মিজানুর রহমান শাকিল;প্রতিনিধি;বঙ্গনিউজঃনিত্যদিনের প্রায় প্রতিটি খাবারে ব্যবহার করা হয় কাঁচা মরিচ। শুধু যে খাবার সুস্বাদু করে তা নয়, এই মরিচে রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ
আমাদের অনেকের প্রতিদিনের খাবারের রুটিনে থাকে কাঁচা মরিচ। আমাদের নিত্যদিনের প্রায় প্রতিটি খাবারে ব্যবহার করা হয় কাঁচা মরিচ। কাঁচা মরিচ শুধু যে খাবার ঝাল করতে তা নয়, এই মরিচে রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ।
কাঁচা মরিচে রয়েছে প্রচুর ডায়াটারি ফাইবার, থিয়ামিন, রাইবোফ্লবিন, নিয়াসিন, ফলেট, আয়রন, ম্যাঙ্গানিজ ও ফসফরাস। সেইসঙ্গে রয়েছে আরো বেশ কয়েকটি পুষ্টিকর উপাদান। যেমন- ভিটামিন এ, সি, কে, বি-৬,পটাশিয়াম, কপার ও ম্যাগনেসিয়াম। এর সবগুলো উপাদানই আমাদের শরীরের জন্য প্রয়োজনীয়।
আসুন জেনে নিই কাঁচা মরিচ খাওয়ার উপকারিতা-
হজমে কাজ করে
হজমের সমস্যায় খেতে পারেন কাঁচা মরিচ। খুব তেল-মসলার রান্নায় ঝালের পরিমাণ কমিয়ে দিন। হালকা ঝাল হজমে সাহায্য করে।
ভিটামিন ‘এ’
কাঁচা মরিচে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন এ থাকায় হাড়, দাঁত ও মিউকাস মেমব্রেনকে ভালো রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া ভিটামিন সি’র পরিমাণও মরিচে বেশি থাকে। তাই ত্বক ও মুখে বলিরেখা পড়তে দেয় না।
অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টসমৃদ্ধ
কাঁচা মরিচ অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টসমৃদ্ধ, যা শরীরকে জ্বর, সর্দি-কাশি ইত্যাদি থেকে বাঁচায়। রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ে কাঁচামরিচের হাত ধরে।
খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়
কাঁচা মরিচ শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। মরিচের বীজ একাজে খুবই কার্যকর। তাই উচ্চরক্তচাপ ও কোলেস্টেরলে ভুগতে থাকা রোগীদের পাতে মরিচ রাখুন।
ক্যান্সার দূরে রাখে,
কাঁচা মরিচে রয়েছে প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা শরীরে জমে থাকা ক্ষতিকর টক্সিক উপাদানের সব বেরিয়ে যায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ক্যান্সার সেল জন্ম নেয়ার আশঙ্কা প্রায় থাকে না বললেই চলে।
হার্ট চাঙ্গা থাকে
নিয়মিত দু’টি করে কাঁচা মরিচ খেলে হার্টের কোনো ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে না। এতে থাকা বেশকিছু উপকারী উপাদান একদিকে যেমন রক্তে উপস্থিত খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রাকে কমিয়ে ফেলে, তেমনি ট্রাইগ্লিসারাইড যাতে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে না যায়, সেদিকেও খেয়াল রাখে। শুধু তাই নয়, কোনোভাবেই যাতে ব্লাড ক্লট না হয়, তাও সুনিশ্চিত করে এই প্রাকৃতিক উপাদানটি। ফলে অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিস ও হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা যায় কমে।
সাইনাসের কষ্ট কমে
কাঁচা মরিচে রয়েছে ক্যাপসিসিন নামক একটি উপাদান, যা ঝাল স্বাদের জন্য দায়ী। এই ক্যাপসিসিন কিন্তু শরীরের নানাবিধ উপকারেও লাগে। যেমন- এই উপাদানটি শরীরে প্রবেশ করা মাত্র মিউকাস মেমব্রেনের মধ্যে রক্তের প্রবাহ বেড়ে যায়। ফলে সাইনাস ইনফেকশনের প্রকোপ কমতে সময় লাগে না।
রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে
প্রতিদিন অন্তত দু’টি কাঁচা মরিচ খেলে কোনো রোগই কাছে ঘেঁষতে সাহস পাবে না। কারণ এতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন সি, বিটা ক্যারোটিন ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। যা দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে এতটাই শক্তিশালী করে তোলে যে কোনো রোগ-জীবাণুই শরীরের ক্ষতি করে উঠতে পারে না। ভিটামিন সি ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট শুধু ইমিউনিটি বাড়ায় না, সেইসঙ্গে দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটাতে এবং ত্বককে সুন্দর করে তুলতেও সাহায্য করে।
স্ট্রেস কমে
মন খারাপ হলে দ্রুত একটি কাঁচা মরিচ খেয়ে ফেলুন। দেখবেন মন-মেজাজ একেবারে চাঙ্গা হয়ে উঠবে। এই প্রাকৃতিক উপাদানটি খাওয়া মাত্র এন্ডোরফিন হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়। ফলে স্ট্রেস লেভেল তো কমেই, সেই সঙ্গে মন আনন্দে ভরে ওঠে।
ডায়াবেটিস দূরে রাখে
কাঁচা মরিচের বিভিন্ন উপকারী উপাদান রক্তে শর্করার মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ডায়াবেটিসের মতো রোগ ধারে কাছে ঘেঁষার সুযোগই পায় না।
বাংলাদেশ সময়: ২০:১০:১৮ ৪১৯ বার পঠিত #কাঁচা মরিচ #পুষ্টি #ভিটামিন