনীষী, পণ্ডিতব্যক্তিবর্গ , শিক্ষাবিদ ও সাহিতি্যক গণ নানাভাবে ‘মাতৃভাষার গুরুত্ব ও মাতৃভাষাকে শিক্ষার মাধ্যম’ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য সংগ্রাম করে যাছ্ছেন ৷ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানী ও অধ্যাপক নেহাল করিম ‘মাতৃভাষার গুরুত্ব’ সম্পর্কে তাঁর বিখ্যাত একটি বই-‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও বাংলাদেশের অভুদ্যয়’ এ আমাদের ‘ভাষা- আন্দোলন’ ও ‘মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস’ টি তুলে ধরেছেন অত্যন্ত যুক্তিসঙ্গত ও পরিছ্ছন্নভাবে৷ তিনি বলেছেন, ‘শুধু ভাষা-বিজ্ঞানী ও ভাষাতাত্ত্বিকগণই নন,জনগণও ভাষাকে তাদের স্বাধীন সত্তার একটি বড় উপাদান মনে করে ৷ মনে করে, ভাষা তাদের স্বাধীনতা প্রকাশের একটি বড় মাধ্যম ৷ভাষা তাদের সম্মান, তাদের ব্যক্তিত্ব৷ভাষাই তাদের জাতীয় বা ব্যক্তি চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ এবং সংস্কৃতির ধারক ও বাহক অর্থাৎ ভাষা একটি জাতির পৃথক সত্তার পরিচয় তুলে ধরে’৷(চলবে) ৷
তথ্যসূত্র: বুকস, ইন্টারনেট
লেখক: ফারহানা আকতার, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, একাডেমিসিয়ান, কলামিস্ট, গবেষক এবং লেখক৷
বাংলাদেশ সময়: ১০:১২:৪৮ ১০৭৪ বার পঠিত