বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে থাকার অন্যতম একটি প্রধান কারণ হচ্ছে বেকার সমস্যা।করোনাকালীন যা আরও প্রকট আকার নিয়েছে।লকডাউন শিথিল হলেও বেশির ভাগ গুলোতে পুরো দমে শুরু হয়নি কোন কাজ।এরই সুবাদে চলছে কর্মী ছাঁটাইয়ের কাজ।ফলে চাকরী আর কর্মক্ষেত্র হারিয়ে বেকার হচ্ছে লক্ষ লক্ষ জনবল।দেশে বর্তমানে বেকার সংখ্যা প্রায় ৩০লক্ষ।যা অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির ক্ষেত্রে বড় বাঁধা।আর এই বাঁধা নিরসনে সম্ভবনার দুয়ার হতে পারে ফ্রিল্যান্সিং বা মুক্তপেশা।যেটা কিনা সকল বেকারযুবকদের কাছে হয়ে উঠেছে আশার আলোর মত।ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে একটি কম্পিউটার,ইন্টারনেট সংযোগ আর নিজের দক্ষতা দিয়েই বেকারত্ব ঘুঁচিয়ে আপনি সচ্ছল ভাবে জীবনযাপন করতে পারবেন।ফ্রিল্যান্সিং কাজের মধ্যে কম্পিউটার প্রোগ্রামিং থেকে শুরু করে ওয়েব ডিজাইন, গ্রাফিক্স ডিজাইন, সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন, কনটেন্ট রাইটিং সহ আরো অনেক কিছুই অন্তর্গত।প্রযুক্তির সহজলভ্যতা থাকার কারণে যে কেউ মনোযোগের সাথে যদি সঠিক নির্দেশনা সহ বেশ কিছুদিন কোন নির্দিষ্ট কাজ শেখায় সময় দেয় তাহলে বছর খানেকের মধ্যেই সেই ব্যক্তি নির্দিষ্ট বিষয়টি নিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করা শুরু করে দিতে পারবে।নিজ দেশে শ্রমের ব্যয় অনেক বেশি থাকার কারণে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়ার মতো উন্নত দেশগুলোর অনেক বড় বড় কর্পোরেশন বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে আইটি আউটসোর্সিংয়ের দিকে ঝুঁকছে। আর এই সুযোগে বাংলাদেশের মেধাবী ফ্রিল্যান্সাররাও তাদের মেধার জোরে বিদেশি কোম্পানিগুলোর আস্থা খুব ভালোভাবেই অর্জন করতে পেরেছে।বর্তমানে বাংলাদেশে মোট ফ্রিল্যান্সারের সংখ্যা প্রায় ৭০০০০০ এর কাছাকাছি যার মধ্যে প্রায় ৫০০০০০ রয়েছে সক্রিয় ফ্রিল্যান্সার,যারা প্রতি বছর দেশের অর্থনীতিতে প্রায় একশ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সমপরিমাণ অর্থ যোগ করছেন।যা দেশের অর্থনীতিতে বিশাল অবদান রাখছে।বিশ্বে ফ্রিল্যান্সাদের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান এখন দ্বিতীয়। যা সত্যিই প্রশংসনীয়।মুজিববর্ষ উপলক্ষে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ইতোমধ্যে অনলাইন এর মাধ্যমে বিনামূল্যে ৫০দিন ব্যাপি গ্রাফিক্স ডিজাইন,ডিজিটাল মার্কেটিং,ওয়েব ডিজাইন এবং ওয়েব ডেভেলপমেন্ট কোর্সে ১০০% উপার্যনের নিশ্চয়তা দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং শেখানো শুরু হয়েছে।যার মাধ্যমে দেশের যে কোন প্রান্ত থেকে ঘরে বসেই যে কেউ বিনামূল্যে শিখতে পারবেন ফ্রিল্যান্সিং।তবে এক্ষেত্রে থাকতে হবে নুন্যতম এইচএসসি বা সমমানের শিক্ষাগত যোগ্যতা।এটি একটি সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত যা কিনা বেকারত্ব দূর করতে অনেকটাই সহায়ক হবে।বর্তমান এই বৈশ্বিক মহামারীর সময়ে অনেক ছোটবড় কোম্পানি মুখ থুবড়ে পড়েছে,হাজার হাজার মানুষ বেকার হয়ে পড়েছে।আর এই পরিস্থিতি খুব দ্রুত স্বাভাবিক হবে না।তাই বেকারত্বের অভিশাপ হতে বাঁচতে নেমে পড়ুন নিজের দক্ষতা বাড়ানোর কাজে।পরিশেষে বলা যায় করোনা মত এই মহামারির মধ্যে যেখানে বিশ্বঅর্থনীতিই মুখ থুবড়ে পড়েছে,সেখানে বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশের বেকার সমস্যা দূরীকরণে ফ্রিল্যান্সিং এর চেয়ে ভালো কোন সমাধান আর নেই।
মোঃ সবুজ হাসান রনি
শিক্ষার্থী
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
বাংলাদেশ সময়: ১৪:৪৯:৩২ ৯২৯ বার পঠিত #ওয়েব ডিজাইন #কর্মসংস্থান #গ্রাফিক্স ডিজাইন #ফ্রিল্যান্সিং