জিল্লুর রহমান রাসেল, ফরিদপুর প্রতিনিধিঃ
ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার নগরকান্দা সরকারি কলেজ হতে জয় বাংলা মোড় পর্যন্ত অপরিকল্পিত ভাবে পল্লী বিদ্যুতের নতুন লাইন নির্মাণের ফলে কেটে ফেলা হচ্ছে সামাজিক বনায়নের মোটা মোটা মেহগনি গাছ ও শিশু গাছ সহ গাছের ডাল। এ ক্ষেত্রে গাছ কাটার যা সরকারি নিয়ম-নীতি রয়েছে তা মানা হচ্ছে না।
অপরিকল্পিতভাবে পল্লী বিদ্যুতের নতুন লাইন টানার কারণ দেখিয়ে সড়কের পাশের সামাজিক বনায়ন কর্মসূচির আওতাধীন এ গাছ অবৈধভাবে কাটা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বুধবার বিকেলে নগরকান্দা উপজেলার কলেজের সড়ক হতে জয় বাংলা মোড় পর্যন্ত ৩৫০টি মেহগনি গাছের মোটা মোটা ডাল কেটে ফেলা হয়েছে, এছাড়া ২০টি শিশু গাছ ও কয়েকটি কড়াই গাছও কাটা হয়েছে। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে।
সামাজিক বনায়ন কর্মসূচির ভুক্তভোগীরা জানান, প্রায় ২৫ বছর আগে বন বিভাগের উপকারভোগি সমিতির উদ্যোগে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে নগরকান্দা কলেজ হতে জয় বাংলা মোড় পর্যন্ত বৃক্ষ রোপণ করা হয়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলা কলেজের সড়ক হতে জয় বাংলা মোড় পর্যন্ত দুই ধারে বড় বড় গাছের ডাল ও গাছ কেটে নিয়েছেন স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যাক্তি, নগরকান্দা উপজেলা বন কর্মকর্তা আখতারুজ্জামান আক্তার ও বিদ্যুৎ এর সংযোগ দিতে লাইন নির্মাণ ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক আনিছ।
এবিষয়ে পল্লী বিদ্যুতের ঠিকাদার আনিছের সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিদ্যুতের লাইন টানার সময় যে গাছ ও ডাল কাটা হয়েছে তাতে বন বিভাগের অনুমিত আছে, আর এটা বন বিভাগের সবাই জানেন। সড়কের দুই পাশে শত শত বড় বড় গাছ থাকা সত্ত্বেও সড়ক ঘেঁষে ও মাঝ দিয়ে বৈদ্যুতিক লাইন নির্মাণ করা হয়েছে। অপরিকল্পিতভাবে আগেই খুঁটি বসানোর ফলে তারা কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই তিন শতাধিক গাছের ডাল কেটে বিক্রি করেছেন।
এবিষয়ে লেবার সরদার শাহ আলমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই গাছ ও ডাল বিক্রির টাকা বন বিভাগের কর্মকর্তা ও ঠিকাদার ভাগাভাগি করে নিয়েছেন আপনি তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। সাংবাদিকদের অনুসন্ধানে জানা যায় গাছ ও ডাল কাটার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের থেকে কোনো অনুমোদন নেওয়া হয়নি।স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, নিয়ম মেনে দরপত্রের মাধ্যমে গাছগুলো কেটে নিলে গাছ বিক্রির অর্থ সরকারি কোষাগারে জমার পাশাপাশি উপকারভোগী সমিতির সদস্যরাও পেতেন। কিন্তু এই গাছগুলো তো এখন হরিলুট হয়ে যাচ্ছে।
এবিষয় নগরকান্দা উপজেলা বন কর্মকর্মতা আখতারুজ্জামান আক্তারের সাথে মুঠো ফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গাছের ডাল ও গাছ বিক্রি করিনি সব কিছুই আছে আপনারা এসে দেখে যান। সাংবাদিকরা ২০ ডিসেম্বর রবিবার দুপুরে ঘটনা স্থলে গিয়ে বন কর্মকর্তা আখতারুজ্জামান কে ফোন দিলে তিনি বলেন, আপনারা বসেন আমি আসছি তারপর গাছ কোথায় আছে দেখাবো, কিছু সময় পরে তাকে ফোন দিলে তার ব্যবহারকৃত মুঠো ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।সম্প্রতি সময় এই সড়ক হতে গাছ কাটা হয়েছে কয়েক হাজারের ও বেশি।
এবিষয়ে ফরিদপুর বন বিভাগের রেঞ্জ অফিসার সাইদুর রহমান এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এসেছি তিন মাস হয়েছে। এর আগে কি ঘটেছে আমি বলতে পারবোনা, বন বিভাগ থেকে পল্লি বিদ্যুতের ঠিকাদারকে গাছ কাটার অনুমিত দেয়নি বন বিভাগ। আমাদের উপজেলা বন কর্মকর্তা যদি গাছ ও ডাল কাটার সাথে জড়িত থাকে তাহলে আমাদের উপর মহলে জানিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো, তবে গাছ বিক্রির কথা বলতে গেলেই এই কর্মকর্তা বিভিন্ন কথা শুরু করে বিষয়টি এড়িয়ে যান।
বাংলাদেশ সময়: ১৮:৩৭:৫২ ৫১৫ বার পঠিত #নগরকান্দা #ফরিদপুর #বন বিভাগ #রেঞ্জ অফিসার সাইদুর রহমান